
চট্টগ্রামভিত্তিক আরেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান।

নিজস্ব প্রতিনিধি (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান সাদ মুসা গ্রুপকে ন্যাশনাল ব্যাংকের দেওয়া ৪৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় চট্টগ্রামভিত্তিক আরেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানসহ ২৯ জনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের পক্ষ থেকে গোপনে মামলাটি করা হলেও পরে সেটি জানাজানি হয়ে যায়।
জানা গেছে, গত সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক রাম প্রসাদ মন্ডল। মামলাটির কথা কঠোরভাবে গোপন রাখা হয়। কিন্তু বুধবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে মামলাটির বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়।

ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক পরিচালকদের মধ্যে মামলায় আসামি করা হয়েছে সিকদার গ্রুপের চার পরিচালক রন হক সিকদার, তার ভাই রিক হক সিকদার, মা মনোয়ারা সিকদার ও বোন সাবেক সংসদ সদস্য পারভীন হক সিকদার এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএফএম শরীফুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক জাকারিয়া তাহের, মাবরুর হোসেন, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. নায়েমুজ্জামান, বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, সাদ মুসা গ্রুপের স্বত্বাধিকারী ও সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ মোহসিন, ন্যাশনাল ব্যাংকের এসইভিপি ও ব্যবস্থাপক নিজাম আহমেদ, ইসতিয়াক হাসান, ব্যাংকটির এসএভিপি ও অপারেশনস ম্যানেজার এএসএম হেলাল উদ্দিন ও প্রিন্সিপাল অফিসার মো. আবু বক্কর রাসেল।
আসামিদের মধ্যে আরও রয়েছেন ন্যাশনাল ব্যাংকের এসএভিপি মোহাম্মদ মহসিন চৌধুরী, এভিপি মো. আখতার হোসেন, মো. আলমগীর হোসেন, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ নুরুন নবী, এসএভিপি হাছিনা সুলতানা, প্রিন্সিপাল অফিসার শেখ ফরিদ আহমেদ, ভিপি মোহাম্মদ আবু রাশেদ নোয়াব, ইভিপি অরুন কুমার হালদার, এসইভিপি ইফতেখার হোসেন চৌধুরী, ডিএমডি এএসএম বুলবুল, এএমডি মো. বদিউল আলম, চৌধুরী মোশতাক আহমেদ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৪৫৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতে জড়িত ছিলেন সাদ মুসা হোমটেক্স অ্যান্ড ক্লোদিং লিমিটেডের মালিক মোহাম্মদ মোহসিন ও ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এএফএম শরীফুল ইসলামসহ ২৯ জন। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামিরা ঋণের অর্থ অন্য কাজে ব্যবহার করেছেন। তাছাড়া সঠিকভাবে মনিটরিং না করে ও কাগুজে বিলের মাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ঋণ প্রস্তাব দ্রুত সময়ে অনুমোদন করা হয়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের আগ্রাবাদ শাখার গ্রাহক সাদ মুসা হোমটেক্স অ্যান্ড ক্লোদিং লিমিটেডের মালিক মোহাম্মদ মোহসিনসহ সংশ্লিষ্টরা ৪৫৯ কোটি ৫০ লক্ষ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এতে মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭২, ১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় অভিযোগ করা হয়।
