!! বিশেষ প্রতিবেদন !! একশত বন্দীর পদচারণে চালু হলো খুলনার নবনির্মিত কারাগার

Uncategorized আইন ও আদালত খুলনা জাতীয় প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

পুরাতন কারাগার থেকে সশ্রম এবং বিনাশ্রম সাজাপ্রাপ্ত ১০০ বন্দি সাজাপ্রাপ্ত আসামি এনে সীমিত পরিসরে চালু হলো আধুনিক সুবিধার খুলনার নতুন কারাগার। আজকের দেশ ডটকম এর যশোরের বিশেষ প্রতিনিধি মো: সুমন হোসেন সরেজমিনে খুলনা জেলার নবনির্মিত আধুনিক কারাগারে গিয়ে তদন্ত রিপোর্ট টি তৈরি করেছেন। 


বিজ্ঞাপন

মো : সুমন হোসেন ((যশোর)  : পুরাতন কারাগার থেকে সশ্রম এবং বিনাশ্রম সাজাপ্রাপ্ত ১০০ বন্দি সাজাপ্রাপ্ত আসামি এনে সীমিত পরিসরে চালু হলো আধুনিক সুবিধার খুলনার নতুন কারাগার। আজ শনিবার (১-নভেম্বর) শুরু হয়েছে নতুন কারাগারের কার্যক্রম। বেলা সাড়ে ১১ টায় পুরাতন কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রিজন সেলে করে কয়েদিদের নতুন কারাগারে আনা হয়। কারা কর্তৃপক্ষ নতুন কারাগারে তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কারা অধিদপ্তরের কারা-উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) মো. মনির আহমেদ, খুলনা জেলা কারাগারের জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান, ডেপুটি জেল সুপার আব্দুল্লাহ হেল আল আমিন, জেলার মুহাম্মদ মুনীরসহ উধ্বর্তন কর্মকর্তারা। খুলনা জেলা কারাগারের জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান বলেন, দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হলো ১০০ বন্দিদের স্থানান্তরের মধ্য দিয়ে।


বিজ্ঞাপন

নতুন জেল হওয়ায় অনেক চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে ১০০ আসামীকে আনা হয়েছে। দেখা যাক, কি কি সমস্যা ফেস করতে হতে হয়।


বিজ্ঞাপন

কারা সূত্র জানায়, খুলনায় পুরাতন ও নতুন দুটি কারাগার পরিচালনায় মোট ছয় শ” জন জনবল প্রয়োজন হলেও বর্তমানে রয়েছে ২০৮জন। সম্প্রতি নতুন করে আরও ৪৪ জনকে পদায়ন করা হয়েছে। সীমিত জনবল নিয়েই আপাতত দুটি কারাগার পরিচালনা করা হবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুরাতন কারাগারে রাখা হবে খুলনা মহানগরের বন্দিদের এবং নতুন কারাগারে জেলার নয় উপজেলার বন্দিদের।

নতুন এই কারাগারটি নির্মিত হয়েছে আধুনিক সংশোধনাগার হিসেবে। এখানে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য পৃথক ভবন, নারী, কিশোর ও কিশোরীদের জন্য আলাদা ব্যারাক, হাসপাতাল, ওয়ার্ক শেড ও মোটিভেশন সেন্টারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

বন্দিদের চিকিৎসার জন্য রয়েছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল, আর কারারক্ষীদের পরিবারের জন্য নির্মিত হয়েছে স্কুল, ডাইনিং, লাইব্রেরি, সেলুন ও লন্ড্রি। শিশু সন্তানসহ নারী বন্দিদের জন্যও রয়েছে ডে-কেয়ার সেন্টার, যেখানে সাধারণ বন্দিদের প্রবেশাধিকার থাকবে না।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে খুলনায় শুরু হলো নতুন অধ্যায়– একটি আধুনিক, মানবিক ও সংশোধন নির্ভর কারা ব্যবস্থার যাত্রা।

নতুন কারাগারের ভিতরে পাকা পথ, রঙিন ভবন, পার্কিং টাইলসের ফুটপাত, মসজিদ, হাসপাতাল। বন্দিদের জন্য নির্মিত প্রতিটি ভবনের চারপাশে রয়েছে পৃথক সীমানা প্রাচীর, যাতে এক শ্রেণির বন্দি অন্য শ্রেণির সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে।
মোট ৫৭টি স্থাপনা নির্মিত হয়েছে, যার মধ্যে বন্দিদের থাকার ভবন ১১টি। নিরাপত্তা জোরদারে পুরো কারাগারের ভেতরে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ দেয়াল নির্মিত হয়েছে।

নবনির্মিত কারাগারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রয়েছে ফাঁসির মঞ্চ। ছাই রংয়ের টিনের শিট আর চালে ঢেউ টিনে নির্মিত ফাঁসির মঞ্চের ঘরটি। যা কিনা দেশের ‘সবচেয়ে আধুনিক ফাঁসির মঞ্চ’ বলে দাবি কারা কর্তৃপক্ষের।

জানা গেছে, নতুন কারাগার কমপ্লেক্সটি খুলনা সিটি বাইপাস (রূপসা ব্রিজ রোড) রোডে ৩০ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে।
২০১১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১৪৪ কোটি টাকার প্রাথমিক বাজেট এবং ২০১৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত সময়সীমা দিয়ে খুলনায় কেন্দ্রীয় কারাগারের নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন করে।

এরপর একাধিকবার সময় সীমা বাড়ানো এবং দু’বার বাজেট সংশোধনের পর প্রকল্পের খরচ দাাঁড়ায় ২৮৮ কোটি টাকায়। কারাগারটি ৪ হাজার বন্দির ধারণক্ষমতা সম্পন্ন হলেও, বর্তমান অবকাঠামোতে ২ হাজার বন্দি থাকতে পারবে।

👁️ 177 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *