আবারো আল জাজিরার অপপ্রচার

আন্তর্জাতিক এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন

বিশেষ প্রতিবেদক : আবারও বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারে নেমেছে কাতারভিত্তিক মিডিয়া নেটওয়ার্ক আলজাজিরা। ভাসানচরে প্রত্যাবাসন করা রোহিঙ্গাদের নিয়ে সম্প্রতি একটি নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রচার করে চ্যানেলটি। তবে বাস্তব চিত্র হলো, কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গারা সেখানে আগের তুলনায় অনেক ভালো পরিবেশে রয়েছেন। ভাসানচরে প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে দেশি-বিদেশি অনেক গণমাধ্যমে সেখানকার সঠিক তথ্য তুলে ধরা হলেও আলজাজিরা তাদের প্রতিবেদনে অনেক তথ্য গোপন করেছে।
শুধু প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গারাই নয়, জাতিসংঘের টেকনিক্যাল টিম এবং ১০টি দেশের কূটনৈতিক দলও ভাসানচর পরিদর্শন করে তাদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে। ঠিক সেই মুহূর্তে আলজাজিরার ভাসানচর নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার নতুন ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করছেন অনেকে। এর আগেও বিভিন্ন সময় ভুয়া তথ্য দিয়ে উস্কানিমূলক সংবাদ প্রচার করে সমালোচনার মুখে পড়েছে চ্যানেলটি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্নেষক এয়ার কমডোর (অব.) ইশফাক এলাহী চৌধুরী বলেন, ভাসানচর নিয়ে আলজাজিরা যা প্রচার করেছে, এটা স্রেফ অপসাংবাদিকতা। এর আগেও নানা ইস্যুতে ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রচার করে তারা বিতর্ক তৈরি করে। হলুদ সাংবাদিকতার কারণে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ চ্যানেলটি প্রত্যাখ্যান করেছে। পশ্চিমা মিডিয়ার বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দাঁড়াতে গিয়ে তারা অনেক ক্ষেত্রেই নৈতিক মানদ- বজায় রাখছে না।
ইশফাক এলাহী বলেন, ভাসানচরে যেসব রোহিঙ্গাকে নেওয়া হয়েছে, তারা আগের তুলনায় সব দিক থেকে ভালো রয়েছেন। বাংলাদেশ যেভাবে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসস্থল তৈরি করেছে, তা এক অনন্য উদাহরণ। অনেক পরিচ্ছন্ন পরিবেশে তাদের রাখা হয়েছে। বিশ্বের বহু দেশে শরণার্থী শিবিরের করুণ দশা। আলজাজিরা ভাসানচর নিয়ে যে মিথ্যাচার করেছে, এটা শেষ পর্যন্ত কেউ বিশ্বাস করবে না। কারণ সবাই দেখেছেন, সেখানে রোহিঙ্গারা কেমন পরিবেশে জীবনযাপন করছে।
অভিযোগ আছে, ২০০৯ সালের পর থেকেই বাংলাদেশের নানা ঘটনা নিয়ে অপপ্রচার করে চলেছে আলজাজিরা। ওই বছর তিন ব্যক্তির গুম হওয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের একজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা ও সামরিক কর্মকর্তার যোগসাজশ নিয়ে বিতর্কিত প্রতিবেদন করে তারা। এতে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের পক্ষেও প্রচার চালায় চ্যানেলটি। মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মো. কামারুজ্জামানের মৃত্যুদ-ের চূড়ান্ত রায়ের পর ‘বাংলাদেশ পার্টি চিফ টু হ্যাং ফর ওয়ার ক্রাইমস’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে ৩০ লাখ মানুষের শহীদ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ব্যঙ্গ করে বলা হয়, ইতিহাসবিদদের হিসাবে মুক্তিযুদ্ধে তিন থেকে পাঁচ লাখ মানুষ মারা গেছে।
ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আলজাজিরা নিউজ চ্যানেলের প্রচারিত প্রতিবেদনটি মিথ্যা ও মানহানিকর। এটি বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তিকর, যা উগ্রবাদী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কুখ্যাত ব্যক্তিদের যোগসাজশে রাজনৈতিক মদদপুষ্ট অপপ্রচার বলে স্পষ্ট। বাংলাদেশের প্রগতিশীল এবং ধর্মনিরপেক্ষ নীতির বিরোধিতা করছে চ্যানেলটি।


বিজ্ঞাপন