
মাগুরা প্রতিনিধি : পুলিশ বাহিনীর একজন নিরাপরাধ সদস্যের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে ১৫ লাখ টাকা আদায়ের অপচেষ্টা রুঁখে দিয়েছে আদালত। অবশেষে দুরভীসন্ধিমূলক এই মামলা থেকে পুলিশ সদস্যকে অব্যাহতি দিয়ে বাদীর নামে ১৭ ধারায় মামলা রুজু করার প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনাটি ঘটেছে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার কালিনগর গ্রামে। ঘটনাটি আদালতপাড়া ও মাগুরা জেলায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।

জানাগেছে, মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার হোগলডাংগা গ্রামের পুলিশের মো: মোকাদ্দেস হোসেন এর পুত্র এএসআই মো: শামীম ইসলামের সাথে প্রতারণামূলক বিয়ের কাবিননামা সৃষ্টি করে তাকে স্বামী দাবী করে একই উপজেলার কালিনগর গ্রামের নায়েব শেখের বখে যাওয়া কন্যা পিংকী খাতুন ওরফে নিশি ইসলাম পিংকী। বিষয়টি জানতে পেরে এএসআই শামীম নিকাহ রেজি: আইন মোতাবেক গত ২৮/০১/২০২৫ ইং তারিখে পিংকীকে তালাক প্রদান করেন এবং তালাকনামার ানুলিপি কপি সরকারী রেজি: ডাক যোগে পিংকীর পিতার বাড়ির ঠিকানায় ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দপ্তরে পাঠিয়ে দেন।
এ খবর জানতে পেরে পিংকী কোন প্রকার ঘর সংসার না করেই এএসআই শামীম ইসলামকে স্বামী দাবী করে মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং ২৫ তারিখ ২৭/৪/২০২৫ ইং। মামলাটি মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে জেনারেল রেজিষ্ট্রারভুক্ত হয় যার নং শ্রীপুর জিআর ৮৬/২৫।

এই মামলাটি তদন্ত থাকাকালে বাদী পিংকী মামলা তুলে নেওয়া বা মিমাংশার শর্তে এএসআই শামীমের কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবী করে। অন্যথায় এই মামলায় মিথ্যা সাক্ষী প্রমাণ উপস্থাপন করে তার পুলিশের চাকুরী খেয়ে ফেলার হুমকি দেয়। মিথ্যে এই ঘটনার বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়াটারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে । ফলে এএসআই শামীমকে পুলিশের চাকুরী থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

মিথ্যে মামলার শিকার হয়ে এএসআই শামীম বিদ্ধস্থ হয়ে পড়েন এবং গণমাধ্যমের (সাংবাদিকদের) আশ্রয় নেন। তার বর্ণনামতে সরেজমিনে তদন্ত করে সাংবাদিকরা রিপোর্ট প্রচার করলেই বাদী পিংকীর মুখোশ খুলে যায়। সাংবাদিকরা অনুসন্ধান করে জানতে পারেন যে, মামলার বাদী পিংকী একটি বখাটে মেয়ে। তার একাধিক বয়ফ্রেন্ড রয়েছে।
এছাড়া দীর্ঘদিন সে ঢাকার একটি বাসায় একা একা থাকতো। রূপ যৌবনের ফাঁদে ফেলে যুবকদের শিকার করাই তার পেশা ও নেশা। এএসআই শামীম তখন বিষয়টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি সেটি বিশ্বাস করেন এবং সরেজমিনে তদন্ত করে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পান। পরবর্তীতে তিনি বাদী পিংকীর দায়েরকৃত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলাটি মিথ্যা ও উদ্ধেশ্যমূলক বলে আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট পেশ করেন। যার ফাইনাল রিপোর্ট নং ২১ তাং ৩১/৮/২০২৫। একই সাথে মিথ্যা মামলা দায়ের করার অপরাধে বাদী পিংকীর বিরুদ্ধে ১৭ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০এর (সংশোধনী/২০২৫সালের ১১ নং অধ্যাদেশ ধারায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন জানান।
পরবর্তীতে এই ফাইনাল রিপোর্টটি মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে উত্থাপিত হলে বিজ্ঞ বিচারক কেস ডকেট পরীক্ষা নিরীক্ষা করাকালে পিংকী তার আইনজীবির মাধ্যমে নারাজী পিটিশন দিয়ে মামলাটি পুন: তদন্তের আবেদন জানান। কিন্তু শুনানীতে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ ও যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করতে না পারায় বিজ্ঞ বিচারক ফাইনাল রিপোর্টটি গ্রহণ করেন এবং মামলার দায় থেকে আসামী এএসআই শামীমকে অব্যাহতি দেন।
একই সাথে আসামী এএসআই শামীমের আবেদনের ভিত্তিতে বাদী পিংকীর বিরুদ্ধে (মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে) যথায়থ ধারায় মামলা করার অনুমোদন দেন। আদালতের এই আদেশের ফলে বাদী পিংকীর ১৫ লাখের মিশন ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে নিরাপরাধ এএসআই শামীম তার চাকুরী ফিরে পেয়েছে। বহুরূপী ও লোভী এই সুন্দরী পিংকীর রূপ যৌবনের ফাঁদ থেকে দেশের যুব সমাজকে রক্ষা করার জন্য তিনি সরকারের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন।
