ধর্ষণ মামলায় দেশে প্রথম মৃত্যুদন্ডাদেশ

অপরাধ আইন ও আদালত

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে পৌর সভার ছাব্বিশা গ্রামের এক মাদরাসা ছাত্রীকে অপহরণ করে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ৫ জনকে মৃত্যুদ- দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে ২ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এরা হলেন- মধুপুর উপজেলার চারালজানী গ্রামের বদন চন্দ্র মণি ঋষির ছেলে সঞ্জিত (২৮), একই উপজেলার গোলাবাড়ি গ্রামের শ্রি দিগেন চন্দ্র শীলের ছেলে গোপি চন্দ্র শীল (৩০)।
মৃত্যুদ- প্রাপ্ত অন্য পলাতক আসামিরা হলেন- একই এলাকার সুনীল চন্দ্র শীলের ছেলে সাগর চন্দ্র শীল (৩৩), সুনীল মণি ঋষির ছেলে সুজন মণি ঋষি (২৮) ও মণিন্দ্র চন্দ্রের ছেলে রাজন চন্দ্র (২৬)।
রাষ্ট্রপক্ষে এই মামলা পরিচালনা করেন- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাছিমুল আকতার। আর মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখা’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ মামলার শুরু করে শেষ পর্যন্ত ভিকটিমকে আইনি সহায়তা দেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাছিমুল আকতার জানান- ‘২০১২ সালে দ-িত আসামিদের মধ্যে সাগর চন্দ্র শীলের সঙ্গে মোবাইলে পরিচয় হয় ভূঞাপুর উপজেলার ছাব্বিশা গ্রামের ওই মাদরাসাছাত্রীর। একই বছরের ১৫ জানুয়ারি ওই ছাত্রী সকালে বাড়ি থেকে মাদরাসায় যাওয়ার পথে শালদাইর ব্রিজের কাছে পৌঁছলে সাগর কৌশলে একটি সিএনজিতে তাকে এলেঙ্গা নিয়ে যায়’।
সেখান থেকে মধুপুরে চারাল জানী গ্রামে তার বন্ধু রাজনের বাড়িতে উঠে। সেখানে তার চার বন্ধু ছাত্রীকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। সাগর হিন্দু বলে তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করে মেয়েটি। এ কারণে ওই রাতে সাগর রাজনের বাড়িতে আটক রেখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে ১৭ জানুয়ারি রাতে তাকে বংশাই নদীর তীরে নিয়ে সেখানে তারা ৫ জনে মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ফেলে যায়।
পরদিন ভোরবেলা স্থানীয়দের সহায়তায় মেয়েটিকে স্বজনরা এসে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বাদী হয়ে ভুঞাপুর থানায় ১৮ জানুয়ারি দ-িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সুজন মণি ঋষিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়।
পুলিশ তদন্ত শেষে ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। বৃহস্পতিবার এ মামলার রায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদ- দিলো আদালত।
এদিকে, এরআগে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০০’-এর খসড়া গত সোমবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়। পরদিন মঙ্গলবার সেই অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। জাতীয় সংসদের অধিবেশন না থাকায় রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে এটি আইনে পরিণত হয়।


বিজ্ঞাপন