মাথায় ঝুলছে দুর্নীতির মামলা : দুদককে ফাঁকি দিয়ে দেশ ছেড়ে পালালেন ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম !

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত কর্পোরেট সংবাদ জাতীয় ঢাকা প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  দুদককে ফাঁকি দিয়ে দেশ ছেড়ে পালালেন ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম, দুর্নীতির মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) ফাঁকি দিয়েই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম। গত ৩১ জুলাই ডোমিনিকান পাসপোর্ট (ভিসা-মুক্ত বা ভিসা-অন-অ্যারাইভাল অ্যাক্সেস) ব্যবহার করে তিনি বাংলাদেশ ছাড়েন। এর আগে ওবায়দুল করিমের বিদেশ গমনে দুই দফা নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও তিনি দুদককে ফাঁকি দিয়েই কৌশলে পালিয়ে যান।


বিজ্ঞাপন

ওবায়দুল করিম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ দুর্নীতির কয়েকটি মামলার বিচার চলছে। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ওবায়দুল করিম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ঢাকা মহানগরের বিশেষ জজ আদালত। পরে ওবায়দুল করিমের চিকিৎসা ও ওমরাহ হজ পালনের জন্য এবং এ ক্ষেত্রে অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে স্ত্রী আরজুদা করিম ও মেয়ে জারিন করিমের বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়।

শুনানি শেষে গত ১৬ মার্চ এক আদেশে ওবায়দুল করিম ও আরজুদা করিমকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেন ঢাকা মহানগরের বিশেষ জজ আদালত। এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। ১৮ মার্চ শুনানি শেষে ওবায়দুল করিম ও তার স্ত্রী আরজুদা করিমের বিদেশ গমনের অনুমতির আদেশ ২১ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ আলী ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর বেঞ্চ। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগর বিশেষ জজ আদালতের ১৬ মার্চের আদেশ কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।


বিজ্ঞাপন

এদিকে, জারিন করিমের বিদেশ যাওয়ার আবেদনের বিষয়ে ১৬ মার্চ আদেশ না দিলেও ২১ এপ্রিল তার আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর বিশেষ জজ আদালত। বিদেশ গমনের অনুমতি চেয়ে জারিনের করা আবেদনে বলা হয়, জারিন করিম ক্যারিবিয়ান রাষ্ট্র ডমিনিকান রিপাবলিকে বাংলাদেশি কনস্যুলেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


বিজ্ঞাপন

তিনি ক্যারিবিয়ান রাষ্ট্র ডমিনিকান রিপাবলিকে বাংলাদেশি কনস্যুলেটর হিসেবে ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিফ অব প্রোটোকল অফিসার নাঈম উদ্দিন আহমেদের কাছ থেকে নিয়োগপত্র গ্রহণ করেন। তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনের জন্য বিদেশ যেতে অনুমতি চান। এর পর আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তিনি ২২ এপ্রিল বিদেশ গমন করেন।

অপরদিকে, চিকিৎসা ও ওমরা পালনের জন্য বিদেশ গমনের অনুমতির আদেশ স্থগিতের মেয়াদ শেষ হলেও হাইকোর্টের জারি করা রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় জুলাই মাসে বিদেশ যাওয়ার জন্য ফের বিশেষ জজ আদালতে আবেদন করেন ওবায়দুল করিম। শুনানি শেষে ৩০ জুলাই আবেদনটি মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর বিশেষ জজ আদালত। এ আদেশের পর কাল বিলম্ব না করেই ওবায়দুল করিম ডোমিনিকান পাসপোর্ট ব্যবহার করে কৌশলে দেশ ছাড়েন।

পরে বিশেষ জজ আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফের আবেদন করে দুদক। শুনানি শেষে ১০ আগস্ট এক আদেশে ওবায়দুল করিমের বিদেশ গমনে বিশেষ জজ আদালতের ৩০ জুলাই দেওয়া অনুমতির আদেশটি তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ আলী ও বিচারপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ সুমনের বেঞ্চ। একই সঙ্গে বিশেষ জজ আদালতের ওই আদেশ কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ৪ সপ্তাহের রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের এই আদেশের ১০ দিন আগেই ৩১ জুলাই বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার না করে ডোমিনিকান পাসপোর্টের ভিত্তিতে দেশ ছাড়েন ওবায়দুল করিম।

এ ব্যাপারে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আক্তারুল ইসলাম গণমাধ্যম কে জানান , ‘দুদক প্রতিটি ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে থাকে। এ ক্ষেত্রেও দুদক আইনি প্রক্রিয়া যথাযথভাবে পালন করেছে।’

👁️ 16 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *