নড়াইলে স্বামীর অত্যাচারে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ অজ্ঞান

সারাদেশ

মুমুর্ষ অবস্থায় পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতালে ভর্তি

 

মো: রফিকুল ইসলাম, নড়াইল: নড়াইলে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে পাষন্ড স্বামী রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে ইতি।
তাৎখনিক খবর পেয়ে মুমুর্ষ অবস্থায় পুলিশ ঐ গৃহবধূকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
জানা যায়,লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ ইতি খানমকে নির্মমম ভাবে অমানুষের মত নির্যাতন করে বাড়ী থেকে বের করে রাস্তায় ফেলে দেয় তার স্বামী।
(১লা জুন) সোমবার সকালে লোহাগড়া ইতনা পশ্চিম পাড়া স্বামী তিতাস কাজীর বাড়ীতেই এমন নেক্কার জনক,নির্মম নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
স্বামী তিতাস কাজী (৩০) বিয়ের পর থেকেই ইতিকে নানা ভাবে নির্যাতন করে আসছিল,ঐদিন সকালে তিতাস কাজী তার বড় ভাই পলাশ কাজীর বাড়ী খুলনায় যাবে বলে বউ এর কাছে রাখা ৫শ টাকা চাইলেই তিনি টাকা দিয়ে দেন।
কিন্তু স্ত্রীর কাছে জমানো টাকা থেকে আরোও ৫শ টাকা চাইলে তার স্ত্রী দিতে না চাওয়ায় ইতি কে নির্মম নির্যাতন শুরু করে।
এক পর্যায়ে মারতে মারতে রাস্তায় টেনে হেচড়ে নিয়ে যায়,তারপরও মারতে থাকে এবং বলে তোকে মেরেই ফেলবো।
তার কিছুক্ষণ পরে ইতি খানম মাথা ঘুরে রাস্তায় মাটিতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়,তাৎখনিক পুলিশে খবর দিলে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাদের ইমার্জেন্সী গাড়ী পাঠালে কর্তব্যরত অফিসার অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকা গর্ভবতী মহিলাকে এনে লোহাগড়া উপজেলা স্বস্থ্যকমপ্লেক্সে (১লা জুন) সন্ধ্যা ৭টায় ভর্তি করেন।
১৮ সালের ১৮ আগষ্ঠে ইতির বিয়ে হয়েছিল,বিয়ের পরেই ইতির গর্ভে সন্তান আসে।
তিতাস কাজী তার স্ত্রীকে যেখানে সেখানে লাথি গুতা মেরে শারীরিক নির্যতন করার ফলে তার গর্ভের সন্তান দুই মাস পরে নষ্ট হয়ে যায়,এবং তিতাস সন্তান চাইতো না।
এ পর্যন্ত ইতি তিতাস কাজীর ৪ নং বউ,৩০ বছর বয়সের তিতাস কাজী ইতির স্বামী হলেও তার (তিতাস)আগের পক্ষের ১১ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে বলে জানা যায়,একটি বউ স্ট্রোকে মারা গেছে বলে জানা গেছে।
আরেকজন নির্যাতন সইতে না পেরে পালিয়ে গেছে এমনটি বলেন তিতাসের ৪ নং স্ত্রী।
আজ ৬দিন লোহাগড়া উপজেলা স্বস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন ইতি খানম কিন্তু তার শ্বশুর বাড়ীর বা তার বাপের বাড়ী হতে এ পর্যন্ত কেউ দেখতে আসে নাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ,সমাজসেবা এবং সাংবাদিক মারুফ সামদানীর সহযোগীতায় তার যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
মেয়েকে দেখতে না আসার কারণ জানতে চাইলে ইতির বাবা বলেন ওরা দাঙ্গা হাঙ্গামা করা লোক,আমরা মেয়েকে দেখতে গেলে খোদা না করুক যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে সমস্ত দোষ দিয়ে আমাদেরকে মামলায় ঝুলাবে।
আমার মেয়ের হওয়া বিয়ে ভেঙ্গে দিয়ে জোর পূর্বক বিয়ে করে।
মেয়ে ভালো হয়ে বাড়ী যাক তার পর তাকে নিয়ে আসবো,৬ ভাইবোনের মধ্যে ইতিই সবার ছোট।
কাজী শামীম হোসেন ইতির কেবলই বড় ভাই সৌদি আরব থাকে।
ইতির বড় ভাসুর পলাশ কাজীও সৌদি আরব থাকতেন ২০১৯ সালে তিনি দেশে আসেন,তিনি এখন খুলনা থাকেন।
ইতির সেঝ বোনের প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তার বিবাহিত সংসার ভেঙ্গে দেয় পলাশ কাজী,এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইতির বাবা পলাশ কাজীদের নামে মামলা করেন,তারই প্রতিশোধ নিতে ছোট ভাই তিতাস কাজীকে গুটি বানিয়ে আরেকটি সংসার ভাঙ্গার পাঁয়তারা করছে পলাশ কাজী ।
আইনগত দিকদিয়ে যত রকম সাহায্য সহযোগীতা করা যায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা তা করে যাবো এমনটি জানান,পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন পিপিএম (বার)।
ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন (আর এম ও) বলেন, গত ১জুনে পুলিশ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে এ পর্যন্ত আমাদের যতটুকু সম্ভব আমরা তার চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
যেহেতু তার ৮ মাস চলছে তাই কোনো একজনকে তার দায়িত্বটা নিতে হবে বলেও জানান।


বিজ্ঞাপন