অবশেষে উদ্ধার করা হলো বিপিএলের ড্রোন

খেলাধুলা

বিশেষ প্রতিবেদক : একটি ড্রোন হারানো গিয়েছে, কেউ যদি পেয়ে স্টেডিয়ামের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দিতে পারেন তবে ১০ হাজার টাকা পুরষ্কার দেয়া হবে, মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এমন এক ঘোষণায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল স্টেডিয়ামের আশেপাশে। অনেকেই খোঁজাখুঁজিও শুরু করে দেয় ড্রোনটি। ঘোষণাটি আসে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে, আদৌ এই পুরষ্কার দেয়া হবে কি না সে সম্পর্কে তাদের নিশ্চিত কোন ধারণা ছিল কি না সে ব্যাপারে অবশ্য সন্দেহের যথেষ্টই অবকাশ রয়ে গিয়েছিল সেসময়।
পরবর্তীতে সম্প্রচার ও ড্রোনের দায়িত্বে থাকা রিয়েল ইমপ্যাক্ট প্রোডাকশন টিম এই পুরষ্কারের দায়িত্ব নেয়। এই ড্রোন বা রিমোট কন্ট্রোলচালিত কোয়াডকপ্টারটি মূলত অনেক উপর থেকে খেলার মাঠের ভিডিও ধারণের জন্য ব্যবহার করছিল সম্প্রচারকারকরা।
এদিন চট্টগ্রামের স্টেডিয়ামে চলছিল খুলনা টাইগার্স ও রাজশাহী রয়্যালসের মধ্যে একটি ম্যাচ। হঠাৎ করেই ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং সেটা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ভূপাতিত হয়। ক্রিস ফিকরেট এই ড্রোনটি রিমোট কন্ট্রোলের দায়িত্বে ছিলেন।
কানাডা থেকে আসা এই ড্রোন অপারেটর বলেন, আসলে ড্রোনটির ব্যাটারি ফুরিয়ে গিয়েছিল। এখন বিকল্প একটি ড্রোন ব্যবহার করছি আমরা। আমাদের ড্রোন নিয়ে চিন্তা নেই। আরো ড্রোন আছে।
পরবর্তীতে আজ ড্রোনটি পাওয়া গিয়েছে স্টেডিয়ামের গন্ডির ভেতরেই। পূর্বদিকের ফ্লাড লাইটে এটি খুঁজে পাওয়া যায়। মি. ফিকরেট অবশ্য বলেন, এই ড্রোনটি রেজিস্ট্রার করা, তাই কেউ পুনরায় ব্যবহার করতে চাইলেও সেটা অসম্ভব। অন হওয়া মাত্রই আমাদের রেডিও ডিভাইসে এটা সিগনাল পাঠাবে।
এর আগে স্টেডিয়াম সংলগ্ন সাগরিকা এলাকার একটি টেনিস কোর্টে পরে অবশ্য ড্রোনটির ব্যাটারিটি পাওয়া যায়।
ড্রোন পাওয়ার আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগের একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ড্রোন হারানোর পর অনেক ফোন পেয়েছি। এটা নিয়ে এতো মাতামাতির কিছু নেই। ব্যাটারি শেষ হয়েছে ড্রোন পড়ে গেছে, পাওয়া যাবে আশা করি। তবে এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
ক্রিস ফিকরেট জানান, ড্রোনটির মূল্য ৫০০০ কানাডিয়ান ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ৩ লাখ ২৩ হাজার টাকার মতো। পুরো ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করেছেন একজন টেলিভিশন সাংবাদিক পার্থ বনিক।
তিনি বলেন, ড্রোনটির রেঞ্জ দুই কিলোমিটার, এটা উড়তে উড়তে আউটার স্টেডিয়ামে চলে যায়। সেখানে ফ্লাডলাইডের যে পিলার সেখানে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। পাইলট প্রথমে বলেছে পাখির সাথে ধাক্কা লেগেছে, এরপরে বলেছে আবার ব্যাটারি শেষ হয়ে গিয়েছে।
পার্থ যোগ করেন, এই ক্ষেত্রে ড্রোন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সম্প্রচারের সাথে যারা জড়িত তাদের যোগাযোগের একটা দূরত্ব ছিল। কেউই জানতো না শুরুতে ঘটনা কী হয়েছে।
বিপিএলের সম্প্রচার মান ও খেলা নিয়ে নানা ধরণের হাস্যরস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়। মঙ্গলবার রাত থেকেই ড্রোন হারানোর ঘটনা চাউর হবার পর অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটা নিয়ে লিখছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে তাৎক্ষণিক পুরষ্কারের ঘোষণা ও ড্রোন হারানোর ঘটনা একইসঙ্গে হাস্যরস ও উদ্বেগ সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সম্প্রচার নিয়ে নানা সমালোচনা ও এর মান নিয়ে প্রশ্ন থাকায় এই ঘটনা বেশ সাড়া ফেলেছে ক্রিকেট অনুসারীদের মধ্যে।


বিজ্ঞাপন
👁️ 7 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *