সিআইডির অভিযানে অবৈধ হুন্ডি ব্যবসার সাথে জড়িত মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এর ২ জন এজেন্ট গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত


নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচারের অন্যতম বড় মাধ্যম হচ্ছে হুন্ডি। আর বর্তমানে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (মোবাইল ব্যাংকিং) এর মাধ্যমে দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার আরও সহজতর হয়েছে। অবৈধ সুযোগ- সন্ধানী কিছু মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট দেশে-বিদেশে অবস্থানরত অর্থ পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সহায়তায় বিদেশে অর্থ পাচার করছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের উপার্জিত অর্থ যখন রেমিটেন্স আকারে দেশে আসে, তখন বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরো সুদৃঢ় হয়।

কিন্তু হুন্ডি ব্যবসায়ীদের বিদেশে অবস্থানরত এই চক্রটি প্রবাসীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দেশে না পাঠিয়ে নিজেদের কাছে রেখে দেয় এবং এ দেশে অবস্থানরত অবৈধ অর্থ পাচারকারীরা এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বিদেশে অর্থ পাচার করছে। এই অবৈধ বিদেশে অর্থ পাচারকারী মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টদের বিরুদ্ধে সিআইডি অনুসন্ধান শুরু করে।

অনুসন্ধান ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানার আদর্শ টেলিকম, বাবর টেলিকম, নিউ শাড়ি গ্যালারি এন্ড কসমেটিক্স ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের আড়ালে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টরা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচারের সাথে জড়িত। তাদের লেনদেন বিবরণী বিশ্লেষণ করে জানা যায়, এসব প্রতিষ্ঠান বিগত ৩ বছরে বিকাশের মাধ্যমে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।

সিআইডি প্রধান এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধভাবে বিদেশে অর্থ পাচারের সাথে জড়িত মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এজেন্টদের বিরুদ্ধে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার এর একটি চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে।

বুধবার ১৯ এপ্রিল ভোর রাতে নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানাধীন দক্ষিণ রেজ্জাকপুর থেকে শাহাদাৎ হোসেন (২৩), পিতা- বেলাল হোসেন, মাতা- আয়েশা বেগম, সাং- গ্রাম- দক্ষিণ রেজ্জাকপুর, পোস্ট- নারায়ন পুর, থানা- চাটখিল, জেলা- নোয়াখালী এবং বলাই চন্দ্র দাস (২৬), পিতাঃ অর্জুন চন্দ্র দাস, মাতাঃ লিলু রানী দাস, সাং- গ্রাম- দক্ষিণ রেজ্জাকপুর, পোস্ট- নারায়ন পুর, থানা- চাটখিল, জেলা- নোয়াখালী কে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহাদাৎ হোসেন জানায়, শাহাদাৎ হোসেন এর আপন চাচা কাতার প্রবাসী মনোয়ার, সৌদি প্রবাসী মিজান, হংকং প্রবাসী মমিনসহ বেশ কিছু প্রবাসী বিদেশ হতে রেমিটেন্স সংগ্রহ করে উক্ত টাকা বাংলাদেশে প্রেরণ না করে নিজেদের কাছে জমা রাখে এবং হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমো এর মাধ্যমে শাহাদাৎকে বিকাশে ক্যাশ-ইন করার জন্য নাম্বার প্রেরণ করে।
বিদেশ হতে হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইমোতে নির্দেশনা পাওয়ার পর বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শাহাদাৎ এর বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা প্রদান করে। শাহাদাৎ হোসেন ব্যাংকে জমা হওয়া টাকা উত্তোলন করে বিকাশ হতে এজেন্ট নাম্বারের ই-মানি সংগ্রহ করে।

শাহাদাৎ এবং বলাই বিদেশে থাকা ব্যক্তিদের নির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থানরত প্রবাসীদের আত্মীয়দের বিকাশ নাম্বারে উক্ত টাকা পেরণ করে। এভাবে একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশে রেমিটেন্স না এনে বিদেশে অর্থ পাচার করছে।

গ্রেফতারকালে আসামীদের কাছ থেকে অর্থ পাচারের কাজে ব্যবহৃত এজেন্ট সীম, ১টি ল্যাপটপ, ৭ টি মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ, চেক বই, ব্যাংকের এটিএম কার্ডসহ নগদ ১৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিএমপির পল্টন থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন
👁️ 9 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *