লাগামহীন দুর্নীতির কারণে কায়কোবাদের পদোন্নতি অনিশ্চিত : নিয়মিত অফিস না করে পদোন্নতির জন্য ধর্ণা দিচ্ছে মন্ত্রণালয়ে সাথে উপদেষ্টার মামা

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ধীন  গণপূর্ত অধিদপ্তরের ইএম সার্কেল-২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদের কারণে গণপূর্তের ৩টি ডিভিশনের টেণ্ডার প্রক্রিয়া আটকে গেছে। তাছাড়া তার পদোন্নতি বিষয়টি নিয়েও এখন মন্ত্রনালয় বিশেষ নজরে নিয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে অনেকটাই আটকে গেছে তার পদোন্নতির ফাইল!


বিজ্ঞাপন

কারণ স্বরূপ জানা গেছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার কায়কোবাদের পদোন্নতির সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ের ফাইল পাঠিয়েছেন, আবার অন্তবর্তীকালীন সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বেক্তি ইমেজ ধরে রাখার চেষ্টা করলেও তার মামা হদী উপদেষ্টার ইমেজ নষ্ট করছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদের সাথে গোপন সমোঝোতা করে।

অপরদিকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব নজরুল ইসলাম অত্যান্ত যোগ্য, সৎ, মেধাবী ও দূরদর্শিতা সম্পন্ন হওয়ায় তিনি কোন প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন না।
ফলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার এর চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি ও কায়কোবাদের পদোন্নতির বিষয় টা একপ্রকার সাংঘর্ষিক হয়ে দাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের নিরীহ কর্মকর্তারা।


বিজ্ঞাপন
গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে তার আনুগত্য প্রকাশ করার ছবি।

 

তাদের মতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব নজরুল ইসলাম একটু শক্ত অবস্থান নিলেই গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদের সকাল চেষ্টাই বিফলে যাবে।সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ধীন গণপূর্ত অধিদপ্তর অনেকটা অনিয়ম ও দুর্নীতি মুক্ত হবে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।


বিজ্ঞাপন

এদিকে তিনি অফিস না করে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হতে দিনভর তদ্বির করে বেড়াচ্ছেন। ফলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সচিবালয়, সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকা ও মুগদা মেডিকেলের জরুরি নির্মাণ ও সংস্কার কাজ আটকে গেছে বলে শোনা গেছে।

গণপূর্ত সার্কেল-৩ এর অধীনে দেশের প্রশাসনের প্রাণ সচিবালয়, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, আইসিটিসহ ছাড়াও ঢাকা মেডিকেল ও মুগদা মেডিকেলসহ জরুরি স্থাপনার কাজ আটকে আছে।

সাধারণত, কোন কাজের শুরুর মূল বিষয়টি হচ্ছে প্রাক্কলন পাস, টেন্ডার ও টেন্ডারের টেক অনুমোদন। এর মধ্যে প্রাক্কলন পাস ও টেক অনুমোদনের কাজ হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কাছে।

মো. কায়কোবাদ অফিস না করায় এর আওতাধীন ৩টি বিভাগের সব কাজ স্থবির হয়ে আছে। মো. কায়কোবাদের সার্কেলের অধীনে ইএম ডিভিশন-৪, ইএম ডিভিশন-৫ ও ইএম ডিভিশন-৬ কাজ করে। যা ঢাকা মহানগরীর অর্ধেক জায়গাকে কাভার করে। যার মধ্যে রয়েছে এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

 

সাবেক আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের সুবিধাভোগী মো. কায়কোবাদ পদোন্নতি পেতে গত দুই মাস ধরে নানা চেষ্টা ও তদ্বির করে আসছেন। যার ফলে তিনি অফিস করছেন না। এবং অফিসের কাজ ফেলে রাখছেন। এরই মধ্যে নতুন টেন্ডার সিস্টেম অনুমোদন হওয়ায় সবকিছুই এলোমেলো হয়ে গেছে।

মো. কায়কোবাদের দুর্নীতির টাকার জোর এতোই বেশি যে, যেখানে নিয়ম রয়েছে কোনো কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে হলে পদোন্নতিযোগ্য একাধিক কর্মকর্তার নাম প্রস্তাব আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়।

গণপূর্ত অধিদপ্তর সেই নিয়ম না মেনে কায়কোবাদকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দিতে শুধুমাত্র একটি নাম প্রস্তাব করেন। অথচ তাদের ব্যাচের অপর কর্মকর্তা ইএম সার্কেল-৩ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহাবুবুল হক চৌধুরীর নাম পাঠানো হয়নি।

গত বছরের ৫ আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন সংগ্রামের ফলে সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর বিএনপি সমর্থিত কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন মাহাবুবুল হক চৌধুরী। তাঁর নাম না পাঠানোর ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে রয়েছেন ফ্যাসিস্ট আমলে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া মো. শামীম আখতার।

এদিকে এতোদিনেও পদোন্নতি না হওয়ার পেছনে মো. কায়কোবাদ দায়ী করছেন মাহাবুবুল হক চৌধুরীকে। তার ধারনা এ সম্পর্কিত রিপোর্টগুলো তিনিই করাচ্ছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা তদ্বির করে তার পদোন্নতি আটকে রেখেছেন।

তাঁর পদোন্নতি আটকাতে পারলে বিএনপি সমর্থক হওয়ায় মাহাবুবুল হক চৌধুরী হবেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী। এ নিয়ে তাদের ব্যাচমেটদের মধ্যে চলছে অলিখিত দ্বন্ধ। একজন আরেকজনের মুখও দেখছেন না। কায়কোবাদ আবার মনে করেন ইএম জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল হকেরও এ ব্যাপাারে ইন্দন থাকতে পারে।

কারন, মাহাবুবুল হক চৌধুরী ও মো. আশরাফুল হক একই এলাকার বাসিন্দা এবং বুয়েটে এক সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন। মো. কায়কোবাদ একসময়কার চুয়েটের সাবেক ছাত্র এবং সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী চক্রের সদস্য হওয়ার কারণে তারা জোট বেধে মো. কায়কোবাদকে ঠেকাতে চাচ্ছেন।

এদিকে অভিযোগ উঠেছ বিভিন্ন গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশ বন্ধ করতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের গৃহপালিত দালাল, সাংবাদিক কাম ঠিকাদাররা এ সব বিষয় বলে বেড়াচ্ছেন নানা জায়গায়।

এমন কি বিভিন্ন গণমাধ্যমে কায়কোবাদসহ গণপূর্তের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি’র সংবাদ প্রকাশ হলেই ও-ই সব গৃহপালিত দালাল, সাংবাদিক কাম ঠিকাদাররা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সকল অপকর্ম ধামাচাপা দিতে তাদের নিজস্ব ভুঁইফোড় বগল দাবা সাপ্তাহিক (মাঝে মাঝে বের করে বগল দাবা করে বিভিন্ন সরকারি অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের টেবিলে দিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেন) তৃী-মাসিক দৈনিক পত্রিকায় শুরু করে কর্মকর্তাদের গুনগান,দালালি মোসাহেবি এবং প্রতিবাদের নামে করে অপ্রাসঙ্গিক যতোসব  মুর্খতা।

এই বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানিয়েছেন, কোন ব্যক্তির বিষয়ে যখন কোন দুর্নীতির প্রসঙ্গ আসে তখন সেই সময়ে উচিৎ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের তা তদন্ত করা। আর পদোন্নতি তো অনেক পরের বিষয়। তাছাড়া দুর্নীতি বিষয় দুদকের উচিৎ তার (প্রকৌশলী) বিষয়টি নজর দেওয়া। যারা দেশের টাকা লুটপাট করে তাদের আইনের আওতায় আনা অতি জরুরি।

এসব বিষয়ে গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব অনেকটা জোরালো ভাবে দাবি করেছেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখন পদোন্নতি তো অনেক পরের বিষয়। মনে হয় না তিনি পদোন্নতি পাবেন।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদের বক্তব্য জানতে তাদের মোবাইলে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তারা তাদের মোবাইলে ফোন রিসিভ না করায় তাদের কোনো প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *