গর্ভধারিনী মা যেখানে নবজাতকের হত্যাকারী

অপরাধ

পিবিআই তদন্তে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য


বিজ্ঞাপন

বিশেষ প্রতিবেদক : গত ১৯ এপ্রিল ২০২০ সালে রাত অনুমান ১২ টার সময় নারায়নগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন ১নং মাধবপাশা (কান্দিপাড়া) সাকিনস্থ বাদী মোঃ রুবেল (ভিকটিমের বাবা) এর শ্বশুর জবেদ আলীর বসত বাড়ী হতে ভিকটিম ইমাম হোসেন হারিয়ে যায়।

তখন ভিকটিমের মা মোসাঃ খাদিজা আক্তার পিংকি চিৎকার দিলে বাড়ীর লোকজন আসে। তখন জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় সে এবং তার ছেলে ইমাম হোসেন ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় কে বা কাহারা তার ছেলেকে চুরি করে নিয়ে যায়।

পরে গত ২১ এপ্রিল ২০২০ সকাল ৭ টার সময় খাদিজা আক্তার পিংকির বসত বাড়ীর পাশে পুকুর হতে তার ছেলেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

উক্ত বিষয়ে ভিকটিমের পিতা মোঃ রুবেল এজাহার দায়ের করলে বন্দর থানার মামলা নং-০৭, তাং-২১/০৪/২০২০খ্রিঃ ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়।

সূত্রে উল্লেখিত মামলাটি রুজুর পর বন্দর থানা পুলিশ মামলা তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় এক পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের আবেদন এর প্রেক্ষিতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলা মামলাটির তদন্তভার গ্রহন করে।

ডিআইজি পিবিআই বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম(বার), পিপিএম এর সঠিক তত্বাবোধানে ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই নারায়ণগঞ্জ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম পিপিএম, সার্বিক সহযোগীতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সাইফুল আলম মামলাটির তদন্তভার গ্রহন করে।

গত ৩০ জুলাই ২০২০ হতে মামলাটির ব্যপক তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

নিবিড় তদন্তকালে ঘটনাস্থল হতে সাত শব্দের একটি ছোট কাগজের টুকরা আলামত হিসেবে জব্দ করেন।

জব্দকৃত কাগজে লেখা থাকে “বাচা গড়ে গড়ে চুরি করমু সাবথাব” উক্ত কাগজের হস্তলেখার বিষয়ে ঘটনাস্থল আসামীর বসতবাড়ী সহ আসপাশের লোকজনের নমুনা লেখা সংগ্রহ করে পর্যালোচনার এক পর্যায়ে ভিকটিমের মা খাদিজা আক্তার পিংকির হাতের লেখার সাথে জব্দ লেখার মিল থাকায় খাদিজা আক্তার পিংকির হাতের লেখা আদালতের মাধ্যমে সংগ্রহ করে নমুনা হস্তলেখা বিশেষজ্ঞ দ্বারা তুলনা মূলক পরীক্ষা করে জব্দ লেখা ভিকটিমের মা খাদিজা আক্তার পিংকির লেখার সাথে মিল পায়।

হাতের লেখার মিল পাওয়ার প্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার ৫ সেপ্টেম্বর খাদিজা আক্তার পিংকিকে পিবিআই নারায়ণগঞ্জ অফিসে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় তার স্বামী তাকে বার বার টাকার জন্য চাপ দিত।

তার স¦ামী(বাদী) চাইত তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার পিংকি তাকে কামাই করে খাওয়াবে। সে বাবার বাড়ীতে আসার পর তার স¦ামী(বাদী) তার কোন ভরন পোষন দিত না। এটা নিয়ে তার পরিবারের লোকজন তকে উপহাস করত।

তাই সে চাপ সহ্য করতে না পেরে গত ১৯ এপ্রিল ২০২০সালের দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার সময় তার ঘুমন্ত ছেলে ভিকটিম ইমাম হোসেন (২মাস) কে কোলে নিয়ে ঘরের পাশের পুকুরে ফেলে দেয়।

উল্লেখিত বিষয়ে গতকাল রবিবার ৫ সেপ্টেম্বর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুন্নাহার ইয়াসমিন এর আদালতে নিজ দোষ স্বীকার করে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।