
নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর মহাখালীতে ছাত্র জনতার উপর হামলা চালানো আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সাদী সরদার এখনো পলাতক রয়েছেন। বনানী থানা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ২০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী এই নেতা বর্তমানে আত্মগোপনে থেকে সামাজিক মাধ্যমে উস্কানিমূলক পোস্ট ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

জুলাই মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শেখ সাদী সরদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানিমূলক পোস্ট এবং ছাত্রদের উপর হামলার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তিনি নিজেই তার ফেসবুক আইডিতে ছাত্রদের উপর হামলার ভিডিও পোস্ট করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, সাদী মহাখালীর আমতলীতে পুলিশের সঙ্গে হেলমেট পরে লাঠিসোঁটা হাতে আন্দোলনকারী ছাত্র জনতার উপর হামলা চালাচ্ছেন এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছেন, যাতে অনেক ছাত্র আহত হয়।
শেখ সাদী সরদার দীর্ঘদিন ধরে মহাখালী এলাকায় থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন। জানা গেছে, তিনি বর্তমানে ময়মনসিংহে অবস্থান করছেন এবং বিভিন্ন স্থানে ছবি পোস্ট করে তা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করছেন। একইসঙ্গে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও অন্যান্য বিষয়ে মিথ্যা অপপ্রচার এবং গুজব ছড়াচ্ছেন।

কিছুদিন আগে বনানীর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নির্বাচনে নির্বাচনে সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়া তার ভাইয়ের প্রচারণায় প্রকাশ্যে আসে শেখ সাদী সরদার। ভোটের দিনও তাকে দেখা যায়। এবং ইদানিং মহাখালীর বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে তাকে দেখা গেলেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে না।

গত ১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে ঘিরে ফেসবুকে সরব ছিলেন সাদী সরদার। পর্যায়ক্রমে উস্কানিমূলক পোস্ট এবং গুজব ছড়িয়েছেন। তার ফেসবুক পোস্টে দেখা যায় লকডাউনের পুরোনো ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে ১৩ নভেম্বরের দাবি করে একাধিক পোস্ট করেছেন। সর্বশেষ তার ফেসবুক থেকে পোস্ট করেন, “১৬-১৭ কমপ্লিট শাট ডাউন।”
এর আগে তার ফেসবুক পোস্টে বিভিন্ন উস্কানিমূলক মন্তব্যও দেখা যায়, যেমন গত ৯ অক্টোবর তিনি লিখেছেন, “বাচ্চা উপদেষ্টাকে ধমক দিয়ে বসিয়ে দিলেন এক সেনা অফিসার,” এবং এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর পোস্ট করেন, “ব্রেকিং নিউজ: ‘রণক্ষেত্র’ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা! নি*হত -৮ আহত-৭০ #StepDownYounus”। তার ফেসবুক আইডি বিভিন্ন উস্কানিমূলক ও গুজবে পরিপূর্ণ।
সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ সাদী সরদার মহাখালী এলাকার পরিচিত ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। তার নামে বনানী ও গুলশান থানায় একাধিক মামলা রয়েছে এবং তিনি একাধিকবার জেল খেটেছেন। তার বড় ভাই শেখ নাছির সরদার ওরফে গলা কাটা নাছির ঢাকা শহরের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একজন।
