
মোঃ আব্দুল কাদের (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহের ত্রিশালে ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে চিকিৎসককে ডেকে নিয়ে অপহরণ, আটক, মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির মাধ্যমে তিন লাখ টাকার বেশি চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নারীসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

মামলার বাদী ডা. শফিকুল ইসলাম (৪৩), যিনি শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএন্ডএফপিও।
জানা যায়, ১৬ নভেম্বর ‘জুই চৌধুরী’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়। পরে পুলিশ নিশ্চিত করে যে আইডিটি পরিচালনা করছিলেন তানিয়া আক্তার।পরিচয়ের একপর্যায়ে তানিয়া ডা. শফিকুলকে ত্রিশালে দেখা করতে বলেন। ১৯ নভেম্বর বিকালে ত্রিশালে পৌঁছালে সিয়াম নামে এক ব্যক্তি তাকে বাসস্ট্যান্ড থেকে উজানপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়।এবং কক্ষে বসার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে ঢুকে পড়ে রবিউল মোল্লা, আবুল বাশার, ফরিদুল ইসলামসহ কয়েকজন নারী-পুরুষ। মুহূর্তেই তারা চিকিৎসককে ঘিরে ফেলে, তার পোশাক খুলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে এবং ১০ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যা করে গুম করার হুমকিও দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে বাদীর গলায় ছুরি ধরে ভয় দেখানো হয়।

প্রথমে তার কাছে থাকা ২২,৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর তাকে মারধর—চড়, থাপ্পড়, কিল-ঘুষি ও লাঠিপেটা করা হয়। পরে আত্মীয়দের মাধ্যমে বিকাশে বিভিন্ন নম্বরে ২,৮০,০০০ টাকা পাঠাতে বাধ্য করা হয়। চক্রটি টাকা পাওয়ার পরও হুমকি দেয়—
“কাউকে কিছু বললে মেরে ফেলব।”

মুক্ত হওয়ার পর রাত ৯টার দিকে ডা. শফিকুল ত্রিশাল থানায় অভিযোগ দেন। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে বীররামপুর এলাকার আমিরন বেগমের বাড়ি থেকে রবিউল, সোনালী, রাজনা ও আমিরনকে গ্রেপ্তার করে।
তল্লাশিতে উদ্ধার করা হয়— ৫৬,৮৫০ টাকা, ৬টি মোবাইল ফোন
অপরাধীদের নির্যাতনে আহত চিকিৎসককে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ত্রিশাল থানা পুলিশ।
