প্রতারক সাহেদ কোথায়?

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: টেলিভিশন টক শোতে জোর গলায় মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম বলছেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। রাজনৈতিক তকমা গায়ে দিয়ে কেউ রেহাই পাবে না। তাঁর এই ভিডিও এখন ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। নানা প্রতারণায় রিজেন্ট হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযানের চার দিন পরও মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম গ্রেফতার এড়াতে পেরেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে খুঁজে বের করবে। তবে তাঁরও উচিত আত্মসমর্পণ করা। সাহেদকে ধরতে র‌্যাব-পুলিশ খুঁজছে। আশা করি, শিগগিরই তা জানাতে পারব।’
গত বৃহস্পতিবার গুঞ্জন ছিল মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম সাতক্ষীরার হঠাৎগঞ্জ দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এই গুঞ্জন কতটুকু সত্য, তা গত শুক্রবার পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত করতে পারেনি। অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় র‌্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেছেন, সাহেদের পক্ষে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। করোনাভাইরাসের চিকিৎসার নামে সাহেদ ভালো বাণিজ্য করেছেন। টাকা তাঁকে সুরক্ষা দিয়ে থাকতে পারে। তিনি অধিদপ্তরে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার বিলও পাঠিয়েছিলেন। অত টাকা অনুমোদনের ক্ষমতা অধিদপ্তরের না থাকায় তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিল অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থাতেই সবকিছু ফাঁস হয়ে যায়।
তবে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আশিক বিল্লাহ গণমাধ্যমে বলেন, যেকোনো মুহূর্তে সাহেদ করিম ধরা পড়বেন। তিনি সীমান্ত পেরিয়ে গেছেন, এমন কোনো খবর এখনো তাঁদের কাছে নেই। আর তিনি যাতে পালিয়ে যেতে না পারেন, সে জন্য অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
পরিবার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো বলেছে, বাবা সিরাজুল করিমের মৃত্যুর পরও সাহেদ করিম পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, এমন কোনো তথ্য তাঁদের কাছে নেই। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার সিরাজুল করিম মারা যান।
সাহেদের স্ত্রী সাদিয়া আরাবী সাংবাদিকদের বলেন, শ্বশুর সিরাজুল করিমের মৃত্যুর পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে সরাসরি মোহাম্মদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। মোহাম্মদপুরে সিরাজুল তাঁর ভাইদের সঙ্গে একটি বহুতল ভবনে থাকতেন। ছেলের বনানীর বাসায় তিনি কখনই ছিলেন না। সাহেদ তাঁর শ্বশুরের একমাত্র ছেলে। শ্বশুর মারা যাওয়ার খবর সাহেদ পেয়েছেন কি না, তিনি বলতে পারেননি।
রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পরও সাহেদ করিম গ্রেফতার হননি।
তিনি আরও জানান, পারিবারিকভাবেই তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। সাহেদ ছোটবেলাতেই ঢাকার মোহাম্মদপুরে দাদার কাছে চলে আসেন। উচ্চমাধ্যমিকের পর প্রথমে আইন নিয়ে পড়তে শুরু করেছিলেন। এগোতে পারেননি। পরে ভারতের পুনেতে ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজে পড়ালেখা করেছেন বলে জানান।


বিজ্ঞাপন