করোনা উপসর্গে আক্রান্ত মা ও ছেলের ছবি ভাইরাল

বরিশাল

নিজস্ব প্রতিনিধি : গণমাধ্যমে সার্জেন্ট টুটুলের তোলা করোনা উপসর্গে আক্রান্ত মা ও ছেলের ভাইরাল ছবি জনমনে এখন করোনা সচেতনতার মেসেজ ।
শনিবার ১৭ এপ্রিল ২০২১ খ্রিঃ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন হিরন পয়েন্ট এলাকায় পুলিশি চেকপোস্টে অভিযানে কর্তব্যরত ছিলেন বিএমপি ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট টুটুল সহ সঙ্গীয় অফিসারবৃন্দ।


বিজ্ঞাপন

বিগত ১০ দিন মায়ের ১০৪/৫ ডিগ্রি জ্বর, কাশি, সর্দি, শরীর ব্যথা ও পাতলা পায়খানাসহ অন্যান্য উপসর্গ ও করোনার উপসর্গ শরীরে থাকায় অসুস্থ মা রেহানা পারভীন (৪৮) কে বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে তাঁর সন্তান ব্যাংকার জিয়াউল হাসান কোন উপায় না দেখে নিজের পিঠে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে মোটরসাইকেলের পিছনে মাকে বসিয়ে, অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে সিলিন্ডারের অক্সিজেন শেষ হওয়ার আগেই দ্রুত গতিতে চেকপোস্ট অতিক্রমকালে কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট টুটুল অসুস্থ মা বহনকারী মোটরবাইকটিকে নিরবিচ্ছিন্ন যাত্রা সুগমের পাশাপাশি পিছন থেকে মা ছেলের ছবি তুলে নিজ ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট দিলে তা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়।

জিয়াউল হাসান ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড সূর্যপাশা গ্রামের বাসিন্দা, তাঁর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাকিম মোল্লা গতবছর প্রথম রমজানে মৃত্যুবরণ করেন, মা রেহানা পারভীন নলছিটি বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। জিয়াউল হাসানের ছোট ভাই রাকিব হাসান চট্টগাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে লেখাপড়া করেন, সবার বড়ভাই মেহেদী হাসান খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের দৌলতপুর থানায় উপ-পরিদর্শক পদে কর্মরত রয়েছেন।

মায়ের শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় বাসায় অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেন তাঁরা। সেখানে অক্সিজেন শেষ হওয়ার উপক্রম হলে দুই ভাই সিদ্ধান্ত নেন মাকে যে করেই হোক চিকিৎসা করাতে হবে, কিন্তু গাড়ি না পাওয়ায় শেষে নিজের শরীরে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে নেন জিয়াউল। তখনো মায়ের মুখে অক্সিজেন মাস্ক। সন্ধ্যার আগে তারা এসে পৌঁছান শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। বর্তমানে তার মা করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জিয়াউল হাসান বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে আমি অপ্রস্তুত হয়ে থেমে গেলেও দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা কোন প্রকার বিড়ম্বনা না করে দ্রুততার সাথে পথ সুগম করে দিয়েছেন ।

ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট টুটুল আরোহীদের ছবি তুলে তা ফেসবুকে পোস্ট করার বিষয় জানান, পেশাগত অভিজ্ঞতায় জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বাহিরে আসা মানুষ দেখেছি, একটু অসচেতনতায় করোনার প্রাদুর্ভাব আমাদের জীবনে কতোটা প্রভাব ফেলতে পারে তা যেন এই ছবির মাধ্যমে সাধারণ জনগণ অনুধাবন করে অন্ততঃ পরিবারের জন্য হলেও নিজে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলে, তাহলে কর্তব্য পালনের পাশাপাশি এ ক্ষুদ্র প্রয়াস স্বার্থক হবে, আসুন সবাই ঘরে থাকি – সুস্থ থাকি।