সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে মব সন্ত্রাসের শিকার সাংবাদিক!

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ সিলেট

মো ইপাজ খাঁ -মাধবপুর (হবিগঞ্জ)  : হবিগঞ্জের মাধবপুরে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে স্থানীয় শিক্ষক ও সন্ত্রাসীদের মব সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন পবিত্র দেবনাথ নামে এক স্থানীয় সাংবাদিক। তিনি দৈনিক দেশপ্রতিদিন ও আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার প্রতিনিধি।ঘটনাটি ঘটে গত ১০ নভেম্বর বাঘাসুরা ইউনিয়নের এমপিওভুক্ত কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে।


বিজ্ঞাপন

এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের একাংশ মবেরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেদিন সাংবাদিক পবিত্র দেবনাথ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নাদিরা বেগমের কাছে শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়ম বিষয়ে জানতে চান। এসময় প্রধান শিক্ষিকা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে তিনি ও বিদ্যালয়ের কয়েকজন স্টাফ মিলে সাংবাদিক পবিত্র দেবনাথ ও তার সহকর্মীর ওপর হামলা চালান। তারা সাংবাদিকদের মারধর করে ক্যামেরা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেন এবং তাতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও মুছে ফেলেন।

এরপর জোরপূর্বক একটি স্ট্যাম্প পেপারে “ভুয়া সাংবাদিক” লেখা স্বীকারোক্তিতে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। স্থানীয় এক আত্মীয় গিয়ে তাকে উদ্ধার করলেও এর মধ্যেই অভিযুক্তরা জোর করে ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়—প্রধান শিক্ষিকা ও তার সহযোগীরা ক্যামেরার আড়াল থেকে চাপ প্রয়োগ করে সাংবাদিককে বক্তব্য পরিবর্তন করাতে বাধ্য করছেন এবং “ভুয়া সাংবাদিক” বলতে বলছেন। এমনকি ওই আত্মীয়কেও ইচ্ছেমতো বক্তব্য দিতে বাধ্য করা হয়। খবর লেখা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ নিজেদের কর্মকাণ্ডের জন্য কোনো অনুশোচনা বা দুঃখপ্রকাশ করেনি।


বিজ্ঞাপন

ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক পবিত্র দেবনাথ বলেন, “স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা বিধিমালা লঙ্ঘন করে দায়িত্ব পালন করছেন এবং সেখানে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য—এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে স্টাফ ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেন। জোর করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করানো হয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”


বিজ্ঞাপন

অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষিকা নাদিরা বেগম বলেন,“তারা আমার কাছে চাঁদা দাবি করেছিল। তাছাড়া সে কোনো প্রেসক্লাবের সদস্যও নয়। একজন সিনিয়র সাংবাদিকের পরামর্শে নিশ্চিত হয়েছি সে ভুয়া সাংবাদিক।আমাদের শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজ স্যারও বলেছে সে ভুয়া। পরে তাকে মুচলিকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন,“ঘটনাটি শুনেছি। তারা সাংবাদিক ছিলেন—এ তথ্য আগে জানা ছিল না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।সরেজমিনে বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।”

স্থানীয় প্রেসক্লাব নেতারা বলেন,“সাংবাদিকদের ওপর হামলা, হুমকি ও হয়রানি গণতন্ত্র ও মুক্ত সাংবাদিকতার জন্য গুরুতর হুমকি। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

👁️ 80 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *