বিসিকে শ্রমিক লীগের মুজিব সেনারা এখন জিয়া পরিষদের নেতা !

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

বিশেষ প্রতিবেদক :  আমরা সবাই মুজিব সেনা, ভয় করিনা বুলেট বোমা শ্লোগান দেয়া সেই শ্রমিকলীগের লোকজন হয়ে গেছেন জিয়া পরিষদ বিসিক শাখার জিয়ার সৈনিক। এমনই ঘটনা ঘটেছে জিয়া পরিষদের ভারপ্রাপ্তচেয়ারম্যান এবং মহাসচিব অনুমোদিত জিয়া পরিষদ বিসিক প্রাতিষ্ঠানিক শাখার ৯(নয়) সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদনের মাধ্যমে। যাচাই-বাছাই বিহীন এবং অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে কমিটি বাণিজ্যের জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে থাকবে জিয়া পরিষদের ভারপ্রাপ্তচেয়ারম্যান এবং মহাসচিব অনুমোদিত জিয়া পরিষদ বিসিক প্রাতিষ্ঠানিক শাখা।


বিজ্ঞাপন

দেশের সচেতন প্রতিটি মানুষ ধারণ করেন জিয়া পরিষদ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র এলিট সোসাইটির সদস্যদের সমন্বয়ে উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গের অংশ গ্রহনের মাধ্যমে গঠিত একটি সমর্থক গোষ্ঠি। এটি বিএনপি নামক বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দলটির কোন অংগ সংগঠন নয়, সহযোগী সংগঠনও নয়। জিয়া পরিষদ দেশের স্বনামধন্যগুনী জ্ঞানী, বুদ্ধিজীবি এবং শিক্ষিত সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অংশগ্রহণে গঠিত একটি ফোরাম।

এ ফোরামটির মান মর্যাদা রক্ষা করার দায়িত্বফোরামের নের্তৃত্বে থাকা ব্যক্তিদের। বিপত্তি দেখা দিয়েছে জিয়া পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের মাধ্যমে কতিপয় মুজিব সেনা শ্রমিক লীগারকে আহবায়ক ও সদস্য-সচিবসহ অন্যান্য পদ পদবীতে মনোনীত করে আহবায়ক কমিটির অনুমোদন প্রদানের কারণে।
পত্রিকা কর্তৃপক্ষের হাতে থাকা তথ্য মতে জিয়া পরিষদ বিসিক শাখার আহবায়ক, সদস্য-সচিব এবং সদস্যগণ শ্রমিক লীগার ছিলেন, যার দালিলিক প্রমাণ বহন করে তাদের সম্পাদিত কর্মকান্ডে।


বিজ্ঞাপন

বিসিক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন, সিবিএ, রেজিঃ নং-বি-১৮১৩ এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন ২০২২ এর নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে মোঃ আব্দুল হালিম, অর্থ সম্পাদক পদে মোঃ বাবুল হোসেন, প্রচার ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জান্নাতুল নাইম, দপ্তর সম্পাদক পদে মোঃ শরীফ রানা এবং সদস্য পদে (পরবর্তীতে যুগ্ম-সম্পাদক) মোঃ ছাইদুর রহমান ভুইয়া নির্বাচিত হয়েছিলেন। নির্বাচিত নের্তৃবৃন্দ এর অভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছিল ২৫মে ২০২২ তারিখে। বিসিক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ এর নব নির্বাচিত পরিষদের অভিষেক ২০২২ উপলক্ষ্যে প্রকাশিত স্মরণিকার প্রচ্ছদে উল্লেখ করা আছে বিসিক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন, রেজিঃনং-বি-১৮১৩, জাতীয় শ্রমিক লীগ অন্তর্ভুক্ত। স্মরণিকার ১৯ পৃষ্ঠায় এবং ২০ পৃষ্ঠায় কার্যকরি পরিষদ পরিচিতিতে ছবি সম্বলিত পদের উল্লেখ আছে।


বিজ্ঞাপন

সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে সংগঠনের সর্বোচ্চ ফোরাম সাধারণ সভার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে মোঃ আব্দুল হালিমকে সাধারণ সম্পাদকের পদ হতে, মোঃ শরীফ রানাকে দপ্তর সম্পাদের পদ হতে, জান্নাতুল নাইমকে প্রচার ও সাংগঠনিক সম্পাদের পদ হতে এবং মোঃ ছাইদুর রহমান ভুইয়াকে যুগ্ম-সম্পাদকের পদ হতে চূড়ান্তভাবে তাদের সাধারণ সদস্য পদ চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হয়। মোঃ বাবুল হোসেনসহ বেশ কয়েক জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারী করা হয়েছে তাদের সাধারণ সদস্য পদ বাতিল হওয়ার অপেক্ষায় আছে।

মুজিব সেনা হিসাবে মোঃ আব্দুল হালিম সভাপতি পদবী উল্লেখ করে এবং জান্নাতুল নাইম সাধারণ সম্পাদক পদবী উল্লেখ করে বিসিক কর্মচারী লীগ নামে একটি সংগঠনের রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্তির জন্য ২৪ জুন ২০২৪ তারিখে শ্রম অধিদপ্তরের ট্রেড ইউনিয়ন শাখায় আবেদন দাখিল করেছিলেন। মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেছেন মর্মে বিসিকের দুইজন কর্মচারী শ্রম অধিদপ্তরে ১৮ জুলাই ২০২৪ তারিখে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।

মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশনের জন্য আবেদন করেছেন এবং অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার কারণে শ্রম অধিদপ্তর তাদের স্মারক নং-৪০.০২.০০০০.০৩৮.৪৮.০০৯. ২৪.২৭১ এর মাধ্যমে বিসিক কর্মচারী লীগ নামক সংগঠনটিকে সিবিএ হিসাবে রেজিষ্ট্রেশন আবেদন প্রত্যাখান করে ১৫ আগষ্ট ২০২৪ তারিখে একটি পত্র জারী করে।

৫ আগষ্ট ২০২৪ তারিখে পট পরিবর্তনের পরে বিসিক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যেস্বৈরাচারের দোসর এবং সমর্থকদেরকে বাদ দিয়ে বিসিকে কর্মরত সংখ্যা গরিষ্ঠ কর্মচারীদের মতামত নিয়ে ২৪ আগষ্ট ২০২৪ তারিখে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একট আহবায়ক কমিটি গঠণ করা হয়। যে কমিটিতে জাতীয় শ্রমিক লীগের বা স্বৈরাচারী সরকারের সমর্থক কোন ব্যক্তিকে রাখা হয়নি।

বিসিক কর্মচারী লীগ এর রেজিষ্ট্রেশন না পেয়ে এবং বিসিক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের আহবায়ক কমিটিতে জায়গা করতে না পেরে মোঃ আব্দুল হালিম, জান্নাতুল নাইম, মোঃ বাবুল হোসেন, মোঃ শরীফ রানা, মোঃ ছাইদুর রহমান ভুইয়া তাদের মতাদর্শে বিশ্বাসী আরো কয়েকজনকে নিয়ে বিসিক কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ (প্রস্তাবিত) নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশের অপচেষ্টা করে এবং বিসিক কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করে ০২ জুলাই ২০২৫ তারিখে একটি পত্রপ্রেরণের মাধ্যমে। বিসিক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন বিষয়টি অবগত হয়ে বিসিক চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত পত্রপ্রেরণ করে, যার কারণে এবারও তাদের অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

মুজিব সেনা মোঃ আব্দুল হালিম, জান্নাতুল নাইম, মোঃ বাবুল হোসেন, মোঃ শরীফ রানা, মোঃ ছাইদুর রহমান ভুইয়া এবং তাদের সহযোগীগণ কোনভাবেই সুবিধা করতে না পেরে সর্বশেষ জিয়া পরিষদ এর নের্তৃবৃন্দের স্মরণাপন্ন হন এবং জিয়া পরিষদ বিসিক শাখার প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে আহবায়ক কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করেন। প্রশ্নবিদ্ধ বিষয় হচ্ছে জিয়া পরিষদের ভারপ্রাপ্তচেয়ারম্যান এবং মহাসচিব কোন বিবেচনায় বিসিকের ৪র্থশ্রেনীর একজন কর্মচারী যার শিক্ষাগত যোগ্যতা ৮ম শ্রেনী মোঃ বাবুল হোসেনকে আহবায়ক এবং বিসিকের ৩য় শ্রেনীর কর্মচারী জান্নাতুল নাইমকে সদস্য-সচিব করে বেশ কয়েকজন ৪র্থশ্রেনীর কর্মচারীকে বিভিন্ন পদে মনোনীত করে আহবায়ক কমিটির অনুমোদন প্রদান করেছেন? দেশের অন্যকোন সরকারী দপ্তরে ৩য় ও ৪র্থশ্রেনীর কর্মচারীদেরকে আহবায়ক ও সদস্য সচিব করে জিয়া পরিষদের কোন কমিটির অস্তিত্ব বিদ্যমান আছে কিনা-তা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে কিনা? ৩য় ও ৪র্থশ্রেনীর কর্মচারীগণ বিদ্যমান নিয়ম নীতি অনুসরণ করে ট্রেড ইউনিয়ন সদস্য পদ লাভ করে ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকার বিধান আছে। ৩য় ও ৪র্থশ্রেনীর কর্মচারীদের নিয়ে গঠিত জিয়া পরিষদ এর কোন আহবায়ক কমিটি বা নিয়মিত কমিটি ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ আছে কিনা?

জিয়া পরিষদের ভারপ্রাপ্তচেয়ারম্যান এবং মহাসচিব এর অনুমোদিত জিয়া পরিষদ বিসিক শাখার গঠণ প্রক্রিয়া জানতে পেরে জিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুরাদ কবীর এর ছেলে বিস্ময় প্রকাশ করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন যে, শেষমেশ কমিটি বাণিজ্যশুরু হয়ে গেছে জিয়া পরিষদ নামক সংগঠনটিতে। বিএনপির নীতিনির্ধারক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন যে, বিষয়টি যথাযথভাবে খতিয়ে দেখা একান্ত প্রয়োজন এবং জিয়া পরিষদের মান সম্মাণ ক্ষুন্ন করার কাজের সাথে জড়িতদের খুজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়াও একান্ত প্রয়োজন। একই ধরনের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে চলেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নের্তৃবৃন্দ এবং বিএনপি সমর্থক নেতা কর্মীরা।

মুজিব সেনাদেরকে জিয়ার সৈনিক হিসাবে পুনর্বাসনের দায়ভার একান্তই জিয়া পরিষদের ভারপ্রাপ্তচেয়ারম্যান এবং মহা-সচিবের। এ সকল মুজিব সেনা জিয়া পরিষদের সদস্য পদ লাভের যোগ্যতা আছে কিনা-জিয়া পরিষদে তাদের অন্তর্ভুক্তির পূর্বে তাদের অতীত কর্মকান্ড, পূর্ব রাজনৈতিক পরিচয় জানা এবং সে অনুযায়ী কার্যক্রম করার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন ছিল। জিয়া পরিষদ নামক সংগঠনটির আদর্শ ও উদ্দ্যেশ্যের সাথে সাংঘর্ষিক কর্মকান্ড পরিচালনা হতে বিরত থাকা, স্বজনপ্রীতি/এলাকাপ্রীতি এবং কমিটি বাণিজ্য হতে বিরত থেকে সংগঠনের মান সম্মাণ রক্ষায় কার্যকরি ভূমিকা রাখার বিষয়ে দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে সংগঠনের উত্তরোত্তর সুনাম বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহনের দিকে সংশ্লিষ্ট সকলে দৃষ্টি নিবদ্ধ করবেন-এ প্রত্যাশাই করে বিএনপি সমর্থক সচেতন মহল।

👁️ 20 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *