আওয়ামী লীগের শত্রু আ’লীগ! দেখার কি কেউ নেই…?

উপ-সম্পাদকীয়/মতামত

নাজনীন আলম, গৌরীপুর, ময়মনসিংহ : কতিপয় নেতা/জনপ্রতিনিধির পরিবার পরিজন এবং অনুপ্রবেশকারীদের হাতে আজ তৃণমূল জিম্মি। তাদের আত্নীয়-স্বজন আর তেলবাজদের চলছে রামরাজত্ব। কোনো কোনো এলাকায় মূল দলের উপজেলা/থানা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে কেবল হাতে গোণা কয়েকজন সামান্য দলীয় সুযোগ-সুবিধা পায়। বাকীদের অবস্থা চরম হতাশাজনক।


বিজ্ঞাপন

আদর্শবান ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা আজ বঞ্চিত, উপেক্ষিত এবং দিশেহারা। এখন বিরোধী দল আর কোন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ না। নিজ দলের প্রকৃত নেতাকর্মীরাই এখন আসল প্রতিপক্ষ। তাদেরকে কূটকৌশলে এবং গৃহবিবাদে ফেলে রাজনীতি থেকে দিনে দিনে মাইনাস করা হচ্ছে। ফলে পদধারীরাসহ দীর্ঘদিনের পরিক্ষিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীরাও দলীয় কর্মকান্ড থেকে নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগসহ সকল অংগ-সহযোগী ও সমমনা আদর্শিক সংগঠনের নেতা কর্মীদের অবস্থা আরো করুণ। হাইব্রীড, আত্মীয়লীগ এবং হঠাৎ লীগসহ সরকার বিরোধীরা তেলপানির বিনিময়ে কব্জা করে নিচ্ছে সরকারি চাকরী, প্রশাসনিক পদায়ন, দলীয় পদবী এবং ব্যবসা বাণিজ্যসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধার বড় অংশ। নেত্রীর সদিচ্ছা থাকার পরেও আওয়ামী পরিবারের সদস্য ও ছাত্রলীগের যোগ্য প্রার্থীদের অনেকেই আজ চাকুরীসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত। অনেক এলাকাতে প্রশাসন সরকার দলীয় সিনিয়র নেতৃবৃন্দকেও পাত্তা দিতে চায় না; এমনকি দলীয় পরিচয় পেলে অনেক ক্ষেত্রেই উল্টো তাচ্ছিল্য করে। দল পরপর তিনবার ক্ষমতায় থাকার পরেও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আজ ভিষণ অসহায়, উপেক্ষিত এবং মূল্যহীন। বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা ও ক্ষুব্দতা।

আগামী প্রজন্মের উপযোগী একটি সুখী সুন্দর উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে জীবন বাজী রেখে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকণ্যা শেখ হাসিনা। শত বাঁধা-বিপত্তি সত্বেও তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্ব এবং ইষ্পাত কঠিন দৃঢ়তায় সারা দেশের প্রতিটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। দেশের গরীব ও সাধারণ মানুষসহ সকলে এর সুফল ভোগ করছেন। অথচ কিছু নেতা/জনপ্রতিনিধির বিতর্কিত/নেতিবাচক কর্মকান্ডে দল দিন দিন সাংগঠনিক শক্তি হারাচ্ছে এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এছাড়া, গৃহবিবাদ চরম আকার ধারণ করেছে। এসব কারণে, সরকারের সফলতাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। ইতোমধ্যে দল কিছু ব্যবস্থা নিলেও তা পর্যাপ্ত নয৷

দুর্দিনে (খোদা না করুন) ভুলের খেসারত প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকেই দিতে হবে; আমরা কেউ-ই হয়তো পার পাবো না। তৃণমূলের সুখ আদর্শবান কর্মীকে উজ্জীবিত করে; আর তাদের কষ্ট- নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের ব্যথা বাড়িয়ে দেয়।

আরো খারাপ পরিণতি দেখার আগেই নেয়া হোক যথাযথ ব্যবস্থা।