নিজস্ব প্রতিবেদক : “বাংলাদেশ আমার অহংকার’- এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

গত ১৭ নভেম্বর, সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগরীর পল্লবী থানাধীন মিরপুর-১২, ব্লক-বি, বিক্রমপুর সেনিটারী ও হার্ডওয়্যার দোকানে ০৬ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী প্রকাশ্য দিবালোকে পিস্তল দিয়ে বুকে ও পিঠে অতর্কিত গুলি করে পল্লবী থানা যুবদলের সদস্য সচিব গোলাম কিবরিয়া (৫০) ‘কে হত্যা করে। উক্ত স্থান হতে পলায়নের সময় স্থানীয় জনতার উপর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে এবং এতে একজন রিক্সা চালক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হয়। পরবর্তীতে ছাত্র জনতা তাদেরকে ধাওয়া করে জনি ভূইয়া (২৫) নামক একজন সন্ত্রাসীকে আটক করে পল্লবী থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করে। উক্ত বিষয়ে ভিকটিমের পরিবার পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
উক্ত ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হয়। ঘটনার পরপরই র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সিসিটিভি ফুটেজ এবং আনুষঙ্গিক তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায়, ১৮ নভেম্বর, রাতে সাভার থানাধীন বিরোলিয়া এলাকা হতে গোলাম কিবরিয়া হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি এবং হত্যাকান্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মোঃ মনির হোসেন সোহেল পাতা সোহেল (৩০) এবং জিএমপির টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন মাজার বস্তি এলাকা হতে উক্ত হত্যাকান্ডের সন্দিগ্ধ ও ১৮টি মামলার শীর্ষ ও পলাতক সন্ত্রাসী মোঃ সুজন বুকপোড়া সুজন (৩৫)’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪ এর আভিযানিক দল।

গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উক্ত হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও তারা জানায় যে, এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ড যাতে বড় অংকের অর্থের লেনদেন হয়। উক্ত আসামীগণ পেশাদার হত্যাকারী এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, উক্ত হত্যাকান্ডের এজাহার নামীয় আসামি মোঃ মনির হোসেন সোহেল পাতা সোহেল (৩০) এর নামে একাধিক হত্যা, ডাকাতি, মাদকসহ পল্লবী থানায় মোট ০৮টি মামলা রয়েছে।
হত্যাকান্ডের সাথে সন্দিদ্ধ অপর আসামি, ভাষানটেক থানাধীন ০১ নং বস্তি এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং ১৮টি মামলা ও একাধিক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মোঃ সুজন ও বুকপোড়া সুজন (৩৫)’কে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, খুনসহ ডাকাতি, হত্যা, মাদক, অস্ত্র, বিস্ফোরক মামলাসহ বেশ কয়েকটি ওয়ারেন্ট রয়েছে।
সে দীর্ঘ দিন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে সঙ্গবদ্ধ অপরাধচক্রের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। মিরপুর কেন্দ্রিক বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সুজন অস্ত্র সরবরাহ করে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত আসামীরা সাম্প্রতিক সময়ে মিরপুর কেন্দ্রিক গড়ে উঠা সন্ত্রাসীগ্রুপ (ফোর স্টার) এর সক্রিয় সদস্য।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।
