
নিজস্ব প্রতিনিধি (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রাম বন্দরে নানা রকম দুর্নীতি ও অনিয়মের দায়ে গত ২৯ এপ্রিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে পায়রা বন্দরে বদলী করা হয় চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলমকে । তার বিরুদ্ধে পাহাড়সম দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ থাকায় ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বদলী করেন। কিন্তু দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেট তার চট্টগ্রাম বন্দরে থেকে গেছে।
তিনি তার মামাতো ভাই সিনিয়র একাউন্টস অফিসার মো: হেলালের মাধ্যমে সিন্ডিকেট কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।এই হেলালকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ২০১৭ সালে অবৈধভাবে একাউন্টস অফিসার পদে চাকরি দেন ক্যাপ্টেন ফরিদ। ক্যাপ্টেন ফরিদ বদলী হবার আগে সদস্য(অর্থ) পদে পদোন্নতি নেয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ও বন্দর চেয়ারম্যান কে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। আর তার সদস্য(অর্থ) পদে পদোন্নতির কথা বলে চট্টগ্রাম বন্দরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্টেকহোল্ডারদের শাসিয়ে বেড়াত মো: হেলাল।
কিন্তু হায় বিধিবাম নৌ-উপদেষ্টা ও বন্দর চেয়ারম্যানের বিচক্ষণ সিদ্ধান্তে তাদের এই প্ল্যান ভেস্তে যায়। এরপরে মো: হেলাল কিছুটা চুপচাপ থাকলেও গোপনে তার মামাতো ভাইয়ের সিন্ডিকেট কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। এখন সেটি আরও দৃঢ় হয়েছে। হেলাল সাহেব মোটা অংকের টাকা ছাড়া ফাইল ছাড়েন না। প্রতি ফাইলে ঠিকাদারদের গুণতে হয় মোটা অংকের টাকা। শুধু ঠিকাদার না, বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও তার হাত থেকে রেহায় পায় না।
এমনকি তার এই বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্যের শিকার হয়েছে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগাং ড্রাইডক লিমিটেড। বিষয়টি জানাজানি হলে চেয়ারম্যান, চবক ক্ষিপ্ত হয়ে হেলালকেও পায়রা বন্দরে বদলী করতে চান। পরে অবশ্য কিছু কর্মকর্তা চেয়ারম্যান, চবক-কে বুঝিয়ে শান্ত করেন। তবে থামেনি হেলালের ঘুষ বাণিজ্য ও তার ফুফাতো ভাই ফরিদের সিন্ডিকেট বানিজ্য। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন কি কি হয় তা নিয়মিত ক্যাপ্টেন ফরিদকে আপডেট দেন। এমনকি ক্যাপ্টেন ফরিদের সিন্ডিকেটের মূল কালেক্টর এই হেলাল। মো: হেলাল প্রাক্তন সদস্য(অর্থ) শহিদুল আলমের বিশেষ আস্তাভাজন হয়ে এস আলমের হাতে তুলে দেন বন্দরের প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা !! যা বন্দর এখনও আদায় করতে পারেনি।
তার ব্যাংকে এত টাকা দেয়ার সিন্ডিকেট পার্টনার ছিল রাউজানে এমপি ফজলুল করিমের নিকটজন খ্যাত হিসাবক মো: হানিফ, একাউন্টস অফিসার আনোয়ার এবং চীফ অডিট অফিসার মেরাজ উদ্দিন আরিফ।বন্দরের এত্ত বড় আর্থিক ক্ষতি সাধন করেও তারা এখনও বন্দর দাপাচ্ছেন। কারণ তাদের পিছনে অনেক বড় বড় মাফিয়া কাজ করে। এই সিন্ডিকেট মেম্বাররা কোটি কোটি টাকার অর্থ ও সম্পদ গড়েছেন নামে বেনামে।
মো: হেলাল ও ক্যাপ্টেন ফরিদ ৫ আগস্টের পর থেকেই চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান -কে বদলীর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন,যা এখনও অব্যাহত আছে।
এই চেয়ারম্যান যেন তাদের পথের সবচেয়ে বড় কাটা। ক্যাপ্টেন ফরিদের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে বেশ কিছু পত্রপত্রিকায় সংবাদ ছাপা হয়েছে।তার মামাতো ভাই হেলালের এস আলমের Islands টাকা রাখার সিন্ডিকেট নিয়ে গত বছর একটি অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রচার হলেও তার বিরুদ্ধে তার বিভাগ বা বন্দর কর্তৃপক্ষ কোন ব্যাবস্থা নেন নি।

এমন সোল এজেন্ট বন্দরের জন্য খুবই বিপদজনক। তারা নিজের স্বার্থে যেকোনো কিছু করতে পারে।তাই বন্দরের আর্থিক ও সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে তার/তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। উপরোক্ত তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে আপনার পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করছি। বন্দর বাচান, দেশের অর্থনীতি বাচান।
👁️ 40 News Views
