মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী : গোপালগঞ্জ জেলা শহরের মোহাম্মদপাড়া এলাকায় কথা নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৯ নভেম্বর ) ভোর রাত ৩টার দিকে শহরের কমিশনার রোডের নিজ বাসা থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে নিহতের স্বামী প্রিন্স ও পরিবার।
বিয়ের মাত্র চার মাসের মাথায় কিশোরী বধূর এমন মৃত্যুতে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা নিয়ে জনমনে দানা বেঁধেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত কথার স্বামী প্রিন্স একটি বেসরকারি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত। মাত্র চার মাস আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ও পারিবারিক কলহ চলে আসছিল।
এলাকাবাসীর একাংশ ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, কথার বড় বোনের স্বামী (দুলাভাই) মিঠুনের সঙ্গে কথার চলাফেরা ও মেলামেশা নিয়ে এলাকায় কানাঘুষা ছিল। বিষয়টি নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মধ্যে সন্দেহ দানা বাঁধে, যা পারিবারিক অশান্তির অন্যতম কারণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কথার স্বামী প্রিন্স জানান রাতে বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ায় তাদের মধ্যে কথাকাটাটির এক পর্যায়ে স্ত্রীকে চড়থাপ্পড় মারেন। একারণে সে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে। অন্যদিকে নিহতের বোন জামাই মিঠুন জানান প্রিন্স প্রায়ই নেশা করে বাসায় ফিরে স্ত্রীকে মারধর করত।
পুলিশ জানায়, মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো অস্পষ্ট। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তদন্তকারী এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা খবর পেয়ে ভোর রাতে লাশ উদ্ধার করেছি। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা সব দিক বিবেচনায় রেখে তদন্ত চালাচ্ছি। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং নিহতের স্বামী ও স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
এদিকে, এসএসসি পরীক্ষার্থীর এমন অকাল মৃত্যুতে তার সহপাঠী ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং প্রাথমিক তদন্ত শেষেই মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।