ময়মনসিংহে সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের হাঁটুরে কবিতার আসর অনুষ্ঠিত

Uncategorized গ্রাম বাংলার খবর বিশেষ প্রতিবেদন ময়মনসিংহ সংগঠন সংবাদ সারাদেশ

মকবুল হোসেন, (ময়মনসিংহ)  :  বাঙালীর সমৃদ্ধ সংস্কৃতির বিলুপ্তপ্রায় হাঁটুরে কবিতাকে প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার মানসে আজ ২১ নভেম্বর শুক্রবার ময়মনসিংহে সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের উদ্যোগে হাঁটুরে কবিতার আসরের আয়োজন করা হয়। নগরীর জয়নুল উদ্যানের তেঁতুলতলায় আজ সন্ধ্যা ৫:৩০ ঘটিকায় এই আসর শুরু হয়৷


বিজ্ঞাপন

একসময় গ্রামীণ জনপদে জনপ্রিয় ছিল হাঁটুরে কবিতা। আজ তা হারিয়ে যেতে বসেছে। বলা চলে হারিয়েই গেছে। এর মাঝেও কেউ কেউ তা ধরে রেখেছেন। সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘ হারিয়ে যাওয়া হাঁটুরে কবিতাকে তুলে ধরার প্রয়াসে এই আয়োজন করে।

হাঁটুরে কবিতা হলো এক প্রকারের দীর্ঘ ও সুর করে পড়া পয়ার ছন্দের কবিতা, যা হাটবাজারে, রেল স্টেশনে, বাস স্টেশনে আসর জমিয়ে, গ্রামের পথে-ঘাটে ঘুরে ঘুরে পথচলতি মানুষকে আনন্দ দিতে পরিবেশিত হতো। চলন্ত লোকাল ট্রেনের কামরায় পরিবেশিত হতো। এই কবিতা ‘ভাট কবিতা’ নামেও পরিচিত। সহজ ভাষায় সমসাময়িক ঘটনা, প্রেম, পুরাণ, ঐতিহাসিক বা লোককাহিনীর গল্প, সামাজিক বিভিন্ন বিষয়, ধর্ম, নীতিকথা ও মানুষের জীবনযাত্রার নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। এই কবিতাগুলো সুরে সুরে পড়া হয়, যা এক বিশেষ আবেদন সৃষ্টি করে। হাঁটুরে কবিতার সাথে গ্রামীণ জীবন ও সংস্কৃতির গভীর সম্পর্ক রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আমাদের রয়েছে সমৃদ্ধ লোকজ সংস্কৃতি। যথাযথ সংরক্ষণ ও পৃষ্টপোষকতার অভাবে লোকজ সংস্কৃতির বিভিন্ন মাধ্যম আজ বিলুপ্তির পথে। হাঁটুরে কবিতা তার একটি। বর্তমান প্রজন্ম জানেই না যে, হাঁটুরে কবিতা নামে লোকজ সংস্কৃতির একটি মাধ্যম রয়েছে। সমৃদ্ধ লোকজ সংস্কৃতির সকল মাধ্যমকে টিকিয়ে রাখা অতীব প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। এই প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেই আমরা হাঁটুরে কবিতার আসরের আয়োজন করেছি। ভবিষ্যতেও লোকজ সংস্কৃতির বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন মাধ্যম আমরা এভাবেই প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবো। আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।


বিজ্ঞাপন

আসরে মো: নুরুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ সরকার ও মো: খোকন মিয়া মনোমুগ্ধকর বিভিন্ন বিষয়ের হাঁটুরে কবিতা পরিবেশন করে উপস্থিত দর্শকদের দীর্ঘক্ষণ মাতিয়ে রাখেন। হাঁটুরে কবিতার আসরটি সন্ধ্যা ৫:৩০ ঘটিকা হতে রাত ৮:৩০ ঘটিকা পর্যন্ত চলমান থাকে। উপস্থিত দর্শকবৃন্দ হাঁটুরে কবিতা শুনে খুবই উচ্চসিত হন। বিলুপ্তপ্রায় সুস্থধারার লোকজ সংস্কৃতির এই মাধ্যমটি যাতে হারিয়ে না যায় তারজন্য সরকার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, সংগঠন, ব্যক্তিকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

👁️ 111 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *