রাজধানীর বনানীতে চিহ্নিত মাদক কারবারি শরীফের জমজমাট ইয়াবা ব্যবসা :  নারকোটিক্স কন্ট্রোল এর কর্মকর্তারা কি জানেন?

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  : রাজধানীর বনানী থানাধীন মহাখালী এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি শরীফ উরফে পাগলা শরীফ দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর ফের মাদক কারবার শুরু করেছেন।  ইয়াবা ব্যবসায় এখন মহাখালী জুড়ে শুধু তার নাম। শরীফের মাদক কারবার শুরু হবার পর থেকেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পেছনে শাকেরিয়া মাদ্রাসা গলিতে মাদকাসক্তদের আনাগোনা বেড়েছে।


বিজ্ঞাপন

শরীফের নিজ বাড়িতে প্রতিদিন বসছে জমজমাট মাদকের আসর। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তবে এ খবর কি নারকোটিক্স কন্ট্রোল এর কর্মকর্তারা কি জানেন কি না তা জানা যায় নি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, একসময় নামধারী সন্ত্রাসী শরীফের মূল পেশা ছিল চাঁদাবাজি। অবৈধ অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজি করতেন। এছাড়া চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের সাথেও জড়িত ছিল। বনানী থানা হওয়ার আগে গুলশান থানায় শরীফের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। এক পর্যায়ে চাঁদাবাজির ব্যপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় বারবার গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটে শরীফ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছাড়তে বাধ্য হয়। কিন্তু কথায় আছে কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না।


বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, ২০১৮ সালে শরীফ ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পুরোদমে নাম লেখায় ইয়াবা কারবারি হিসেবে। মহাখালী রাজউক অফিসের একটি পরিত্যক্ত ভবনকে বানায় তার মাদক স্পট। সেখানে ইয়াবা ও গাঁজার কারবার চালাতেন। সেই মাদক স্পটটি সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্রাবাসের পাশে হওয়ায় একসময় ছাত্ররা জানতে পেরে দলবেঁধে সেখানে গিয়ে মাদক স্পটটি গুঁড়িয়ে দেয়। কিন্তু শরীফ আগে থেকে টের পেয়ে পালিয়ে যায়। পরে সে তার নিজের বাড়িতে মাদক কারবার শুরু করে। মহাখালী শাকেরিয়া মাদ্রাসা গলির একটু সামনের গেলেই এই মাদক কারবারির বাসা।


বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে শরীফ গোটা মহাখালীর ইয়াবা ব্যবসা তার নিয়ন্ত্রণে নেয়। ছোট-বড় সব ইয়াবা ব্যবসায়ীরা তার কাছে পাইকারি দামে ইয়াবা সংগ্রহ করত। তার চিন্তাধারা ছিল গোটা মহাখালীর ইয়াবা ব্যবসায় সে একাই রাজত্ব করবে। ইয়াবা কারবারে সে এতটাই আলোচিত হয়েছিল যে গোটা মহাখালীর ইয়াবা ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্ত সবার মুখে মুখে ছিল তার নাম। টেকনাফের বড় বড় ইয়াবা কারবারিরা সরাসরি তাকে ইয়াবা দেওয়ার জন্য আসত।

থানা পুলিশ ও ফর্মা সবাইকে ম্যানেজ করে মাদক কারবারের বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল এই শরীফ। তার কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহের সহজলভ্যর কারনে এলাকার কিশোর-যুবক, বৃদ্ধরা ছাড়াও নাবালক ছেলেপেলেও আসত। এলাকায় মাদকাসক্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। মহাখালী মধ্যপাড়ায় শরীফের বাড়িতে সারাদিন মাদকসেবীদের আনাগোনায় এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল।

পরে এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও বনানী থানা পুলিশের অভিযানে কয়েকবার গ্রেফতার হয় শরীফ। ভেঙ্গে যায় তার মাদক সাম্রাজ্য। জেল থেকে জামিনে বের হয়ে আবার ইয়াবা ব্যবসা শুরু করার কয়েকদিন পরেই পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালায়। এভাবে কয়েকবার গ্রেফতার হয়ে শরীফ এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।‌

সম্প্রতি শরীর আবার তার পুরোনো মাদক ব্যবসায় ফিরে এসেছে। কৌশলে আবার শুরু করেছে ইয়াবা কারবার। সে যতই কৌশল অবলম্বন করুক না কেন তার বাড়িতে আবার মাদকাসক্তদের আনাগোনায় বিষয়টি এলাকাবাসীর নজড়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর মুখে মুখে এখন আবার তার মাদক কারবারের অভিযোগ। ঘরের পাশেই মাদক! এনিয়ে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে আছেন মারাত্মক দুশ্চিন্তায়!

সরেজমিনে, শরীফকে ইয়াবা বিক্রি করতে সরাসরি দেখা যায়। এবং তার বাড়িতে মাদকাসক্তদের আনাগোনা লেখা যায়। এছাড়া সেই বাড়িতে বনানী থানা পুলিশের সোর্সদের যাতায়াতও দেখা যায়।

হতাশা প্রকাশ করে এলকার একজন বাসিন্দা বলেন, ‘শরীফ আর ভালো হলো না। আবার মাদক ব্যবসা শুরু করেছে। মাদক সেবীরা এলাকায় ঘুরঘুর করে। শরীফকে খুঁজে।’

শরীফের এক প্রতিবেশী জানান, ‘মাদক সেবীরা শরীফের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে। তারপর শরীফের বাড়ির নিচে এসে দাঁড়ালে তার নিয়োগ করা লোকজন আশেপাশে দেখে সমস্যা নেই! নিশ্চিত করলে শরীফ বাড়ির গেটের তালা খুলে মাদকসেবীদের ভেতরে ডেকে নেয়।’

এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি এই মুহুর্তে উল্লেখিত ঘটনার তদন্ত পূর্বক ব্যাবসা গ্রহণ করবে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা

👁️ 5 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *