
নিজস্ব প্রতিবেদনক (খুলনা) : খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির ১০ নম্বর সহ-সভাপতি ফিরোজ হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, প্রতারণা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী দাবি করেছেন—দলীয় ভাবমূর্তি রক্ষায় অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফিরোজ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন ও বেকার অবস্থায় থেকে নানা প্রতারণার মাধ্যমে এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার ছোট ভাইসহ তিনি জলমা এলাকার বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতারণার শিকার অনেকেই থানায় ও সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। বরং ফিরোজ বিএনপির স্থানীয় কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায় থেকে ভুক্তভোগীদের হুমকি দিয়ে আসছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।
৫ আগস্টের পর এলাকায় একাধিক নিরীহ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে চাঁদা দাবি করেছেন ফিরোজ—এমন অভিযোগও উঠেছে। বিগত সরকার আমলে ক্ষমতাসীনদের সাথে থেকে সামান্য অর্থ সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করলেও বর্তমানে তিনি বিএনপির পদ ব্যবহার করে চাঁদাবাজির নতুন কৌশল নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এলাকার চায়ের দোকানদারদের দাবি, ফিরোজ হোসেন তাদের কাছ থেকে বহু টাকা বাকী নিয়েও ফেরত দেননি। কেউ পাওনা চাইলে উল্টো হুমকি দেয়া হয়। অনেক দোকানদারের পাওনার পরিমাণ ৭ হাজার টাকাও ছাড়িয়েছে।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এমন ওকর্ম ও প্রতারককে দলীয় পদে রাখলে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। ভোটেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
অভিযোগ রয়েছে, ফিরোজ হোসেন সম্প্রতি দল ক্ষমতায় এলে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা মঞ্জু ও মনা ভাইদের নাম ভাঙিয়ে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায়ের স্বপ্ন দেখছেন। পাশাপাশি মিথ্যা মামলা ও জমি দখলের মাধ্যমে এলাকার সৎ মানুষদের হয়রানি করে চলেছেন।
সূত্র জানায়, জুলাই আন্দোলনে পরবর্তী সময় এলাকার কয়েকজন সামান্য দিনমজুর খেটে খাওয়া থেকে শুরু করে একজন সাংবাদিক পরিবার এই নেতার মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। তারা এক ভাই মামলা দায়ের করে অন্য ভাই সাক্ষী হিসেবে থাকেন। এই দুই ভাইয়ের প্রতারণার আতঙ্কে রয়েছে খুলনা শহরের অনেকেই।
বিগত কয়েক বছরে তিনি ও তার ছোট ভাই মিলে জমি বিক্রির নামে বহু মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এমনকি কিছু জমির মালিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে ফিরোজ হোসেনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের দাবি—বিএনপি নেতৃত্ব দ্রুত তদন্ত করে এই প্রতারক সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক, যাতে দলের সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষা পায়।
