শেয়ারবাজারে আসছে আরও ৪ রাষ্ট্রীয় ব্যাংক

অর্থনীতি এইমাত্র জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজার শক্তিশালী করতে সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৪ ব্যাংক বাজারে আসছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল), অগ্রণী, জনতা ও সোনালী ব্যাংকে ২৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়া হবে। তবে এরমধ্যে সোনালী ব্যাংকের একটু সময় লাগবে। একই সঙ্গে বাজারে তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকের শেয়ার ১০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে উন্নিত করা হবে বলে জানান তিনি। রোববার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন, বাণিজ্যিক ব্যাংক ও স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি এ কথা জানান।
বৈঠকে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন, অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের মূল অর্থনৈতিক এলাকা কোথাও কোনো খারাপ সংকেত দিচ্ছে না। আমাদের একটি খাত এখনো নেগেটিভ আছে। তবে একটি খাত দিয়ে সামষ্টিক অর্থনীতি বিবেচনা করা যাবে না। প্রত্যেক দেশেই সকল খাত যে সমভাবে চলবে এমনটি নয়। সারাবিশ্বের অর্থনীতির বিবেচনায় আমাদের অর্থনীতির অবস্থা ভালো।
তিনি বলেন, একটা জায়গা নিয়ে সবসময় আমরা চিন্তাগ্রস্ত, সেটি হচ্ছে পুঁজিবাজার। পুঁজিবার হচ্ছে অর্থনীতির রিফ্লেকশন, অর্থনীতির যে ফান্ডামেন্টাল সে ফান্ডামেন্টালের উপর সবসময় অবস্থান করে পুঁজিবারজার। কিন্তু আমাদের আমাদের দেশের পুঁজিবাজার কেন যেনো অর্থনীতির সাথে অ্যালায়েন নয়। অর্থনীতির যে গতিশীলতা তার সাথে পুঁজিবাজার যায় না।
তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজার এ রকম হওয়ার কারণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করলাম। আমরা লক্ষ্য করলাম যে বাজারে কিছুটা মিসম্যাচ রয়েছে। বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের পরিমাণ কম। যারা বিনিয়োগ করে নিজস্ব উদ্যোগে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কম হলে কিছু সময় বাজারে বিশৃঙ্খলা থাকে। এ কারণে বাজার কমে গেলে খারাপ ইঙ্গিত বহন করে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখলাম যে, আমাদের পুঁজিবাজারে প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এ জন্য সরকারে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলো পুঁজিবাজারে আসা উচিত সেগুলোকে আমারা পুঁজিবাজারে নিয়ে আসবো।
কামাল বলেন, সরকারি যেসব ব্যাংক রয়েছে তার মধ্যে একটির শেয়ার বাড়ানোসহ ৫টি ব্যাংক আমরা পুঁজিবাজারে নিয়ে আসবো। এরমধ্যে বাজারে তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকের শেয়ার বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করবো। পাশাপাশি আমরা নতুনভাবে শেয়ারবাজারে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডকে (বিডিবিএল) নিয়ে আসবো। এরপর অগ্রণী, জনতা এবং সর্বশেষ আমরা সোনালী ব্যাংককে নিয়ে আসবো।
আমরা এ বিষয়ে একটি কমিটিও করে দিয়েছি। কমিটিতে পাঁচটি ব্যাংকের প্রতিনিধি থাকবে এবং এটিকে দেখাশোনা করবে আইসিবি।
কবে নাগাদ এসব ব্যাংক বাজারে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অক্টোবরের পরে যাবো না। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এর মাধ্যেই আমরা এগুলো করে ফেলবো। এ বছরের মাঝেই আমরা ভালো কাজ যা আছে করে ফেলবো।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সোনালী ব্যাংককেও আমরা নিয়ে আসবো। এটাতে একটু সময় লাগবে। ইভেন্চ্যুয়ালি আমরা তাদেরকেও নিয়ে আসবো। বাকি চারটা আমরা সেপ্টেম্বরে মধ্যে তালিকাভুক্ত করে ফেলবো। এ কাজগুলো হয়তো দুই পর্যায়ে হতে পারে। সেপ্টেম্বরের মাঝেই কাজগুলো করতে চাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো বর্তমানে লাভজনক অবস্থায় রয়েছে। তারাই সরকারকে টাকা দিচ্ছে। তাই এখন আর রিফাইন্যানন্সিং এর দরকার পড়ছে না। প্রত্যেকটা ব্যাংকই লাভজনক।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা এ মুহূর্তে অবকাঠামো খাতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ করেছি। এখন অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে চাই। অর্থনীতি যেখানে ওঠানামা করে সেগুলোতে আমরা হাত দেব। এজন্য আমাদের ব্যাংক-বীমা খাত দেখতে হবে। এগুলো ঠিক করতে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক যে সমস্যাগুলো ছিল সেগুলো দূর করা হচ্ছে। আইনি কাঠামোতে সমস্যাগুলো দূর করছি।’


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *