কুড়িগ্রামের  চিলমারীতে পাম্পের পাশেই অবৈধ ভাবে চলছে জ্বালানী তেল বিক্রি

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন রংপুর সারাদেশ

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি  :  কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পাম্পের পাশেই, গড়ে উঠেছে অবৈধ জ্বালানী তেল বিক্রি ও মিনি পাম্প। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ফিলিং স্টেশনের মতো ইলেকট্রনিক্স মটর ও ডিসপেনসার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে তেল বিক্রি করছে। এতে করে একদিকে যেমন ঝুঁকি বাড়ছে, অন্যদিকে সঠিক মিটার না থাকায় মানুষজন প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন।


বিজ্ঞাপন

কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ফিলিং স্টেশনের পাশেই অবৈধভাবে গড়ে ওঠা তেল ব্যবসা ও মিনি পাম্পটি বন্ধ করে দিলেও আইনকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি দেখিয়ে অবাদে চলছে পেট্টল, অকটেন ও ডিজেল বিক্রি কার্যক্রম। ফলে অবৈধ ভাবে এই তেল বিক্রি নিয়ে প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে, অনেক প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

জানা গেছে, কুড়িগ্রাম-চিলমারী মহাসড়কের পাশে উপজেলার “মাটিকাটার মোড়ের পাশে” মেসার্স সাগর ফিলিং স্টেশন ও এলপিজি গ্যাস স্টেশন অবস্থিত আছে। ফিলিং স্টেশনটি দীর্ঘদিন ধরে তেল সরবরাহ করে আসলেও এর প্রায় ১০০মিটারের ভেতরে গড়ে উঠা মেসার্স সোহেল অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে একটি জ্বালানী তেল বিক্রির প্রতিষ্ঠান ও মিনি পাম্প।


বিজ্ঞাপন

দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে তেল বিক্রির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৩সালের ২০নভেম্বর যমুনা, পদ্মা ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটিডের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা তদন্তপূর্বক, অবৈধভাবে জ্বালানি তেল বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনাকারী মেসার্স সোহেল অ্যান্ড ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন।


বিজ্ঞাপন

পরে ২৪সালের ২৫জানুয়ারি কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক, কামরুল হাসান সরেজমিন তদন্ত করে ‘বৈধ কাগজ-পত্র না থাকায় খোলা স্থানে স্থানীয়ভাবে ইলেকট্রিক মোটর ও নজেলের সাহায্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে জননিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ’ এমন মন্তব্য করে জেলা প্রশাসক বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন বলে জানা যায়।

প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর ঐ বছরের ৩১মার্চ, জেলা প্রশাসকের পক্ষে ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শাখার সহকারী কমিশনার স্বাক্ষরিত মেসার্স সোহেল অ্যান্ড ব্রাদার্সকে জ্বালানি তেল মজুদ ও বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন।

কিন্তু এসব নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই ফিলিং স্টেশনের পাশে মিনি পাম্পটি ইলেকট্রিক মোটর ও ডিসপেনসার মেশিন ছাড়াও কুপি, চোঙা ও ড্রামে করে তেল বিক্রি করে আসছে। তারপরেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

মেসার্স সোহেল অ্যান্ড ব্রাদার্সের সত্ত্বাধিকারী সামিউল আলম সোহেল বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তেল বিক্রির (এনওসি) অনুমোদন রয়েছে। বৈধভাবে তেল বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি এই ব্যবসায়ীর।

মেসার্স সাগর ফিলিং স্টেশন স্বত্ত্বাধিক আলহাজ্ব মাহফুজার রহমান বলেন, ২০০৭ সাল থেকে আমার পাম্পটি পরিচালিত হয়ে আসছে। হঠাৎ কয়েক বছর ধরে নীয়মনীতি না মেনেইচ সোহেল অ্যান্ড ব্রাদার্স পাম্প ঘেষে অবাধে মেশিন, কুপি ও চোঙা দিয়ে অবাধে জ্বালানি তেল মজুত ও বিক্রি করে আসছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে।

যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক, জসীম উদ্দিন বলেন, মহাসড়কের পাশে তেল বিক্রি ও মজুত করা সম্পূর্ণ অবৈধ, এর আগে মেসার্স সোহেল অ্যান্ড ব্রাদার্সকে তেল বিক্রি থেকে বিরত থাকার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর সুপারিশ করা হয়েছে।

তারপর সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়, কিন্তু আবার তিনি নিয়মনীতি না মেনেই, তেল বিক্রি করে আসছেন। অবৈধভাবে তেল বিক্রি বন্ধ করতে গত সপ্তাহে আবারো পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা এই তিন কোম্পানি সম্মিলিতভাবে জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছেন।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, এ বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

👁️ 7 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *