পুরস্কৃত হলো মসলিন প্রকল্প

অর্থনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৮ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের নেওয়া উদ্যোগে অবশেষে আলোর মুখ দেখেছে মসলিন প্রকল্প। ৫০০ বছরের পুরনো মসলিন শিল্প আবার ফিরে আসায় সরকারের বিশেষ স্বীকৃতি পাচ্ছে সুতা তৈরি প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প। মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রদত্ত এ পুরস্কার গ্রহণ করে প্রকল্পটি।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রথমবারের মতো এ প্রকল্পটি মাত্র ১২ কোটি ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে কাজ শুরু করে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০২১ সালের জুনের মধ্যে মসলিনের ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা।
বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পের আওতায় মূলত মসলিন কাপড় তৈরির জন্য তুলাগাছ লাগানো হয়েছিল। পরে সেই তুলা থেকে সুতা তৈরি করে মসলিন কাপড় বানানো হয়েছে।
প্রকল্পটি মূলত তিনটি উদ্দেশ্য নিয়ে সামনে এগিয়েছে। প্রথমত, নিবিড় গবেষণার মাধ্যমে মসলিনের সুতা ও কাপড় তৈরির প্রযুক্তি পুনরুদ্ধার; দ্বিতীয়ত, পরীক্ষামূলকভাবে মসলিনের সুতা ও কাপড় তৈরি এবং তৃতীয়ত, বাংলাদেশের সোনালি ঐতিহ্য মসলিনের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার।
প্রকল্পটি সবকটি উদ্দেশ্য সফল করে বাংলাদেশের পুরনো গৌরব ঢাকাই মসলিনকে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, শিগগিরই বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের তালিকায় যুক্ত হবে মসলিন কাপড়। আর ঢাকাই মসলিন রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে এবং বিশ্বদরবারে দেশের ভাবমূর্তি আবারও উজ্জ্বল হবে।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন এবং জনপ্রশাসন পদক ২০২০ ও ২০২১-এর ঘোষণা করা হবে। এতে উল্লেখযোগ্য প্রশংসনীয় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের সোনালি ঐতিহ্য মসলিন সুতা তৈরি প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার (প্রথম পর্যায়) প্রকল্পকে জাতীয় পর্যায়ে সাধারণ (প্রাতিষ্ঠানিক) শ্রেণিতে জনপ্রশাসন পদক ২০২১-এর জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়।
প্রকল্প পরিচালক মো. আইয়ুব আলী বলেন, দীর্ঘ ৫০০ বছর পর ফিরে পাওয়া বাংলাদেশের মসলিন আবারও বিশ্ব মাত করবে। এটি দেশের ব্র্যান্ডিং হবে ক্রিকেটের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম।
বাংলাদেশের অভিজাত্য এবং ঐতিহ্যের প্রতীক হচ্ছে মসলিন। মরক্কোর পর্যটক ইবনে বতুতা, গ্রিক পর্যটক পিনটনি, টেইলর, উরে প্রমুখ তাদের লেখায় বাংলার মসলিনের বর্ণনা করেছেন। বিভিন্ন ধরনের সুতি বস্ত্রের মধ্যে ঢাকার মসলিন বা ঢাকাই মসলিনের সুখ্যাতি ছিল পৃথিবীব্যাপী। ফুটি কার্পাস নামের তুলা থেকে প্রস্তুত অতি চিকন সুতা দিয়ে মসলিন তৈরি হতো।


বিজ্ঞাপন