ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ বিএনপি নেতা ফরহাদের

Uncategorized আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন রাজনীতি সংগঠন সংবাদ সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি  :  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র দীর্ঘদিনের রাজনীতিক ও রামগড় উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া (ফরহাদ) তাঁর বিরুদ্ধে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন। শনিবার (২৫ অক্টোবর) খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।


বিজ্ঞাপন

লিখিত বক্তব্যে ফরহাদ জানান, তিনি গত ৩৫ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ২০১১ সালে রামগড় পৌরসভার মেয়র, ২০১৪ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ২০১৮ সালে খাগড়াছড়ি–২৯৮ আসনে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেই নির্বাচনে তিনি পান ৫১,২৮১ ভোট।

তিনি বলেন, তাঁর পিতা মরহুম সাহাব উদ্দিন ভূঁইয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নির্যাতনের শিকার হন এবং ১৯৯৯ সালে তাঁদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। গত ১৭ বছরে তিনি ৩০টিরও বেশি মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছেন এবং ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এলাকায় থাকতে পারেননি। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তাঁর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।


বিজ্ঞাপন

ফরহাদের অভিযোগ, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে ওয়াদুদ ভূঁইয়া তাঁকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে সংগঠন থেকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চালান। ২০১৯ সালের কাউন্সিলে রামগড় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর নাম বাদ দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে আরেকটি কমিটি প্রকাশ করা হয়।


বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিব বরাবর অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। পরবর্তীতে ওয়াদুদ ভূঁইয়ার একক সিদ্ধান্তে তাঁকে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক-১ পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

ফরহাদ জানান, ওয়াদুদ ভূঁইয়া তাঁর আপন চাচা। ২০২৩ সালে পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে আওয়ামী লীগের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। এরপর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জেলা বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ নিপু তাঁর বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওই মামলার তথ্য রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমে সংগ্রহ করে তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হয়। ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাতে বিশেষ গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্য ও ওয়াদুদ ভূঁইয়ার লোকজন তাঁর চট্টগ্রামের বাসা, শ্বশুরবাড়ি ও আত্মীয়দের বাড়িতে একযোগে অভিযান চালায়। তাঁকে না পেয়ে স্কুলপড়ুয়া দুই ছেলেকে অপহরণের পরিকল্পনা এবং স্ত্রীর সঙ্গে অসদাচরণের ঘটনাও ঘটে বলে দাবি করেন তিনি।

ফরহাদ অভিযোগ করেন, তাঁকে রাজনীতি থেকে সরাতে ওয়াদুদ ভূঁইয়া ২০২৪ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর প্রলোভন দেন। তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁর স্ত্রীর ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়, ফলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

তিনি আরও জানান, ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট ওয়াদুদ ভূঁইয়ার নির্দেশে তাঁর রামগড়ের বাড়ি ও বাবার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। তাঁর সমর্থকদের বিজয় মিছিলে হামলা চালিয়ে পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোতাহের হোসেন মিলনসহ কয়েকজনকে আহত করা হয়।

ফরহাদের দাবি, এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মামলায় তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামি করা হয়েছে— এমনকি আশুলিয়ার একটি মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর নামও জুড়ে দেওয়া হয়। তিনি এসব থেকে মুক্তির জন্য দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে আবেদন করলেও এখনও কোনো প্রতিকার পাননি।

তিনি বলেন, “গত চৌদ্দ মাস ধরে মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছি। আমাকে চাপে রেখে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা হচ্ছে, যাতে আগামী নির্বাচনে আমি মনোনয়ন না পাই।”

সংবাদ সম্মেলনের শেষ অংশে ফরহাদ বলেন, “আমি একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে দলের সিনিয়র নেতাদের সামনে বক্তব্য রাখার সুযোগ চাই। মাননীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের প্রতি অনুরোধ— আমাকে নিজের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ দিন।

👁️ 144 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *