শঙ্কায় চালকরা

অর্থনীতি এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন ঢাকা

ঈদযাত্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়ক
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জয়দেবপুর-এলেঙ্গা অংশ চার লেইন করার কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা তৈরি হয়েছে চালকদের মনে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটের বিনিময় পরিবহনের বাস চালক লাল্টু মিয়ার ভাষায়, রাস্তা বড় আছে, কিন্তু ম্যালা জায়গায় কাম হইতাছে। এবা থাকলে এহেন দিয়া জাম থাকব। ঢাকা থেকে উত্তর জনপদে পৌঁছাতে হলে এই পথ দিয়েই বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত পৌঁছাতে হয়। উত্তরবঙ্গের ১৯ জেলাসহ মোট ২৩ জেলার মানুষ ও পণ্যবাহী ট্রাককে এ পথ দিয়েই ঢাকায় যাতায়াত করতে হয়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার যানবাহন এই পথ দিয়ে পার হয়। তবে ঈদের মওসুমে যানবাহনের চাপ বাড়ে কয়েকগুণ। ফলে দীর্ঘ যানজট থাকে এই পথের নিত্য চিত্র। জনভোগান্তি লাঘবে সরকার ২০১৬ সালে দেশের অন্যতম ব্যস্ত এই মহাসড়ক দুই লেইন থেকে চার লেইনে উন্নীত করার কাজে হাত দেয়। পরে কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে মূল প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হয় নতুন নতুন প্রকল্প। কথা ছিল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। সে অনুযায়ী ফোর লেইনের কাজ প্রায় শেষ হলেও প্রায় ৪৫ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে ১২টি আন্ডার পাস, দুটি ওভারপাস এবং দুটি সার্ভিস লেইন যুক্ত করার কাজ শেষ না হওয়ায় মহসড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা।
আন্ডারপাসগুলোর নির্মাণ এলাকায় খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় এবং অনেক জায়গায় নির্মাণ কাজ চলায় সেসব জায়গায় ক্ষণে ক্ষণে দেখা দিচ্ছে যানজট। সড়কের টাঙ্গাইলের সীমানায় গোড়াই রাবনা বাইপাস এলাকসহ কয়েকটি জায়গায় রয়েছে অবৈধ স্থাপনা। রাস্তা চওড়া হলেও পুরনো বৈদ্যুতিক খুটি এখনও অপসারণ করা হয়নি। ফলে ঈদের আগে-পরে সড়কে ঘরমুখো মানুষ আর যানবাহনের চাপ বাড়লে সেই যানজট জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে চালকরা আশঙ্কা করছেন।
একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মাইক্রোবাস চালক বাবু বলেন, এখন মহাসড়ক চওড়া হওয়ায় গাড়ি চালাতে পারছে। কিন্তু আন্ডারপাসের কাছে এসে জট লেগে যাচ্ছে। ঈদ যাত্রার পথে গাড়ির চাপ বেড়ে যায় স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ। তখন অবস্থা আরও খারাপ হবে।”
এবার রোজার ঈদের ছুটি শুরু হচ্ছে ৪ জুন। তবে তার আগে মাত্র একটি কর্মদিবস ছুটি পেলে ৩১ মে শুক্রবার থেকে টানা ছুটি কাটানোর সুযোগ মিলবে সরকারি চাকুরেদের। ফলে সড়কে ঈদযাত্রার চাপ শুরু হয়ে যাবে কার্যত বৃহস্পতিবার থেকেই।
এ নিয়ে চালকদের মধ্যে ভোগান্তির শঙ্কা থাকলেও ততটা উদ্বিগ্ন নন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়।
তিনি বলেন, আমার টাঙ্গাইলের সীমানায় আগের মতই দায়িত্ব পালন করব। আশা করছি ঈদে নির্বিঘেই মানুষ বাড়ি ফিরতে পারবে।
টাঙ্গাইল ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. এশরাজুল হক বলেন, ঈদ যাত্রায় যানজট নিরসনে তাদের প্রায় ৭০০ সদস্য কাজ করবেন। পুলিশ সুপার স্যার কয়েক দফা সভা করে কর্ম পরিকল্পনা ঠিক করেছেন। সিরাজগঞ্জ থেকে গাড়ি টানতে না পারলে বা বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায়ে সমস্যা হলে অনেক সময় যানজট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবু আমরা প্রস্তুত, মানুষ যাতে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারে। জয়দেবপুর-এলেঙ্গা ফোর লেইন প্রকল্পের পরিচালক মো. জিকরুল হাসান বলেন, প্রকল্প এলাকায় ১২টি আন্ডার পাস ও দুটি ওভারপাসের কাজ চললেও ঈদের সময় কয়েকটি খুলে দেওয়া হবে। বাকি এলাকায় দুই পাশ দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। আশা করি এবার ঘরমুখো মানুষ বিড়ম্বনায় পড়বে না।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *