গোপালগঞ্জে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক বাবুল মল্লিকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত খুলনা গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন শিক্ষাঙ্গন সারাদেশ

মো: সাইফুর রশিদ চৌধুরী  : গোপালগঞ্জে অবস্থিত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক (এসআরসি) বাবুল মল্লিকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একাধিক পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নানা কৌশলে কর্মচারীদের ব্যবহার করে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িত।


বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সূত্র ও প্রাপ্ত নথিপত্রে জানা যায়, সহকারী পরিচালক বাবুল মল্লিক যোগদানের পর প্রথম দিকে ছাত্রছাত্রীদের সনদ নিজ হাতে প্রদান করলেও, পরবর্তীতে ঘুষ আদায়ের উদ্দেশ্যে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দিয়ে সনদ বিতরণের দায়িত্ব দেন। এর মাধ্যমে তিনি পরোক্ষভাবে অর্থ আদায় শুরু করেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের এক নৈশপ্রহরী রতন মুন্সি সরাসরি ছাত্রছাত্রীদের হাতে সনদ প্রদান করছেন এবং বিনিময়ে অর্থ নিচ্ছেন। যা সরকারি নীতিমালার পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়াও পুতুল, তামিম ও সবুজ নামের আরও কয়েকজন কর্মচারীকেও একইভাবে বিভিন্ন অবৈধ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যে তার কথামত কাজ করবে না তাকে ব্যাপক শাস্তির ভয় দেখানো হয়।


বিজ্ঞাপন

প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘদিনের কর্মচারী সেলিম , “ নিয়মমাফিক অফিসের কাজ করতে চান, কিন্তু সহকারী পরিচালক তাকে নানা অজুহাতে কাজ থেকে দূরে রেখেছেন।”


বিজ্ঞাপন

অভিযোগ রয়েছে, সহকারী পরিচালক বাবুল মল্লিক সরকারি কোষাগারে টাকা জমা না দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করে ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ করেছেন। অফিসের রেজিস্ট্রারে দেখা গেছে, দিনেশ চন্দ্র অধিকারী নামের এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০২৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ১,০০০ টাকা গ্রহণ করা হলেও রশিদে মাত্র ৪৫০ টাকা দেখানো হয়েছে (রশিদ নং: ১৩৭০২২৩)। অথচ উক্ত অর্থ ওই তারিখে সরকারি কোষাগারে জমা হয়নি বলে রেজিস্টারে প্রমাণ মেলে।

এ বিষয়ে সহকারী পরিচালক বাবুল মল্লিকের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো অনিয়ম করিনি। যদি আমার অফিসের কেউ করে থাকে, তা খতিয়ে দেখব।” তবে যখন তার বিরুদ্ধে প্রমাণের কথা বলা হয়, তিনি সাংবাদিকের সঙ্গে একান্তে দেখা করার অনুরোধ জানান।

পরবর্তীতে এক বিএনপি নেতার মাধ্যমে সাংবাদিককে সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য ভদ্রভঙ্গিতে হুমকি দেওয়া হয়। সেই কথোপকথনের অডিও সংরক্ষিত রয়েছে বলে জানা গেছে।

বাবুল মল্লিকের আগের কর্মস্থল শরীয়তপুরেও একই ধরনের অভিযোগ ছিল। সেখানে অফিসে বসেই তিনি সরাসরি টাকা নিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যার একটি গোপন ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিকদের হাতে এসেছে।

গোপন সূত্রে আরও জানা গেছে, বর্তমানে ডিগ্রি প্রোগ্রামে ভর্তি ফি বাবদ ৪,০০০ টাকা সরকারি নির্ধারিত থাকলেও বাবুল মল্লিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫,০০০ টাকা করে নিচ্ছেন।

স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের অনিয়ম দেখে আসছি। প্রশাসনের কাছে আমাদের একটাই দাবি—এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

👁️ 49 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *