করোনা কাড়ল ৩৪ প্রাণ

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন জীবনী সারাদেশ স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৪ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল তিন হাজার ৩৯৯ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও দুই হাজার ৪৮৭ জনের মধ্যে। এতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখন দুই লাখ ৫৭ হাজার ৬০০।
করোনাভাইরাস বিষয়ে রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দৈনন্দিন বুলেটিনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। অনলাইনে বুলেটিন পড়েন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি মোট ৮৫টি পিসিআর ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১১ হাজার ১৪টি এবং পরীক্ষা হয়েছে ১০ হাজার ৭৫৯টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ লাখ ৬০ হাজার ৩১৯টি। ২৪ ঘণ্টায় যা নমুনা সংগ্রহ হয়েছে, তাতে করোনা শনাক্ত হয়েছে দুই হাজার ৪৮৭ জনের মধ্যে। ফলে এ পর্যন্ত শনাক্ত দুই লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৪ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন তিন হাজার ৩৯৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৭৬৬ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন এক লাখ ৪৮ হাজার ৩৭০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৩১ জন এবং নারী ৩ জন। এ পর্যন্ত মৃতদের মধ্যে পুরুষ দুই হাজার ৬৮৬ জন (৭৯ দশমিক ০২ শতাংশ) এবং নারী ৭১৩ জন (২০ দশমিক ৯৮ শতাংশ)। গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের চারজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের পাঁচজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ছয়জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের ১১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের ছয়জন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের একজন ছিলেন। এ পর্যন্ত মৃতদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের ১৮ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের ৩৩ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৮৯ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২১৮ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৪৭১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৯৭১ জন এবং ৬০ বছরের অধিক বয়সের এক হাজার ৫৯৯ জন ছিলেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৪ জন, খুলনার সাত, চট্টগ্রামের ছয়, রাজশাহীর চার, ময়মনসিংহের এক এবং রংপুর বিভাগের দুজন ছিলেন। মোট মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের এক হাজার ৬২৭ জন, চট্টগ্রামের ৮০৪ জন, রাজশাহীর ২১৩ জন, খুলনার ২৫৯ জন, বরিশালের ১৩২ জন, সিলেটের ১৫৮ জন, রংপুরের ১৩৪ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ছিলেন ৭২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের মধ্যে হাসপাতালে ৩২ জন এবং বাড়িতে দুইজন মারা গেছেন।
গত শনিবারের (৮ আগস্ট) বুলেটিনে বলা হয়, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ জন মারা গেছেন। ১১ হাজার ৭৩৭টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও দুই হাজার ৬১১ জন। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয় ৩০ জুনের বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড চার হাজার ১৯ জনের, যা জানানো হয় ২ জুলাইয়ের বুলেটিনে।
শনাক্ত, সুস্থতা ও মৃত্যুর হার: রোববারের বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ১২ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আর রোগী শনাক্ত তুলনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ।
কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনের তথ্য: গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৬২৮ জন এবং ছাড় পেয়েছেন ৭১৩ জন। এ পর্যন্ত সর্বমোট আইসোলেশনে গেছেন ৫৬ হাজার ৬৬৭ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৭২৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৯৪০ জন।
২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৫৬ জন এবং ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ২৫৮ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে এসেছেন চার লাখ ৫২ হাজার ৩৭৮ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ৯৯ হাজার ৬৩৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫২ হাজার ৭৪০ জন।
করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, ঢাকা মহানগরীর সাধারণ শয্যায় ভর্তি আছেন দুই হাজার ১১১ জন এবং আইসিইউতে ভর্তি আছেন ১৯৭ জন। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যায় রোগী ভর্তি আছেন ২৪৩ জন এবং আইসিইউতে ভর্তি আছেন ১৭ জন। সারাদেশের অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যায় রোগী ভর্তি আছেন এক হাজার ৭৩৫ জন এবং আইসিইউতে ভর্তি আছেন ৯৬ জন। সারাদেশে সবমিলিয়ে সাধারণ শয্যা ১৫ হাজার ২৫৮টি, রোগী ভর্তি আছেন চার হাজার ৮৯ জন এবং শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ১৬৯টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৫৩৯টি, রোগী ভর্তি আছেন ৩১০ জন এবং খালি আছে ২২৯টি শয্যা।
হটলাইন ফোনের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ফোন এসেছে ৬২ হাজার ৫০১টি। এর মধ্যে স্বাস্থ্য বাতায়নে কল এসেছে ১০ হাজার ২৩০টি, ৩৩৩ নম্বরে কল এসেছে ৫১ হাজার ৮০৭টি এবং আইইডিসিআরে কল এসেছে ৪৬৫টি কল এসেছে। এ পর্যন্ত ফোনকল এসেছে এক কোটি ৮৫ লাখ ২৪ হাজার ৬৪৩টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় টেলিমেডিসিনে করোনা স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করেছেন চার হাজার ৩১৫ জন এবং এ পর্যন্ত গ্রহণ করেছেন এক লাখ ৮২ হাজার ৩৪১ জন।
তিনি জানান, তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত ২৪ ঘণ্টায় স্ক্রিনড হয়েছেন ৮৪২ জন, সকল স্থলবন্দরে ২২৩ জন এবং দুটি সমুদ্রবন্দরে ১৫৭ জন। সর্বমোট এক হাজার ২২২ জনকে স্ক্রিনিং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। এ পর্যন্ত স্ক্রিনিং হয়েছে আট লাখ নয় হাজার ৬১৮ জনের।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর গোটা বিশ্বকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে করোনাভাইরাস। এতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ৯৮ লাখ ১৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা সাত লাখ ২৯ হাজারের বেশি। তবে সুস্থ রোগীর সংখ্যা এক কোটি সোয়া ২৭ লাখ প্রায়। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। আর এতে প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।


বিজ্ঞাপন