ইউনানি-আয়ুর্বেদিক সিস্টেম ব্যবস্থা জায়গায় খান জায়গায় প্রমাণের কবলে

অপরাধ এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন সারাদেশ স্বাস্থ্য

আজকের দেশ রিপোর্ট : একটা সিস্টেম যখন রাস্তার হকাররা নিয়ন্ত্রণ করে তখন সেই সিস্টেমের কি অবস্থা হবে? ইউনানী আয়ুর্বেদিক শিল্প, চিকিৎসা সবকিছুই আজ রাস্তার হকারদের হাতে। তারাই বর্তমান এই সিস্টেমের হর্তা কর্তা।


বিজ্ঞাপন

তাদের হাতেই আজ কোটি কোটি টাকা। যতদিন হকারদের হাত থেকে মুক্ত হবে না এই সিস্টেম ততদিন এর কোন উন্নয়নই হবে না।

এই হকারাই এই সিস্টেমকে জনগনের কাছে প্রতারণামূলক চিকিৎসা, চিটিংবাজি চিকিৎসা, মূর্খের চিকিৎসা, সেক্সের চিকিৎসা, ২০ টাকার প্রডাক্ট ৩০০ টাকায় বিক্রিসহ এই সিস্টেমের বারোটা বাজিয়েছে।

এই হকারাই জনগণের কাছে ভেলকি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আজ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মালিক। এই সকল মূর্খ হকাররাই অধিক মুনাফা লাভের জন্য ভেষজের বদলে ক্যামিকেল ব্যবহার করে ঔষধ তৈরি করছে। “জায়গায় খান জায়গায় প্রমাণ, ২৪ ঘন্টায় মুখে রুচি, শরীরে বল” এমন মুখরোচক কথার মাধ্যমে অসহায় গরীব মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছে।

ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে, গ্রামে গন্জ্ঞে অলিতে গলিতে, মোড়ে মোড়ে টেবিল সাজিয়ে রুচি বাড়ানো, শক্তি বাড়ানো, সেক্স বাড়ানো ঔষধ নিয়ে বসে বিক্রি করছে কিছু মানুষ। এদের হাতে কারা তুলে দিয়েছে ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ ব্যবসা ভাল হওয়ার ইদানিং প্রাইভেট কার তথা এক্স করোল্লা, পাজেরোসহ নামী-দামী গাড়িতেও হকারদের ঔষধ বিক্রি করতে দেখা যায়।

গ্রীণ লাইফ ন্যাচারাল হেল্থ কেয়ার( আয়ু), এস বি ল্যাবরেটরীজ আয়ু ও এস বি হারবাল এন্ড নিউট্রিসিটিক্যালস লিঃ, এ ডি আয়ুর্বেদিক ল্যাবরেটরীজ, আল-রীজ ল্যাবরেটরীজ আয়ু, ইনডেক্স ল্যাবরেটরীজ আয়ু, আরগন ফার্মাসিউটিক্যালস আয়ু, ফেম ল্যাবরেটরীজ আয়ু, দিহান ফার্মাসিউটিক্যালস আয়ু, অনির্বাণ মেডিসিনাল ইন্ডাস্ট্রিজ আয়ু, এসএস ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, জেনেসিস ফার্মাসিউটিক্যালস আয়ু, ইউনিটি ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানি, প্রজ্ঞা ল্যাবরেটরীজ আয়ু, আশরাফুল ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, আল-সাফা ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানি, পায়ওনিয়র ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানি, জেবিএল ড্রাগস ইউনানি, এস এ ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, বিসমিল্লাহ ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, সুরমা ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানি, গ্রামো ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানি, ইমা ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, কসমিকো ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, রিবারথ ইউনানি, ইউনিফিল ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, গ্রেন প্লাস ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানি, দিদার ল্যাবরেটরীজ আয়ুর্বেদিক, কনফিডেন্স ফার্মাসিউটিক্যালস আয়ু, সবুজ ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানি, এমি ল্যাবরেটরীজ আয়ু, নাফিউ ল্যাবরেটরীজ ইউনানী, বিডি ইউনানি, ফিউচার ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানি, রবিন ল্যাবরেটরীজ আয়ু, হাইম্যাক্স ইউনানী ল্যাবরেটরীজ, নেচার ফার্মা ইউনানি, রয়েল ল্যাবরেটরীজ আয়ু, লিমিট ল্যাবরেটরীজ আয়ু, মেডিসান ল্যাবরেটরীজ আয়ুর্বেদিক, গুড হেলথ ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানি, সেইফকো ল্যাবরেটরীজসহ অনেক কোম্পানীর ঔষধ রাস্তাঘাটে, মুদি দোকানসহ বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়।

এসব বিতর্কিত ঔষধ কোম্পানির বিরুদ্ধে জাতীয় প্রচার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিভিন্ন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্ট প্রকাশের পরে জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কার্যকারি কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বলে কোন প্রকার খবর পাওয়া যায় নি। তবে এসব বিতর্কিত ঔষধ কোম্পানির বিরুদ্ধে রিপোর্ট প্রকাশের পরে জনস্বাস্থ্যের উন্নতি না হলেও উন্নতি হয়েছে ফাইল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এমন খবরও পাওয়া গেছে।

এরুপ চলতে থাকলে ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের মান মর্যাদা, যোগ্যতা, সিস্টেম নিয়ে গবেষণা কোন কিছুই আগাবে না। তাই যারা কাঁচা টাকা কামানোর জন্য ইউনানী আয়ুর্বেদিক সিস্টেমকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে। এই সকল মূর্খ, লোভী, মুনাফাখোর দের হাত থেকে এই সিস্টেমকে বাঁচাতে হবে। তাদের নেতৃত্বের অন্তরালে অর্থ উপার্জনের ধান্ধা বন্ধ করতে হবে। আবার ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক সিস্টেমের উন্নয়নের জন্য সরকার ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক শিল্প মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ কে একাধিক বার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ট্রেডিশনাল মেডিসিন সিস্টেম এর উপর কর্মশালায় যোগ দিতে চিহ্নিত বিতর্কিত ঔষধ কোম্পানির মালিকেদের সরকারি খরচে বিদেশে পাঠানো হলে তারা নাম মাত্র কর্মশায় অংশ নিয়ে আমোদ প্রমোদ ভ্রমণে ব্যাস্ত থেকে সরকারি অর্থের অপচয় করেছেন।

সরকারের বানিজ্য মমন্ত্রনালয় থেকেও ট্রেডিশনাল মেডিসিন সিস্টেম এর উন্নয়নের জন্য প্রতি বছর ইউনানি, আয়ুর্বেদিক, হারবাল ও হোমিও শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কর্মশালার জন্য মোটা অংকের অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দ কৃত অর্থের ব্যাবহার করা হয়েছে কোন কাজে? এসব কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা সহ প্রচার প্রচারণার জন্য ও বরাদ্দ কৃত অর্থ কার কার পকেটে যায়? প্রচার প্রচারণা বলতে তো চিহ্নিত বিতর্কিত গৃহপালিত এক দালালকেই দেখা যায়। তাহলে কি বাংলাদেশের অন্য প্রচার মাধ্যমের কর্মীরা কি গৃহপালিত ওই দালাল অপেক্ষা কম যোগ্যতা সম্পন্ন?

ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ এর মতে দেশের জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এসব ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক সিস্টেমের আসল রক্তচোষা জোঁকদের খুঁজে বের করে তাদের স্বরুপ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান এর সামনে তুলে ধরা হোক।