মিরপুরে অবরোধ কাঁচপুরে রণক্ষেত্র

অর্থনীতি এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন ঢাকা বানিজ্য রাজধানী সারাদেশ

বকেয়া বেতনের দাবিতে

বিশেষ প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে একটি শিল্প কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল (কাঁদানে গ্যাস) ও রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাঁচপুরের সিনহা ওপেক্স গ্রুপের কারখানার শ্রমিকরা বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বকেয়া বেতনের দাবিতে রোববার সকাল থেকেই মিরপর ১ থেকে মিরপুর ১০ পর্যন্ত প্রধান সড়ক ও গলি রাস্তা অবরোধ করো রেখেছে পোশাক শ্রমিকরা। যার ফলে উক্ত এলাকার সড়কে চলছে না কোনো যানবাহন। গাড়ি না চলায় সকাল থেকেই ভোগান্তিতে পড়েছে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ।
এদিকে সাধারণ মানুষদের এ ভোগান্তির ফায়দা নিচ্ছে রিকশাওয়ালারা। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দিগুণের বেশি ভাড়া হাঁকছে তারা। ভাড়ার দরকষাকষিতে কেউ কেউ ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ছে।
জানতে চাইলে মিরপুর রোডের রিশকাওয়ালা আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমরা গরিব মানুষ। টাহা তো সবসময় বেশি নেই না। এখন গাড়ি কম আছে রোডে, যার কারণে কেউ কেউ বেশি চাচ্ছে।
অবরোধের ফায়দা নিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে আশরাফ বলেন, অবরোধ হলে ঈদ ঈদ মনে হয়। টাকা বেশি কামাইতে পারি। দশ জনের দশ বাপ, সবাই তো চাই একটু বেশি ইনকাম। তবে সবসময় আমরা এ রকম করি না। আর আমরা গতরে খেটে আয় করি, কডা বেশি দিলেও তো সমস্যা নাই।
পোশাক কর্মী রাবেয়ার কাছে প্রশ্ন ছিলো, অবরোধে মোটরসাইকেলসহ সব পরিবহন বন্ধ থাকলেও রিকশা কেনো চলছে- বলেন, আমরাও ছোট আয়ের মানুষ, ওরাও। গরীব গরীবের দুঃখ বুঝি। ওদের চলতে না দিলো পেটে লাথি পড়বে। তাই ওদের বাধা দিচ্ছি না।
অন্যদিকে জাবেদ আক্তার নামে এক চাকরিজীবি দাবি করেন, রিশকাওয়ালাদের উচ্চ ভাড়া হাঁকার কর্মকা- নিত্তনৈমিত্তিক। ওরা সুযোগ পেলেই দিগুণ ভাড়া চেয়ে বসে আর সড়কে অবরোধ থাকলে তো কথায় নেই। ওরা আমাদের অসহায়ত্তের ফায়দা নেয়। পুলিশ প্রসাশনের উচিত এদের ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া।
মিরপুরের সড়কে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়ক অবরোধে বাড়ছে পোশাক শ্রমিকদের সংখ্যা। তপ্ত রোদে নাকাল হয়ে পড়েছে মিরপুরবাসী। কারখানার মালিকদের গাফিলতিতে এরকম বিড়ম্বনা কারো কাম্য নয়।
কাঁচপুরে রণক্ষেত্র : নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে একটি শিল্প কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল (কাঁদানে গ্যাস) ও রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাঁচপুরের সিনহা ওপেক্স গ্রুপের কারখানার শ্রমিকরা বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ওই কারখানার শ্রমিকরা জানান, বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তারা মালিকপক্ষের কাছে যান। মালিকপক্ষ তাদের দাবি না মেনে খারাপ আচরণসহ কয়েকজন শ্রমিককে মারধর করে। পরে রোববার সকালে বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা রাস্তায় নামে। পুলিশ কারাখানা মালিকের পক্ষ নিয়ে শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জসহ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
শিল্প পুলিশ-৪ এর পুলিশ সুপার বশির জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। সকালে শ্রমিকরা তাদের দাবি নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ তাদেরকে সরিয়ে দিতে চাইলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে প্রায় ৫জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বর্তমানে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে এবং শ্রমিকরা শান্ত রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *