ঘাটাইলে ৭ শতাধিক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে ভাতা নেয়ার অভিযোগ

সারাদেশ

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ১২ শতাধিক ভাতাভোগীদের মধ্যে ৭ শতাধিক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র, শান্তি কমিটির সদস্য ও ভুয়া শহীদ পরিবার এরকম ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা ভাতা উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

এমন অভিযোগে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ৮জন মুক্তিযোদ্ধা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) বিভিন্ন দফতরসহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন।

তাদের দাবি, ঘাটাইলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে এমন মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা পৌনে চারশ’ থেকে ৫শ’র অধিক নয়। সে ক্ষেত্রে বিপুল সংখ্যক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধায় নাম লেখিয়ে ভাতা উত্তোলন করায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।


বিজ্ঞাপন

অভিযোগে যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- পৌরসভার চান্দসী গ্রামের মৃত শুকুর আলী, আ. ছামাদ, শহীদ আ. করিম, দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের খিলগাতী গ্রামের ময়েজউদ্দিন, পাঞ্জানা গ্রামের ফালু সেক, দয়কান্দি গ্রামের আব্দুষ সাত্তার খান (পি.ক.স.), ঝুনকাইল গ্রামের আ. সামাদ আলী, ঘাটাইল ইউনিয়নের বন্দকুলিয়া গ্রামের ওয়াহেদ খান (পিস ক. স.) বেংরোয়া গ্রামের ফজলুর রহমান খান (গেজেট নং-৬২৭৯), ঘাটাইল গ্রামের আনোয়ার হোসেন (গেজেট নং-৬৩৮০), গোলাম মহিউদ্দিন (গেজেট নং-৬৩০৯), আ. খালেক (গেজেট নং-৬৩১০), এসএম আ. হক (গেজেট নং-৬৩১১), ডাকিয়া পোটল গ্রামের এমএ মজিদ (গেজেট নং-৬৩১২), দিঘলকান্দি ইউনিয়নের দত্তগ্রাম গ্রামের কাজী হাফিজুর, লাল মিয়া, আ. আজিজ (গেজেট নং-৬৩১৩), আড়ালিয়া গ্রামের সৈয়দ মোশারফ হোসেন, বীরচারি গ্রামের মিজানুর রহমান, ধোপাজানী গ্রামের মোবারক আলী, আ. মালেক মিয়া, আ. আজিজ, গারট্রগ্রামের খন্দকার তোফায়েল, ছামনা গ্রামের জয়েন উদ্দিন, ব্রাম্মন শাসন গ্রামের হাবিবুর রহমান, লুৎফর রহমান, রুহুল আমিন, দিগড় গ্রামের শহীদ আ. রহমান, শোলাকীপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম, শরাশাক গ্রামের ফজলুল করিম, বোয়ালীহাটবাড়ি গ্রামের আবুল কাশেম, আ. আজিজ, মফিজ উদ্দিন, তোরাব আলী।


বিজ্ঞাপন

হাজিপুর গ্রামের সৈয়দ আম্বার হোসেন, কুশারিয়া গ্রামের মীর কাশেম, মীর ছামাদ, গর্জনা গ্রামের আবু সাইদ, আন্দিপুর গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন, লাউয়া গ্রামের আ. মজিদ, সিংগুরিয়া গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন, চেংটা গ্রামের আাজিজুর রহমান, শহরগোপিনপুর গ্রামের আ. ছালাম, মনোহরা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, সন্ধানপুর গ্রামের আ. রহিম, চক পাড়াগ্রামের আ. রশিদ মিয়া (গেজেট নং-৬২৮৭), ডৌজানি গ্রামের আ. ছাত্তার (গেজেট নং-৬২৯০), আ. রাজ্জাক (গেজেট নং- ৬২৯২), জামুরিয়া গ্রামের মতিউর রহমান (গেজেট নং-৬৩০৬), শেখশিমুল গ্রামের আ. ছালাম (গেজেট নং-৬৩৪০), মাইজবাড়ি গ্রামের মুহম্মদ মুজিবর রহমান (গেজেট নং-৬৩৪৮), মোস্তাফিজুর রহমান (গেজেট নং-৬৩৪৯) কালিদাস পাড়া গ্রামের জুরহাস উদ্দিন (গেজেট নং-৫২৬৬), আ. মতিন তাং (গেজেট নং-৬২৬৭), বিয়ারা গ্রামের মৃত আকতার হোসেন (গেজেট নং-৫৪৫৮), জয়নাবাড়ি গ্রামের সাহাদত হোসেন মিয়া (গেজেট নং-৬৫৫৮)।

এ ব্যাপারে অভিযোগকারীদের মধ্যে গৌরাঙ্গী গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা শাহাদৎ হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা প্রত্যক্ষ বিরোধীতা করেছে ,যাদের কাছে মুক্তিযোদ্ধারা নির্যাতিত হয়েছে তারাই এখন বড় মুক্তিযোদ্ধা। তাদের অধিকাংশের মুক্তিবার্তা লাল বইয়ে নাম রয়েছে। এদেরকে ভাতা দিয়ে পুরো জাতিকে কলঙ্কিত করা হয়েছে।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আসল কিভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তীকালে যারা থানা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলে দায়িত্বে ছিলেন তাদের মধ্যে কিছু অসাধু অর্থলোভী চক্রের যোগসাজসে তারা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় এসেছে। তাদের বাদ দিয়ে সঠিক তালিকা প্রকাশ করে জাতীকে কলঙ্কমুক্ত করার দাবি জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।

সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে তার সেল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুক্তিযোদ্ধা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্তের দাবি করে সঠিক তালিকা প্রকাশের দাবি জানান প্রধানমন্ত্রীর কাছে।

👁️ 1 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *