ভবদহ অঞ্চলে শেওলা ও কচুরিপানা কাটা যন্ত্র আবিষ্কার করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন প্রদীপ বিশ্বাস

Uncategorized খুলনা গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

সুমন হোসেন, (যশোর)  :  যশোরের মনিরামপুর উপজেলার প্রদীপ বিশ্বাস দেশে প্রথম শেওলা ও কচুরিপানা কাটা যন্ত্র আবিষ্কার করে এলাকায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন। যে যন্ত্র ১০০ জন শ্রমিকের ১ মাসের কাজ করতে পারে মাত্র ১ দিনেই।


বিজ্ঞাপন

ইতি মধ্য নেট দুনিয়াই ভাইরাল তার শেওলা কাটা যন্ত্র সাড়া পড়েছে দেশ জুড়ে। শেওলা (কচুরিপনা) কেটে দুই দিকে ফেলছে নৌকা। ফাঁকা হয়ে যাওয়া কচুরিপনার ভিতর দিয়ে দূরন্ত গতিতে ছুটে চলছে ডিঙ্গি নৌকাটি। এই ডিঙ্গি নৌকার ওপর বিশেষ কায়দায় ইঞ্জিনসহ অন্যান্য উপকরণ বসিয়ে শেওলা কাটা (কচুরিপনা) মেশিন আবিষ্কার করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে তার তৈরীকৃত মেশিন গোপালগঞ্জ পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) কিনে নিয়ে গেছে একটি। এছাড়া দেশের নানা প্রান্ত হতে প্রতি মুহূর্তে মোবাইলে যোগাযোগ করে মেশিন ভাড়া, ক্রয় ও তৈরির অর্ডার পাচ্ছেন তিনি।


বিজ্ঞাপন

প্রদীপ বিশ্বাস যশোরের মনিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা কুচলিয়া গ্রামের মৃত. প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাসের ৪ ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে। তার পিতা ছিলেন অভয়নগর উপজেলার একটি জুট মিলের নামকরা মেকানিক।


বিজ্ঞাপন

বাবার হাত ধরেই এ পথে আসা প্রদীপ বিশ্বাসের। সুন্দলী বাজারে কুচলিয়া অংশে রয়েছে প্রদীপ বিশ্বাসের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এর দোকান। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালিন বাবা প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাসের হাত ধরে এই মোটর মেকানিক লাইনে এসেছেন তিনি। তখন থেকেই এই পেশায় তার ধীরে ধীরে দক্ষতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

যশোর সদর হতে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে সুন্দলী বাজারে গেলে দেখা যায় প্রদীপ বিশ্বাস নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘কুচলিয়া পিকেবি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্ক’-এ এক মনে কাজ করছেন তিনি।

শেওলাকাটা তার এই নৌকার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ভবদহ জলাবদ্ধ অঞ্চলের মানুষ। বছরের ৯ মাস পানির নিচে থাকি ফলে প্রচন্ড রকম শেওলাতে ভর্তী থাকে আমাদের জলাশয় গুলো।

ভবদহে জলাবদ্ধতার প্রভাবে এ অঞলের নদী-খালগুলোতে পলি জমায় নাব্যতা হারিয়ে ফেলায় খাল-বিল ও নদীতে প্রচুর শেওলা জন্মেছে। যা সারা বছরই থাকে। এতে করে খাল-বিল ও নদীতে মানুষের যাওয়া-আসা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। মূলত এই শেওলা থেকে পরিত্রানের উপায় বের করার চিন্তার মধ্যে দিয়ে আমার এ মেশিন আবিষ্কারে নেমে পড়া সম্ভব হয়েছে।

দুই বছর আগে ২২ হর্স-পাওয়ারের ইঞ্জিন, এঙ্গেল, পাত, কাঠ, চেইন, পেনিয়াম, গিয়ারবক্স, প্লেনসিড ও ১৯টি বিচালি কাটা ছুরি দিয়ে মেশিন বানালেও ঘন শেওলা কাটতে গেলেই মেশিন বন্ধ হয়ে যেত। এরপর ডিঙ্গি নৌকা চালাতে ১১ হর্সপাওয়ার ও শেওলা কাটতে ২২ হর্সপাওয়ারের পৃথক দুইটি ইঞ্জিনহ ৯টি ছুরি পাতের মধ্যে বিশেষ কায়দায় সেট করে মেশিনটি বানানো হয়। প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যায় সাপেক্ষে মাস খানেক কাজ করে তৈরিকৃত মেশিন শেওলা কাটার উপযোগী হয়। কেটে ফেলা কুচি কুচি শেওলা দিয়ে জৈব সার তৈরী সম্ভব বলে তিনি জানান।

প্রদীপ বিশ্বাসের ছেলে জনতা ব্যাংকে কর্মরত রনজীত বিশ্বাস জানান, সরকারি-বেসরকারি পর্যায় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ ধরনের উন্নত মানের মেশিন আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি করা সম্ভব হবে। এমন আবিষ্কার দেশের বুকে এই প্রথম। তাই চাইবো রাষ্টীয় ভাবে এমন যন্ত্র আমিষ্কারে সরকারকে সহযোগীতা করবার জন্য।

👁️ 62 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *