থার্টি ফার্স্টে ছাদেও উৎসবে নিষেধাজ্ঞা

অপরাধ এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন রাজধানী

ডিএমপির ১৩ নির্দেশনা

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও করোনা মহামারির কারণে থার্টি ফার্স্ট নাইটকে ঘিরে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। নির্দেশনা অনুযায়ী থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠানসমূহ পালিত হলেও সরকারের নির্দেশনা অনুসারে উন্মুক্ত স্থানে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। এমনকি ভবনের ছাদেও কোন ধরণের জমায়েত, সমাবেশ ও উৎসব করা যাবে না।


বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার) স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নগরবাসীকে এ আহবান জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি কমিশনার বলেন, উৎসব উদযাপনের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ঐতিহ্য বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে থাকে। কিছু ব্যক্তি আনন্দের আতিশয্যে পটকাবাজি, আতশবাজি, অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানোর মাধ্যমে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা ঘটিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়।

এছারাও থার্টি ফার্স্ট রাতে পটকাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি, মোটরসাইকেল চালনাসহ যে কোন ধরণের অশোভন আচরণ এবং বেআইনী কার্যকলাপ হতে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলো।

নির্দেশনাগুলো হলো-

১। ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায়, ভবনের ছাদে এবং প্রকাশ্যে স্থানে কোন ধরণের জমায়েত/সমাবেশ/উৎসব করা যাবে না।

২। উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোন ধরণের অনুষ্ঠান বা সমবেত হওয়া যাবে না বা নাচ, গান ও কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।

৩। কোথাও কোন ধরণের আতশবাজি/পটকা ফোটানো যাবে না।

৪। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রাত ১৮.০০ টার পরে বহিরাগত কোন ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না।

৫। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। তবে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে পায়ে হেঁটে প্রবেশ করতে পারবে।

৬। গুলশান ও বনানী এলাকায় রাত ২০.০০ টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। তবে উক্ত এলাকায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে।

৭। একইভাবে উপর্যুক্ত সময়ে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যে সকল নাগরিক বসবাস করেন না তাদেরকে বর্ণিত এলাকায় গমনের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলো।

৮। রাত ২০.০০ টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে অবস্থান করতে দেয়া হবে না।

৯। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকবৃন্দকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ রাত ২০.০০ টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুরোধ করা হলো।

১০। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ সন্ধ্যা ১৮.০০ টার পর ঢাকা মহানগরীর কোন বার খোলা রাখা যাবে না।

১১। রাত ২২.০০ টার পর সকল ফাস্টফুড দোকান বন্ধ থাকবে।

১২। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সীমিত আকারে আবাসিক হোটেলগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে। তবে কোন ক্রমেই ডিজে পার্টি করতে দেয়া যাবে না।

১৩। ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ সন্ধ্যা ১৮.০০ টা হতে ০১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখ ভোর ০৬.০০ টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেঁস্তোরা, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সকল প্রকার লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সম্মানিত নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ করা হলো। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ উপর্যুক্ত নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

ট্রাফিক ডাইভারশন ও পরামর্শ:

১। ৩১/১২/২০২০ খ্রি. তারিখ ২০.০০ টা হতে পরদিন ০১/০১/২০২১ খ্রি. তারিখ ভোর ০৫.০০ টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যানবাহনযোগে প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। সেক্ষেত্রে গুলশান, বনানী ও বারিধারায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকদের রাত ২০.০০ টার মধ্যে উক্ত এলাকায় প্রবেশের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

২। রাত ২০.০০ টা হতে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে মহাখালী এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নং রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিং, ঢাকা গেট, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং উক্ত এলাকাসমূহে প্রবেশের জন্য ব্যবহার করা যাবে না, তবে উক্ত এলাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।

৩। একইভাবে ৩১/১২/২০২০ তারিখ সন্ধ্যা ১৮.০০ টা হতে পরদিন ০১/০১/২০২১ তারিখ ভোর ০৬.০০ টা পর্যন্ত শুধুমাত্র শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ পরিচয় প্রদর্শন এবং সনাক্তকরণ পূর্বক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। এজন্য পরিচয়পত্র সাথে রাখার জন্য সকলকে বিনীত অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

৪। ৩১/১২/২০২০ তারিখ সন্ধ্যা ১৮.০০ টা হতে টিএসসি, রোমানা স্কয়ার, ঢাকা মেডিকেল সেন্টার, জগন্নাথ হল ক্রসিং, ভাঙ্কর্য ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং, বকশী বাজার ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং এবং শহিদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে কোন প্রকার যানবাহন প্রবেশ করবে না, শুধু বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।

৫। হাইকোর্ট ক্রসিং হতে আগত সকল প্রকার যানবাহন দোয়েল চত্বর বামে মোড় নিয়ে শহিদুল্লাহ হল হয়ে চাঁনখারপুল ক্রসিং দিয়ে বের হয়ে যেতে পারবে।

৬। কেউ বেপরোয়া, মদ্যপ ও বিপজ্জনক অবস্থায় গাড়ি চালালে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৭। সড়ক ব্যবহার সংক্রান্তে যে কোন জরুরি প্রয়োজনে ফোন করুনঃ ডিসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৩২০-০৪৪৩৬০, এডিসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৩২০-০৪৪৩৬১, এসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৩২০-০৪৪৩৭২, এসি ট্রাফিক (মহাখালী)-০১৩২০-০৪৪৩৭৫, ডিসি ট্রাফিক (রমনা)-০১৩২০-০৪২২৬০, এডিসি ট্রাফিক (রমনা)-০১৩২০-০৪২২৬১, ডিসি (গুলশান)-০১৩২০-০৪১৪২০ ও ডিসি (রমনা)-০১৩২০-০৩৯৪৪০।

যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সম্মানিত নাগরিকবৃন্দকে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সাহায্য গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হলো। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সহায়তা করার জন্য সম্মানিত নাগরিকদের অনুরোধ করা যাচ্ছে।