৫২ পণ্য না সরানোর ব্যাখ্যা দেবেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

অন্যান্য অপরাধ আইন ও আদালত এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন ঢাকা বানিজ্য রাজধানী স্বাস্থ্য

বিশেষ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া নামি-দামি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের (সাবস্ট্যান্ডার্ড) ৫২ পণ্য বাজার থেকে দ্রুত সরাতে না পারার ব্যাখ্যা দেবেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।
এজন্য আদালতের নির্দেশ মোতাবেক রোববার হাইকোর্টে হাজির হবেন তিনি। এমনটিই জানিয়েছেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম।
নিম্নমানের হওয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২ পণ্য বাজার দ্রুত না সরানোর দায়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে গত ২৩ মে তলব করেন হাইকোর্ট। রোববার ১৬ জুন তাকে হাইকোর্টে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। সে নির্দেশনা অনুযায়ী আগামীকাল এ মামলার শুনানির জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতের কার্যতালিকার এক ও দুই নম্বরে রাখা হয়েছে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফরিদুল ইসলাম বলেন, রোববার মামলাটি শুনানির জন্য দিন নির্ধারিত আছে। আদালত যেহেতু আদেশ দিয়েছেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হাজির হবেন। ওই ৫২ পণ্য কেন সরানোয় যায়নি তারও ব্যাখ্যা আমরা দেব।
অন্যদিকে রিটকারীর আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান বলেন, এ মামলার শুনানির জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। বিএসটিআইর প্রতিবেদন দেখে যদি আমাদের নতুন কোনো নির্দেশনা চাইতে হয়, তাহলে সেটিও আমরা চাইবো।
এ সংক্রান্ত জারি করা রুলের শুনানির এক পর্যায়ে গত ২৩ মে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে তলব করে এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুলও জারি করেন।
বিএসটিআই ৪০৬টি খাদ্য পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ৩১৩টির মধ্যে ৫২ পণ্য মানহীন বলে প্রতিবেদন দেয় বিএসটিআই। এরপর রিট দায়ের করা হলে গত ১২ মে হাইকোর্ট বাজার থেকে আইনানুসারে এসব পণ্য সরিয়ে নিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে নির্দেশ দেন। এই সঙ্গে ওই আদেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে ২৩ মে বৃস্পতিবার প্রতিবেদন দেয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
প্রতিবেদনে ৫২ পণ্যের একটির প্যাকেটও জব্দ করার বিষয়টি না থাকায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত অবমাননার রুল জারি করে তাকে তলব করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। ভোক্তা অধিকারের পক্ষে ছিলেন কামরুজ্জামান কচি, প্রাণ অ্যাগ্রোর পক্ষে ছিলেন এম কে রহমান, এসিআইর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সান চিপসের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম, বাঘাবাড়ী ঘির পক্ষে মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী ও বিএসটিআইয়ের পক্ষে ছিলেন সরকার এম আর হাসান।
গত ৮ মে ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজুমার্স সোসাইটির (সিসিএস) নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান রিট করেন। তার আগে গত ৬ মে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ১২ মে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
বিএসটিআই-এর বরাত দিয়ে ৩ ও ৪ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্য তুলে ধরে নোটিশে বলা হয়েছে, বিএসটিআই সম্প্রতি ২৭ ধরনের ৪০৬টি খাদ্য পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। যেখানে ৫২টি পণ্য নিম্নমানের ও ভেজাল বলে জানায়।


বিজ্ঞাপন
👁️ 13 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *