পিবিআই কর্তৃক হবিগঞ্জের আলোচিত লিজা (৯) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের ৫ মাস পর মামলার মূল আসামী তাকবীর হাসান গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানাধীন আইলাবই গ্রামের শিশু কন্যা তাকমিনা আক্তার লিজা (৯) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের ৫ মাস পর প্রধান আসামী তাকবীর হাসান (২০) কে খুলনা থেকে গ্রেফতার করলো পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), হবিগঞ্জ।
ঘটনায় প্রকাশ এই যে, অত্র মামলার ভিকটিম তাকমিনা আক্তার লিজা বাদী মোঃ সাগর আলী এবং মোছাঃ সেলিনা বেগম এর মেয়ে। গত ২১ জুলাই, ২০২১ তারিখ ঈদ—উল—আযহার দিন সকাল অনুমান সাড়ে ৬ টার সময় সেলিনা বেগম তার মেয়ে তাকমিনা আক্তার লিজাকে পাশের গন্ধব্যপুর গ্রামের একটি দোকান থেকে নুডুলস ও প্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্য সামগ্রী কিনে আনার জন্য পাঠায়।

পরবর্তীতে তার মেয়ে নুডুলস নিয়ে বাড়ীতে ফিরে না আসলে আশেপাশের সম্ভাব্য সকল স্থানে ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে খোঁজাখুজি করে মেয়ের কোন সন্ধান না পেয়ে সেলিনা বেগম মাধবপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রী করেন।
পরবর্তীতে গত ২৫ জুলাই, ২১ তারিখ বেলা অনুমান ১১ টায় দুই জন মহিলা গ্রামের বাঁশ ঝাড়ের ভিতরে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে ভিকটিম লিজার অর্ধ-গলিত মৃতদেহ দেখতে পান এবং ভিকটিমের মা সেলিনা বেগমকে সংবাদ দেন।

তাৎক্ষনিক ভাবে সেলিনা বেগম ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে তার মেয়ের অর্ধ-গলিত মৃতদেহ শনাক্ত করেন। গত ২১ জুলাই, ২১ তারিখ সকাল অনুমান সাড়ে ৬ টা থেকে ২৫ জুলাই ২১ তারিখ বেলা অনুমান ১১ টার মধ্যে যে কোন সময় অজ্ঞাতনামা খুনি/খুনিরা বাদীর নাবালিকা শিশু কন্যা লিজাকে শ্বাসরুদ্ধ করে বা অন্য যেকোন ভাবে হত্যা করেছে মর্মে লিজার বাবা বাদী হয়ে মাধবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

অতিরিক্ত আইজিপি, পিবিআই বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক দিক নির্দেশনায় এবং পিবিআই হবিগঞ্জ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, মোঃ আল মামুন শিকদার এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে, মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শাহনেওয়াজ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও বিশ্বস্ত সোর্সের মাধ্যমে গত ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২ তারিখে সন্দিগ্ধ আসামী বাহার উদ্দিন এবং গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২২ তারিখে খাদিজা আক্তার তাজরীন ও আমেনা খাতুন আঞ্জুদেরকে গ্রেফতার করেন।

গ্রেফতারের পরবর্তীতে তাদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী তাকবীর হাসান ভিকটিম লিজাকে গলা টিপে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে আসামী তাকবীরকে গ্রেফতারের জন্য পিবিআই হবিগঞ্জ টিম বিভিন্ন ভাবে প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। একপর্যায়ে গত ২৩ জুলাই, আসামী তাকবীর হাসানকে খুলনা থেকে গ্রেফতার করা হয়। আসামী তাকবীরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী তাকবীরের সাথে তারই গ্রামের একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
সম্পর্ক চলাকালীন সময় একদিন সন্ধ্যায় তারা দেখা করতে গেলে ভিকটিম লিজা তাদেরকে একত্রে দেখে ফেলে। ভিকটিম লিজা আক্তার ঘটনাটি মেয়েটির মাকে জানিয়ে দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মেয়েটির সাথে তাকবিরের প্রেমের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।
এই ঘটনায় আক্রোশান্বিত হয়ে আসামী তাকবীর হাসান গত ২১ জুলাই ২১ সালে ঈদ—উল—আযহার দিন সকাল সাড়ে ৭ টার সময় ভিকটিম লিজাকে গলা টিপে হত্যা করে। গ্রেফতার কৃত আসামী তাকবীর হাসান (২০) কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে সে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।


বিজ্ঞাপন
👁️ 4 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *