ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেলের প্রাপ্যতা নিশ্চিতের তাগিদ  : সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা

Uncategorized জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক  : ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল নিশ্চিত করতে হলে খোলা ড্রামে তেল বিক্রি বন্ধ ও গুণগত প্যাকেজিং বাধ্যতামূলক করা জরুরি। খোলা ড্রামে ভোজ্যতেল বিক্রি সরকারি নির্দেশনার লঙ্ঘন এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। রাজধানীর বিএমএ ভবনে আজ (২৯ অক্টোবর ২০২৫) অনুষ্ঠিত “সবার জন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল: অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়” শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন।


বিজ্ঞাপন

গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত এই কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৮ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।

আলোচকরা জানান, দেশে ভোজ্যতেল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণের আইন থাকা সত্ত্বেও বাস্তবে অধিকাংশ তেল ভিটামিন ছাড়া অথবা পরিমিত মাত্রায় থাকেনা। আইসিডিডিআর,বি-এর গবেষণা অনুযায়ী, বাজারে বিক্রি হওয়া মোট ভোজ্যতেলের প্রায় ৬৫ শতাংশই ড্রামে বিক্রি হয়, যার মধ্যে ৫৯ শতাংশ তেলে কোনো ভিটামিন ‘এ’ নেই, এবং মাত্র ৭ শতাংশ তেলে আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত ভিটামিন পাওয়া গেছে। ফলস্বরূপ, দেশে বিশেষত শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন

বক্তারা আরও বলেন, খোলা ড্রামগুলো অনেক সময় পূর্বে রাসায়নিক পদার্থ বা অন্যান্য শিল্পপণ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা তেলকে দূষিত করে ও মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে। তাছাড়া এসব ড্রামে কোনো লেবেল বা উৎসের তথ্য না থাকায় তেলের উৎস শনাক্ত ও মান যাচাই করা সম্ভব হয় না। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি জুলাই ২০২২ থেকে ও খোলা পাম তেল বিক্রি ডিসেম্বর ২০২২ থেকে নিষিদ্ধের সরকারি নির্দেশনা থাকলেও মাঠপর্যায়ে এর কার্যকর বাস্তবায়ন হয়নি। এ অবস্থায়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বিএসটিআই, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে বাজারে ভিটামিনসমৃদ্ধ ও নিরাপদ তেল নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তাঁরা।


বিজ্ঞাপন

কর্মশালায় আরো জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে ভিটামিন ‘ডি’-এর ঘাটতি উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে। তাই ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’-এর পাশাপাশি ভিটামিন ‘ডি’ সমৃদ্ধকরণ করা হলে একটি কার্যকর, স্বল্পব্যয়ী ও টেকসই জনস্বাস্থ্য উদ্যোগ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি, সূর্যালোক বা অতিরিক্ত আলোর সংস্পর্শে ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায় উল্লেখ করে তাঁরা আলো প্রতিরোধী অস্বচ্ছ বোতলে তেল সংরক্ষণের পরামর্শ দেন। দেশে ভোজ্যতেল মোড়কজাতকরণে গুণগত প্যাকেজিংয়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন বলে আলোচকবৃন্দ মত দেন।

ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতির কারণে শিশুদের অন্ধত্ব এবং গর্ভবতী নারীদের মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। ভিটামিন ‘ডি’-এর অভাবে রিকেটস, হাড়ক্ষয় ও হৃদরোগসহ নানান অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর-এর কার্যক্রম ও গবেষণাগার বিভাগের পরিচালক (উপসচিব) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন; ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর কনসালটেন্ট মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার; বাংলা ট্রিবিউনের বিজনেস ইনচার্জ, মো. শফিকুল ইসলাম এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম অফিসার ডা. আলিভা হক এবং প্রজ্ঞা’র কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার।

👁️ 249 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *