এডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর ফকরুল ইসলাম গুন্দের বিরুদ্ধে প্রতারনার অভিযোগে পাঁচটি মামলা!

অপরাধ আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর(এপিপি) ফকরুল ইসলাম গুন্দের বিরুদ্ধে প্রতারনার অভিযোগে বিজ্ঞ,সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৪র্থ আদালত,কক্সবাজার -এ নিগুশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট এ্যাক্ট এর ১৩৮ ধারায় অভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে পৃথক পৃথক ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে খোদ আইনের রক্ষক সরকারি আইনজীবির বিরুদ্ধে প্রতারনার অভিযোগে এক সাথে ৫টি মামলা হওয়ায় আদালত পাড়ায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সম্প্রতি সরকার মহেশখালীর ধলঘাটায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্যে জমি অধিগ্রহন শুরু করে। অধিগ্রহনকৃত জমির অনেক মালিক এল.এ শাখা থেকে জমির মূল্য বাবদ টাকা উত্তোলনের জন্যে পারিশ্রমিক ফি দিয়ে এডভোকেট ফকরুল ইসলাম গুন্দ কে লবিষ্ট বা আইনজীবি নিযুক্ত করেন। কিন্ত ফকরুল ইসলাম এল.এ শাখা থেকে অধিগ্রহনকৃত টাকা উত্তোলন করে দেয়ায় ক্ষেত্রে সহযোগিতা করলেও জমির মালিকদের কাছ থেকে ”প্রয়োজনে খরচ” বাবদ ফেরতযোগ্য যে টাকা নিয়েছেন তা ফেরত দেয়নি। ফলে টাকা ফেরত পাওয়ার জন্যে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ভাবে সমঝোতার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ভূক্তভোগীদের মধ্যে ৫ জন অভিন্ন অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছে।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী,বাদি ছকিনা বেগম(সিআর মামলা নং-৮১৮,৬/১০/২০২০, আসামীর ব্যাংক এশিয়ার একাউন্টের ২ লাখ ৫০হাজর টাকার চেক ), বাদি জাহেদুল ইসলাম রুবেল(সিআর মামলা নং-৯৫৫,১৭/১১/২০২০, আসামীর ব্যাংক এশিয়ার একাউন্টের ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক), বাদি মো: মামুন (সিআর মামলা নং-৭৭৯,২৭/৯/২০২০, আসামীর ব্যাংক এশিয়ার একাউন্টের ৩লাখ ৫০হাজার টাকার চেক), বাদি সাহাবউদ্দিন (সিআর মামলা নং-৭৭৭, ২৭/৯/২০২০, আসামীর ব্যাংক এশিয়ার একাউন্টের ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক) এবং বাদি নাহিদ রেজা খান সুজন (সিআর মামলা নং-৭৭৮,২৭/৯/২০২০আসামীর ব্যাংক এশিয়ার একাউন্টের ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক) বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৪র্থ আদালত, কক্সবাজার -এ ফকরুল ইসলাম গুন্দের বিরুদ্ধে নিগুশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট এ্যাক্ট এর ১৩৮ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।


বিজ্ঞাপন

এছাড়া আরো ২জনের কাছ থেকে এল.এ শাখা থেকে টাকা উত্তোলনের জন্যে ফকরুল ইসলাম টাকা নিয়েছেন বলে জানাগেছে। এরমধ্যে একজন কে চেক দেননি;তাই তিনি মামলা করতে পারেন নি। অপরজন মোহাম্মদ কায়য়ূম কে টাকা পরিশোধের জন্যে সাড়ে সাত লাখ টাকার চেক প্রদান করেন। তবে তিনি আইনী জটিলতার কারনে চেষ্টা করেও মামলা দায়ের করতে পারেন নি। এ বিষয়ে মোহাম্মদ কায়য়ূম এই প্রতিবেদক কে বলেন, অন্যান্য পাওনাদারের মত আমাকেও ব্যাংক এশিয়ার একাউন্ট’র সাড়ে সাত লাখ টাকার একটি চেক দিয়েছে ফকরুল ইসলাম। অযতেœর কারনে চেকটি বিকৃত হয়ে গেছে। তাই উদ্যেগ গ্রহন করেও মামলা দায়ের করতে পারিনি। টাকা উত্তোলনের জন্যে আমাদের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছিল সে অনুযায়ী কাজ না করে ফকরুল ইসলাম টাকা পরিশোধে টালবাহানা করেন বলে তিনি দাবি করেন।
এ বিষয়ে ফকরুল ইসলাম গুন্দের বিরুদ্ধে নিগুশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট এ্যাক্ট এ দায়েরকৃত মামলার বাদি ছকিনা বেগমের পক্ষে পাওয়ার অব এটর্নী প্রাপ্ত রমিজ উদ্দিন বাদশা বলেন, আসামী আমাদের পূর্ব পরিচিত। যে কারনে সরল বিশ^াসে পারিশ্রমিক দিয়ে টাকা উত্তোলনের জন্যে লবিস্ট আইনজীবি নিয়োগ করি। টাকা উত্তোলনের পর সমঝোতা অনুযায়ী তিনি টাকা ফেরত না দিলে; আমরা পারিবারিকভাবে অলোচনার মাধ্যমে টাকা আদায়ের চেষ্টা করি। এক পর্যায়ে তিনি আমাদের ৫জন পাওনাদারকেই টাকা পরিশোধের নিমিত্তে যার যার পাওনার পরিমান উল্লেখপূর্বক তার ব্যাংক এশিয়ার একই একাউন্টের পৃথক পৃথক ৫টি চেক প্রদান করেন। একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেক ব্যাংকে জমা দিলে তা ডিসঅর্নার হয়। পরে বাধ্য হয়ে টাকা উদ্ধারের জন্যে উকিল নোটিশ প্রদান সহ অন্যান্য আইনী প্রক্রিয়া শেষে আদালতে মামলা দায়ের করি। তিনি আমাদের নানাভাবে হয়রানীর চেষ্টা করেছেন। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে তার অফিস ভাংচুর,বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি অবমাননার মিথ্যা অভিযোগ থানায় দিয়েছিলেন। কিন্ত তদন্তে সত্যতা প্রমানিত হয়নি বলে থানা ফকরুল ইসলাম গুন্দের অভিযোগ গ্রহন করেন নি। মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এখনো তিনি নানাভাবে আমাদের হয়রানি করার চেষ্টা করছেন বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, বাদীদের পক্ষে ৫টি মামলাই পরিচালনা করছেন বিশিষ্ট আইনজীবি নাহিদা খানম কক্সি।
এবিষয়ে মামলার আসামী এপিপি ফকরুল ইসলাম গুন্দের বক্তব্য জানার জন্যে প্রতিবেদক তার মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি রিসিভ করেন নি।

 

 

 

 

 

👁️ 11 News Views