সঠিক ইতিহাস জানার প্রত্যয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে

এইমাত্র জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন প্রজন্মই পারে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকে সামনে এগিয়ে নিতে। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগিয়ে তুলতে হলে সবার আগে সঠিক ইতিহাসের চর্চা করতে হবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে এই বিষয়টিই যেন উঠে এলো সবার মাঝে।
শনিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢল নামে সর্বস্তরের মানুষের। আর সেখান থেকেই সঠিক ইতিহাস জানার ও জানানোর প্রত্যয় নিলেন নতুন প্রজন্মের সঙ্গে মুক্তি সংগ্রামী মানুষগুলোও।
এদিন সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে মণিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেদওয়ান হোসেন বলেন, ৩০ লাখ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক এখনও শেষ হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সবচেয়ে গৌরবময় এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই মুক্তিযুদ্ধ। আর আমরা সেই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসটাই জানতে চাই।
রেদওয়ানের মতো প্রায় একই কথা বলেন তার বন্ধুরাও। তাদের মতে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজেদের গড়ে তুলতে সঠিক ইতিহাস জানার বিকল্প অন্য কিছু নেই।
তরুণদের এমন কথায় সায় দিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজীও। মিরপুর স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে তিনি বলেন, ১৯৭১ থেকে ২০১৯, এই দীর্ঘ সময়ে আমাদের অনুভবের জায়গাগুলো নানাভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা যে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আমরা সম্মান জানাবো, সেই সম্মান জানানোর মানসিকতায় বারবার বিভ্রান্ত হয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের তরুণদের এখন সবথেকে বড় যে কাজটি হবে, সেটি হলো ইতিহাসের সঠিক অংশটুকু পাঠ করা। যারা বয়সে বড়, তাদের কর্তব্য হলো তরুণদের ইতিহাসের সঠিক অংশটুকু জানানো। এই জানানোর ভেতর দিয়ে তারা চেতনার অংশটুকুকে উন্মোচন করবে এবং আগামী দিনের বাংলাদেশকে নির্মাণ করবে। আমরা চাই একাত্তর, ডিসেম্বর ও মার্চের চেতনাসহ সব চেতনার ভেতর দিয়ে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সুখী ও সমৃদ্ধ দেখতে। আমাদের জাতিসত্তার অংশটুকু উন্মোচন করতে হবে, ভালোবাসার অংশটুকু উন্মোচন করতে হবে, বাঙালি হিসেবে অগ্রজদের জীবনদানকে সার্থক করে তুলতে হবে।
সকাল থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে। সেখানে জাতি আজ সব শোককে শক্তিতে পরিণত করে স্বপ্ন দেখছে একটি আধুনিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। তারা বলছেন, এবার আর আক্ষেপ নয়, পেছনে তাকানো নয়, এখন সময় সামনে এগিয়ে যাওয়ার।
ইতোমধ্যে স্বজন হারানোর বেদনায় আচ্ছন্ন মন আর বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের রায় কার্যকরের স্বস্তি তৈরি করেছে এক ভিন্ন আবহ। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস জানিয়ে সচেতন নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন সবাই।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দুই দিন আগে বুদ্ধিজীবী হত্যায় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যরা। পরে শরীরে নিষ্ঠুর নির্যাতনের চিহ্নসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মরদেহ পাওয়া যায় মিরপুর ও রায়েরবাজারে।


বিজ্ঞাপন
👁️ 4 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *