অভয়নগরে সাংবাদিকতার কার্ড করে দেওয়ার প্রলোভনে কিশোরী ধর্ষন

অপরাধ

থানায় মামলা, ধর্ষকরা গ্রেফতার


বিজ্ঞাপন

মো. সুমন হোসেন, অভয়নগর : অভয়নগরে সাংবাদিকতার প্রলোভনে কিশোরী ধর্ষন ও ভিডিও ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ২ ভুয়া সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে অভয়নগর থানা পুলিশ,এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার ৭ সেপ্টেম্বর সাড়ে ১২ টায় ভিকটিমের মা মোছাঃ হোসনেয়ারা পারভীন (৩৫), অভয়নগর থানায় এসে লিখিত অভিযোগসহ একটি মামলা দায়ের করেন তার মেয়ে নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ে এবং বাংলাদেশ বেতারের একজন সংগীত শিল্পী।

অনুমানিক ৩/৮ মাস আগে তার মেয়ে সাংবাদিকতার কার্ড তৈরি করার জন্য জনৈক মাহাবুবুর রহমান (৪০), পিতা- বাশার মোড়ল, সাং-চলিশিয়া, থানা-অভয়নগর, জেলা- যশোর এর নিকট যায় এবং তার পরামর্শ মতে বাদীর মেয়ে ২ কপি ছবি ও জন্মনিবন্ধন এর ফটো কপি দেয়।
এরই সুবাদে আসামী মাহবুবুর রহমান ভিকটিমের ফেসবুক আইডি নেয় এবং ফেসবুকে যোগাযোগ করতে থাকে।

একপর্যায়ে আসামী মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকতার ফরম পূরণ করার জন্য ভিকটিমকে তার চলিশিয়া গ্রামস্থ ঘেরের বাসায় আসতে বলে।

ভিকটিম প্রথমে যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে এবং বলে অফিস রেখে কেন ওখানে যাব। কিন্তু আসামী বলে তার অফিসে যাওয়ার সময় নেই, তুমি এখানে চলে আসো।

তখন ভিকটিম উপায়ান্ত না পেয়ে ২১ আগস্ট সময় অনুমান সাড়ে ১১ টায় কাগজপত্র নিয়ে উক্ত স্থানে পৌঁছালে আসামি মাহবুবুর রহমান বাদীর মেয়েকে জোর করে ঘেরের বাসার ভিতরে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং তার নিজ মোবাইল দিয়ে ধর্ষণ করার ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে ভিকটিম কান্নাকাটি করতে থাকলে আসামি তার মোবাইলে ধারণ করা ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে বলে যদি কাউকে এ ঘটনা সম্পর্কে কিছু বলে তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি প্রদান করে এবং একই সাথে ভিকটিমের সাথে থাকা মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে তার বড় দুলাভাইয়ের ফেসবুক আইডি ও পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয়।

ভিকটিম প্রথমে মানসম্মানের ভয়ে বিষয়টি কাউকে বলেনি। কিন্তু আসামী বিভিন্ন সময় ভিকটিম কে উক্ত ভিডিও ও ছবির ভয় দেখিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপের প্রস্তাব দিতে থাকে।

পরবর্তীতে আসামী মাহবুবুর রহমান ভিডিও ডিলেট করার কথা বলে ভিকটিমকে কাঁচা বাজারে পিছনে ডেকে নিয়ে যায় এবং আসামী মাহবুবুর রহমান ও আসামী অনিক বাঘা(২৬), পিতা-নাসির বাঘা, গ্যাম- গুয়াখোলা, থানা- অভয়নগর, জেলা-যশোর এর সহযোগীতায় ভিকটিমকে বলে তুই নগদ ৫০,০০০/- টাকা দিবি আর নাহলে আমি যেখানে ডাকবো সেখানেই আসবি।

ভিকটিম এগুলো শুনে আরো বেশি ভয় পেতে থাকে এবং তার চলাফেরা দেখে পরিবারের লোকজন বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে।

কিন্তু আসামী এরই মধ্যে উক্ত ভিডিও ও ছবি ভিকটিমের ছোট বোনের, বাবার ফেসবুক আইডিতে সহ আরো অনেক আইডিতে ছড়িয়ে দেয় এবং আসামী অনিক বাঘা গত সোমবার ৬ সেপ্টেম্বর ভিকটিমের বাবার মোবাইলে কল দিয়ে বলে আপনার মেয়ের খারাপ ভিডিও ও ছবি আমার মোবাইলে আছে সন্ধ্যায় নগদ ৫০,০০০/- টাকা নিয়ে নওয়াপাড়া দেখা করেন বিষয়টি আমি মিটিয়ে দিব আর নাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি দেয়।

উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার ৭ সেপ্টেম্বর ভিকটিমকে সাথে নিয়ে তার মা বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।

অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখেন এবং যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য থানা পুলিশ কে তাগিদ দেন। পরবর্তীতে উক্ত থানার এসআই গৌতম কুমার মন্ডলের সমন্বয়ে একটি টিম অভিযোগকৃত দুই জনকে আটক করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম-ঠিকানাঃ (১) মাহাবুবুর রহমান (৪০), পিতা- বাশার মোড়ল, সাং-চলিশিয়া, (২) অনিক বাঘা (২৬), পিতা- নাসির বাঘা, সাং- গুয়াখোলা, উভয়থানা- অভয়নগর, জেলা-যশোর।