দুদকের টানা অভিযানে কেঁপে উঠল শোবিজ–স্বাস্থ্য–শিল্প খাত অবৈধ অর্থ, ঘুস ও চোরাই বাণিজ্যের জাল ছিঁড়তে মাঠে দুর্নীতি দমন কমিশন

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  দেশজুড়ে দুর্নীতির বহুমুখী নেটওয়ার্ক যখন নীরবে শক্তিশালী হয়ে উঠছে, ঠিক তখনই একের পর এক এনফোর্সমেন্ট অভিযানে দৃশ্যপটে এসেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাজধানী ঢাকা থেকে সিলেট ও কুষ্টিয়া—শোবিজ, স্বাস্থ্য ও শিল্প খাতের ভেতরে গড়ে ওঠা অবৈধ অর্থনীতি, ঘুস সিন্ডিকেট ও রাজস্ব লুটপাটের বিরুদ্ধে একযোগে কঠোর বার্তা দিল সংস্থাটি।


বিজ্ঞাপন

শোবিজের মুখোশের আড়ালে কালো টাকার কারখানা ?
চলচ্চিত্র নির্মাণ ও প্রযোজনার আড়ালে অবৈধ অর্থ লেনদেন, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার, আয় গোপন, কর ফাঁকি ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে আলফা আই প্রোডাকশন নামীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুদকের প্রধান কার্যালয়, ঢাকা থেকে সরাসরি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়।

অভিযান পরিচালনা কালে দুদক টিম প্রতিষ্ঠানটির অফিসে ঢুকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে, খুঁটিয়ে দেখে আর্থিক লেনদেনের কাগজপত্র এবং জিজ্ঞাসাবাদ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়, যা এখন দুদকের স্ক্যানারের নিচে। এসব নথি পর্যালোচনা শেষে কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।


বিজ্ঞাপন

রোগীর দুর্ভোগে সিন্ডিকেটের রমরমা বাণিজ্য : অন্যদিকে, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল—যেখানে চিকিৎসা পাওয়ার কথা, সেখানেই ঘুস, সিন্ডিকেট ও হয়রানির অভিযোগে তীব্র জনঅসন্তোষ। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, সিলেট থেকে চালানো হয় পৃথক এনফোর্সমেন্ট অভিযান।


বিজ্ঞাপন

দুদক টিম হাসপাতালের সেবাগ্রহীতা ও দাতাদের সঙ্গে কথা বলে ঘুস লেনদেন ও অনিয়মের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। প্রাথমিক যাচাইয়ে অভিযোগগুলোর সত্যতা রয়েছে মর্মে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়—যা পরিস্থিতির ভয়াবহতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ শেষে কমিশনের নিকট বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

শিল্প খাতে রাজস্ব লুট ও চোরাই তামার কালোবাজার : এদিকে, বি.আর.বি কেবল কারখানা, কুষ্টিয়ায় রাজস্ব ফাঁকি এবং বিপুল পরিমাণ চোরাই তামা বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে আরেকটি শক্ত অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযান পরিচালনা কালে ২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তামা ক্রয়ের হিসাব, কোন কোন প্রতিষ্ঠান থেকে তামা আমদানি করা হয়েছে তার তথ্য, গোডাউনে মজুদকৃত তামার পরিমাণ এবং আয়কর সংক্রান্ত নথিসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দলিল চাওয়া ও সংগ্রহ করা হয়।

প্রাথমিকভাবে এসব নথিপত্র পর্যালোচনা করেছে দুদক টিম। অবশিষ্ট তথ্য পূর্ণাঙ্গভাবে বিশ্লেষণ শেষে কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

দুর্নীতির জালে বড় মাছ আটকাল কি না—সেদিকেই নজর
একাধিক খাতে একযোগে পরিচালিত এসব অভিযান স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে—দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদক আর নীরব দর্শক নয়।

প্রশ্ন এখন একটাই—এই অভিযানগুলো কি কেবল কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি অবৈধ অর্থের রাঘববোয়ালদের আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে ?  সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, এসব অভিযানের পরিণতি যেন হয় দৃশ্যমান বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

👁️ 49 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *