শাহ কবির (রহ.) মাজারের টাকা লুটপাটের অভিযোগ

অপরাধ জাতীয় রাজধানী

বংশধর থেকে মোতওয়াল্লী নিয়োগের দাবী

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর উত্তরখানে অবস্থিত শাহ কবির (রহ.) মাজারের কোটি কোটি টাকা লুট হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। ব্যাংক হিসাব খোলার পর গত দুই বছরে মাজারের সব খরচ বাদ দিয়ে রয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। অথচ এর আগে ১৪ বছরে কোনো টাকা উদ্ববৃত্ত নেই। সংশ্লিষ্ট অভিযোগ-২০০৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মাজারের একক নিয়ন্ত্রণ ছিল স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিনের হাতে। পদাধিকার বলে তিনি কমিটির সদস্য নিযুক্ত হয়ে অন্য সদস্যদের মতামতকে উপেক্ষা করে সহযোগীদের নিয়ে লুট-পাট চালিয়েছেন। মাজার প্রাঙ্গণে অবৈধভাবে স্থাপন করা হয়েছে ওয়াসার পানির পাম্প, টিসিবির গোডাউন, রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক অফিস, ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় এবং মর্নিং ওয়াক ক্লাব। শুধু তাই নয়, দানের টাকা চুরির অভিযোগও উঠেছে। মাজার এস্টেটের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে মাজার মসজিদে হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন মাজার মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল-ভাইস প্রিন্সিপালও। এই অবস্থায় শাহ কবির (রহ.) এর বংশধর থেকে মাজার এস্টেটের মোতওয়াল্লী নিয়োগের দাবি উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলাও করা হয়েছে। অভিযোগ দেয়া হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), ওয়াকফ প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে। তবে যাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠেছে তারা জানিয়েছেন অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।
এ বিষয়ে স্থানীয় এমপি হাবির হাসান বলেন, মাজার কেন্দ্রিক যে ঝামেলা চলছে সে বিষয়ে আমি অবগত। আপতত: দুই পক্ষকেই শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছি। শিগগিরই দুই পক্ষকে নিয়ে বসে আলাপ আলোচনা করে একটি ভাল সিদ্ধান্ত দেব।
প্রমি গ্রুপের কর্ণধার এনামুল হাসান খান শহীদ নিজেকে শাহ কবির (রহ.) এর দশম বংশধর দাবি করে বলেন, ১৯১৬ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত মাজার এস্টেটের মোতওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আমাদের বংশের লোকজন। শাহ কবির (রহ.) এর বংশধর হিসেবে সবশেষ মোতওয়াল্লী ছিলেন আব্দুল রাজ্জাক খান। মাজার পরিচালনায় ৮০ বছর কোনো অভিযোগ না থাকলেও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কৌশলে রাজ্জাক খানকে ২০০৪ সালের ৪ জানুযারী মোতাওয়াল্লী পদ থেকে অপসারণ করা হয়। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে মোতোওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাকে অপসারণের পরই মাজার এস্টেটের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় কামাল উদ্দিনের হাতে। মাজার এস্টেটে ১১৫ টি দোকান আছে। সেখান থেকে মাসে আয় হচ্ছে প্রায় ১০ লাখ টাকা। বছরে আয় হচ্ছে এক কোটি ২০ লাখ টাকা। এ আয় থেকে বছরে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ টাকা আতœসাৎ করেছে কামাল উদ্দিন ও তার সহযোগীরা। দোকান ভাড়ার জামানত হিসেবে প্রতিটি দোকান থেকে অগ্রীম গ্রহণ করা হয়। ওই টাকার কোনো হিসাব দেয়া হয়নি।
জানতে চাইলে উত্তরখান থানার ওসি ও মাজার এস্টেট পরিচালনা কমিটির সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, কামাল উদ্দিন আগেও কমিটিতে ছিলেন। এখনও আমাদের সঙ্গে কমিটিতে আছেন। ২০১৮ সালে গঠিত নতুন এ কমিটি গত দুই বছরে মোটা অংকের টাকা ব্যাংকে জমা করেছে। এছাড়া লাখ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এর আগে ১৪ বছর যারা মাজার চালিয়েছে তাদের কাছে আয়-ব্যয়ের হিসাব চেয়েছিলাম। তারা কোনো হিসাব দিতে পারেনি। উল্টো ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঋণের কথা বলেছে। সামগ্রিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে সার্বক্ষনিক পুলিশী নজরদারি রয়েছে বলেও ওসি জানান।
মাজার পরিচালনা কমিটির সদস্য হাজী আব্দুল ওয়াছে বলেন, সারা দেশে ২০১টি তফসিলভুক্ত দরগাহ্ বা মাজারসমূহের মধ্যে এই মাজারের অবস্থান ১৮ নম্বরে। ঐতিহ্যবাহী এ মাজারের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, কামাল উদ্দিনের আমলে ২০০৫ সালে অপরিকল্পিতভাবে মসজিদ সম্প্রসারণের কাজ সম্পন্ন করা হয়। সঠিক পরিকল্পনা না থাকায় মজসজিদের ভেতর একটি কবর পড়ে যায়। ওই কবরটি বিবি সাহেবার (শাহ কবির রহ. এর স্ত্রী)। মসজিদ সম্প্রসারণের সময় কবরটি সরানো যেতো। অথবা কবরের জায়গা বাদ রেখে মসজিদ সম্প্রসারণ করা যেতো। সাততলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট এ মসজিদের দ্বিতীয় তলার কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এলাকাবাসীসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে এসে এই মসজিদে নামাজ পড়েন। এখন কেউ কেউ মসজিদ থেকে করব সারাতে চান। আবার কেউ কেউ কবর সরানোর বিরোধিতা করছেন। এ নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া এবং মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় এমপি মহোদয়ের হস্তক্ষেপে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে এখনও দুই পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। তিনি বলেন, কামাল উদ্দিন ছাড়াও মাজার মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল এবং মসজিদের ইমাম লেহাজ উদ্দিন ও মাদ্রসার ভাইস প্রিন্সিপাল বশির উদ্দিনসহ অনেকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আছে। ১৪ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব চাইলে তারা উল্টো-পাল্টা কথা-বার্তা বলেন।
স্থানীয় একেএম আসাদুজ্জামান জানান, ৩ একর ৪০ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত শাহ কবির (রহ.) মাজার। মাজার প্রাঙ্গণের পুকুর থেকে লাখ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। কিন্তু নামমাত্র টাকা এস্টেটের ফান্ডে জমা দিয়ে বাকি টাকা আতœসাৎ করা হয়েছে। মাজারের দান বাক্স, মসজিদের দান বাক্স এবং ওরসের দান-অনুদানের স্বচ্ছ কোনো হিসাব নেই। ২০০৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এস্টেটের হিসাব ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন ওয়াকফ প্রশাসন থেকে চাওয়া হলেও তিনি তা দেয়া হয়নি।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারী ওয়াকফ প্রশাসকের কাছে দেয়া এক অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ২৬ আগস্ট নতুন কমিটি গঠিত হওয়ার পর ব্যাংক হিসেব খোলা হয়। ব্যাংক হিসোব খোলার পর ১৬ মাসে সেখানে ২১ লাখ টাকা জমা হয়। সেই হিসেবে ২০০৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কয়েক কোটি টাকা এস্টেট ফান্ডে জমা হওয়ার কথা। কিন্তু ওই সময়ের কোনো টাকার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। ওই অভিযোগে বলা হয়, কমিটির সদস্য কামাল উদ্দিন ওয়াকফ এস্টেটের অনুমতি না নিয়ে এস্টেটের সম্পত্তিতে শতাধিক দোকান এবং সান্ধকালীন বাজার বাসিয়েছেন। এসব দোকান এবং বাজার থেকে যে আয় হচ্ছে তা তিনি নিজের পকেটে নিচ্ছেন। এস্টেটের জায়গায় অপরিকল্পিত দোকান-পাট বসিয়ে আতœীয়-স্বজন ও দলীয় লোকদের নামে বরাদ্দ দিয়েছেন। আশ্রফ আলীর ওয়াকফ করা ৩ শতাংশ জমি এস্টেটের নামে রেকর্ড না করে কামাল উদ্দিন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আসাদ উদ্দিন ওরফে জামান উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করেন। এস্টেটের বার্ষিক আয় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। অথচ ২০১৬ অর্থ বছরে তা দেখানো হয়েছে সাড়ে ৫ লাখ টাকা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজ্জাক খানকে মোতাওয়াল্লীর পদ থেকে অপসারণের পর ২০০৪ সালে ৪ জানুয়ারী দুই বছরের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেয় ওয়াকফ্ প্রশাসন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ উত্তরখান থানার সভাপতি কামাল উদ্দিন ওই কমিটির সদস্য মনোনীত হন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কামাল উদ্দিন ও তার সহযোগীরা দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। মাজারের গরু-ছাগল এবং হাঁস-মুরগী, আত্মসাতে অভিযোগও উঠে তাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠে, মাজার মসজিদের নামে তিন শতাংশ সম্পত্তি মাজারের দখলে না এনে জামানের সম্পত্তির সাথে মিলিয়ে ফেলেন। ওয়াকফ্ প্রশাসন ২০০৮ সালের ১৫ জুন থেকে ২০১০ সালের ১৪ জুন পর্যন্ত দুই বছরের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা কমিটি অনুমোদন দেয়। এ কমিটিতেও স্থান হয় কামাল উদ্দিনের। এ কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবসায়ি ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়সহ নানা অভিযোগ উঠে। অভিযোগের তদন্ত শেষে ওয়াকফ্ প্রশাসন জানায়, কমিটির সদস্যরা ওয়াকফ্ এস্টেট সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে পারেননি। পরে ২০১১ সালের ২০ জুন ওয়াকফ্ প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সহকারী প্রশাসক (ঢাকা বিভাগ) নুরুল আলমকে হযরত শাহ্ কবির (রহ.) ওয়াকফ্ এস্টেটের নব-নিযুক্ত অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করা হয়। ৭ দিনের মধ্যে কামাল উদ্দিন ও তার সহযোগীদের নতুন মোতওয়াল্লীর কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার আদেশ দেয়া হয়। কিন্তু কামাল উদ্দিন দায়িত্ব-ভার বুঝিয়ে না দিয়ে ওয়াকফ্ এস্টেটের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২ ডিসেম্বর ওই রিট মামলা খারিজ করে দেন আদালত। পরে কামাল উদ্দিন পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রস্তাবিত কমিটি ওয়াকফ্ প্রশাসনে জমা দিয়ে নিজেকে সভাপতি দাবি করে মাজার এস্টেটের কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন। ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর তিন বছর মেয়াদী সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে ওয়াকফ্ প্রশাসন। এর সভাপতি ও অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লী হলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও সদস্য সচিব সহকারী কমিশনার (ভূমি) ক্যান্টনমেন্ট।
এদিকে মাজার এস্টেটের মোতোওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পেতে এনামুল হাসান খান শহীদ গত বছরের ২৯ অক্টোবর ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা করেছেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, শাহ্ কবির (রহ:)’র বংশধর থেকে মোতোওয়াল্লী নিয়োগের জন্য গত ১৪ বছরের বারবার অবেদন করা হলেও তা অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। উপরন্তু অস্থায়ী ভিত্তিতে স্বল্প মেয়াদী কমিটির অনুমোদন দিচ্ছে ওয়াকফ প্রশাসন। স্বল্প মেয়াদী কমিটি অধৈভাবে লাভবান হতে মেয়াদ উত্তীর্নের পর দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু ওয়াকফ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এতে ওয়াকফ এস্টেটের ক্ষতি হয়েছে। অফিসিয়াল মোতোওয়াল্লী দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। অফিসিয়াল মোতোওয়াল্লী চাকরিজনিত কারণে বদলী হন। তিনি দাফতরিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। এই সুযোগে কমিটির একজন প্রভাবশালী সদস্যের ছত্রছায়ায় সেখানে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে।
মাজার এস্টেট পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামালউদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে টাকা আতœসাতের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি এখানে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করিয়েছি। এনামুল হাসান খান শহীদের নেতৃত্বে একটি পক্ষ নিজেদেরকে শাহ কবির (র.) এর বংশধর দাবি করে মাজার দখল করতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, এলাকার পানির অভার দূর করার জন্য নিয়ম মেনেই এখানে পানির পাম্প বসানো হয়েছে। ন্যায্যমূল্যে এলাকাবাসীর চাল পাওয়ার সুবিধার্থে সেখানে টিসিবির জন্য একটি গোডাউন তৈরি করা হয়। সেখান থেকে এস্টটের ফান্ডে এখন ভাড়া আসছে। তিনি বলেন, আমার বাসা নিচু এলাকায় হওয়ার কারণে এলাকাবাসীর অনুরোধে ওয়াকফ এস্টেটের ভেতর আমি ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয় তৈরি করেছিলাম। এলাকাটি সিটি করপোরেশন পর সেটা এখন স্থানীয় কাউন্সিলরের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখান থেকেও ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এলাকার লোকজন এখানে মর্নিং ওয়ার্ক করেন। তাদের বসার কোনো স্থান নেই। এখানে আগে থেকেই একটি ঘর ছিল। যারা মর্নিং ওয়ার্ক করেন তারা ওই ঘরটি ব্যবহার করতে চাইলে এলাকার মানুষের স্বার্থে আমি এটি ব্যবহারের অনুমতি দিই। এক প্রশ্নের জাবে তিনি বলেন, আমি যখন এলাকার চেয়ারম্যান তখন এখানে শহিদুল্লাহ নামে একজন খাদেম ছিল। সে আমার দূর সম্পর্কের আতœীয়। তার বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অভিযোগ উঠায় আমি তাকে বাদ দিয়ে দিই।
মাজার এস্টেটের অফিসিয়াল মোতোওয়াল্লী শাহনাজ সুলতানা বলেন, এসিডি (শিক্ষা) হিসেবে আমি পদাধিকার বলে তিন মাস আগে দায়িত্ব পেয়েছি। এরই মধ্যে বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, মাজারকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো গ্রুপ রয়েছে। দুইটি শক্তিশালী পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়ার পর আমি ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে দ্রুত একটি ভাল সমাধানে আসবো।
শাহ কবির (রহ.) মাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা লেহাজ উদ্দিন ২৭ নভেম্বর শুক্রবার জুম্মার নামাজের খুৎবার সময় বলেন, মসজিদের ভেতর মাজার বা কবর থাকলে নামাজ সহিহ হয় না। তাই আমি মসজিদ থেকে মাজার (কবর) সরানোর উদ্যোগ নিই। এ কারণে একটি পক্ষ আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। স্থানীয় এমপি বিষয়টি সমাধান করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। তারপরও একটি পক্ষ এ নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে শাহ কবির (রহ.) মাজার মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল বশির উদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে মসজিদের দান বাক্সের টাকা চুরির অভিযোগ উঠার পর জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে এর তদন্ত হয়। তদন্তেএখন পর্যন্ত অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।


বিজ্ঞাপন