এক বছর আগেই দুর্নীতির মুখোশ খুলেছিল “আমাদের মাতৃভূমি”, আজ সেই কায়কোবাদের পদোন্নতি — হুমকির মুখে সাংবাদিক সমাজ 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী রাজনীতি সংগঠন সংবাদ সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  গণপূর্ত অধিদপ্তরের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত কর্মকর্তা মো. কায়কোবাদ, পিতা ইউনুস আলী সরকার—২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল/মেকানিক্যাল) পদে চলতি দায়িত্ব পেয়েছেন।


বিজ্ঞাপন

কিন্তু এই পদোন্নতির পর আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন তিনি। কারণ, মাত্র এক বছর আগেই—২০২৪ সালের ১০ জুলাই তারিখে “দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি” পত্রিকায় প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই কায়কোবাদকে “গণপূর্ত অধিদপ্তরের ভয়ঙ্কর দুর্নীতিবাজ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।

দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি পত্রিকায় প্রকাশিত কায়কোবাদের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত অকুতোভয় দুঃসাহসী প্রতিবেদন এর ছবি।

 

আমাদের মাতৃভূমি যা লিখেছিলো কায়কোবাদের সম্পর্কে : 
দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি–এর সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল:
“গণপূর্ত অধিদপ্তরের ই-এম সার্কেল–২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদ সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর নাম ভাঙিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন।


বিজ্ঞাপন

নিয়োগ-বদলি ও পদোন্নতির বিনিময়ে গড়ে তুলেছেন বিশাল সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা হলেন ফয়সাল, কল্যাণ কুমার কুণ্ড, রাজীব, টিটু প্রমুখ নির্বাহী প্রকৌশলী। কায়কোবাদের নেতৃত্বে এই চক্র সরকারি প্রকল্পের বিল থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।”


বিজ্ঞাপন
দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি পত্রিকার অকুতোভয় দুঃসাহসী সাংবাদিক দুর্নীতিবাজ কায়কোবাদের ছবি এবং যে ভবনে তার কোটি টাকার ফ্ল্যাট সেই ভবনের ছবি ও ছাপিয়েছিলেন।

 

প্রতিবেদনটি আরও জানায়—“কায়কোবাদের অধীনে থাকা ইএম বিভাগ–৪, ৫ ও ৭–এর প্রতিটি নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর দুর্নীতি ও অনিয়মের খতিয়ান।

কাজ না করেই বিল তোলার ঘটনা বহুবার ঘটেছে, কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ নির্বিকার। তার মাসিক বেতনের তুলনায় সম্পদের পরিমাণ শতগুণ বেশি—রাজধানীর ইকবাল রোডে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, ধামরাইয়ে ১০ তলা ভবন, শেরপুরে জমিজমা ও প্রিমিও গাড়ির মালিক।”

এছাড়াও আমাদের মাতৃভূমি লিখেছিল— “একটি সার্কেলে পুরো অর্থবছরের যত কাজ হয়, তার ৫ শতাংশ কমিশন নিয়মিত আদায় করেন কায়কোবাদ।

উপ-সহকারী প্রকৌশলী থেকে তত্ত্বাবধায়ক পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে নির্ধারিত হারে কমিশন বণ্টন হয়। মোট বিলের ২৫ থেকে ২৮ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দিতে হয় ঠিকাদারদের।”

সবচেয়ে ভয়াবহ অভিযোগটি ছিল এই লাইনটিতে:  “দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী যেখানে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন, সেখানে পিডব্লিউডিতে প্রকাশ্যে কমিশন বাণিজ্য চলছে, আর সেই বাণিজ্যের রাজা হলো কায়কোবাদ।”

দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি পত্রিকায় গণপূর্তের দুর্নীতিবাত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদের মুখোশ উন্মোচন করার পরও তাকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেওয়ার ধৃষ্টতা দেখালো মন্ত্রণালয়।

 

এবার সেই কায়কোবাদেরই পদোন্নতি !  দুর্নীতির এমন ভয়ানক চিত্র প্রকাশের পরও এক বছর যেতে না যেতেই, একই ব্যক্তি—মো. কায়কোবাদ—আজ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ই/এম) পদে চলতি দায়িত্ব পেয়েছেন! এ যেন দুর্নীতির পুরস্কার ও নীতির পরাজয় একসাথে। অভিযোগ উঠেছে—এই নিয়োগের পর কায়কোবাদ ও তার ঘনিষ্ঠ সিন্ডিকেট সদস্যরা “দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি”র সম্পাদককে ফোনে ও বিভিন্ন মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তাদের দাবি, “নিউজটি সরিয়ে না নিলে ফল ভালো হবে না।”

সাংবাদিক সমাজ ক্ষুব্ধ: “যে পত্রিকা দুর্নীতির মুখোশ খুলেছিল, আজ সেই পত্রিকাকেই ভয় দেখানো হচ্ছে!”

বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন বলছে—এটা শুধু “আমাদের মাতৃভূমি”র নয়, বরং পুরো সাংবাদিক সমাজের ওপর হুমকি। যে পত্রিকা এক বছর আগে কায়কোবাদের দুর্নীতি প্রমাণসহ প্রকাশ করেছিল, আজ সেই একই পত্রিকার সম্পাদককে হুমকি দিচ্ছে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট!

আমাদের মাতৃভূমি তখন লিখেছিল, “অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রতিটি সার্কেলে দুর্নীতি ও কমিশন বাণিজ্য চলছে।

এর নেপথ্যে রয়েছেন কায়কোবাদ নামের এক অদম্য ক্ষমতালোভী প্রকৌশলী, যিনি ঠিকাদারদের থেকে ২০–২৫% কমিশন নেন এবং সার্কেলের প্রতিটি কাজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখেন।”

আজ সেই একই ব্যক্তি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসীন, আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে এমন সাংবাদিকেরা পড়েছেন নিরাপত্তাহীনতায়।

মহা দুর্নীতিবাজ কায়কোবাদ এর বিরুদ্ধে প্রকাশিত দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি পত্রিকার নিউজ এর স্কিন শর্ট।

 

আমাদের মাতৃভূমি – একদিনের নায়ক, আজ ব্যঙ্গের পাত্র
যখন কায়কোবাদের দুর্নীতির রিপোর্ট প্রথম প্রকাশিত হয়, তখন আমাদের মাতৃভূমিকে সবাই সাহসী ও নির্ভীক সাংবাদিকতার প্রতীক হিসেবে দেখেছিল। কিন্তু আজ অনেকেই ব্যঙ্গ করে বলছেন— “যে পত্রিকা দুর্নীতিবাজের মুখোশ খুলেছিল, আজ তারাই সেই দুর্নীতিবাজের হুমকিতে কাঁপছে!”

এ যেন সাংবাদিকতার করুণ বাস্তবতা—যেখানে দুর্নীতিবাজরা পদোন্নতি পায়, আর অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা পায় হুমকি!

শেষ কথা  :  আমরা, আজকের দেশ ডট কম, দৃঢ়ভাবে জানাচ্ছি আমাদের কোনো সহকর্মী সাংবাদিক, কোনো সম্পাদককে ভয় দেখিয়ে সত্য চাপা দেওয়া যাবে না। যতদিন “আমাদের মাতৃভূমি”-এর মতো পত্রিকা ও নির্ভীক সাংবাদিকরা দেশে আছে, ততদিন কায়কোবাদদের মতো দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীরা মুখ লুকিয়ে বাঁচবে না।

সমার্থিত ও অসমর্থিত সুত্রের দাবি  :  এক বছর  আগের ২০২৪ সালের ১০ জুলাই তারিখে “দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি” পত্রিকায় প্রকাশিত ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি  কায়কোবাদ সিন্ডিকেট এর দাপুটে ও ভয়ংকর সন্ত্রাসী চক্রের সহায়তায় দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি পত্রিকার অনলাইন ভার্সন থেকে সরিয়ে দিতে দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি পত্রিকা কর্তৃপক্ষের  সন্ত্রাসী হামলা সহ প্রাণনাশের আশংকা থেকে যাচ্ছে। এবিষয়ে সকল সাংবাদিক সহযোদ্ধাদের আজকের দেশ ডটকম পরিবারের পক্ষ থেকে সদা জাগ্রত থাকার উদাত্ত আহ্বান জানানো হলো।

(খবরের তথ্য  সূত্র ও ছবি  : দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি, তারিখ ১০-০৭-২০২৪) (Link:https://dailyamadermatribhumi.com/article/77952)


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *