
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী রামপুরা একরামুন্নেছা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এস এম সোহরাওয়ার্দী ব্যাপক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, ভুয়া ভাউচার, ও দুর্নীতির মাধ্যমে কলেজ ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী অভিভাবক বৃন্দ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। সাম্প্রতিক শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতা যাচাই-বাছাই উপেক্ষা করে নিজের খেয়াল-খুশি মতো ৯ জনের একটি তালিকা অনুমোদনের জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট পাঠিয়েছেন। ওই শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা লেনদেনের ও অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দাপুটে প্রভাব খাটিয়ে জোষ্ঠ্য শিক্ষকদের ডিঙ্গিয়ে অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অনেক বেপরোয়াভাবে চরম অবহেলা,অনিয়ম, দুর্নীতি, ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ ওঠে। এ কারণে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা, ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি দিন দিন মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। জুলাই আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন যার ফলে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ও কলেজের ভাবমূর্তিকে আরো সংকটাপন্ন করে তুলেছেন।
তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সমূহ যথাক্রমে, সম্প্রতি NTRCA থেকে অত্র কলেজের ৮ জন প্রভাষক ও একজন প্রদর্শক সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন কিন্তু ন্যায্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা না থাকা সত্ত্বেও ভুয়া তথ্য ও বানোয়াট শিক্ষার্থী দেখিয়ে এমপি ভুক্তির জন্য শিক্ষা অফিসে ফাইল প্রেরণ করেছেন।

প্রশাসনিক কর্মকান্ডের চরম স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বের অবহেলা করেছেন। কলেজের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা, অনিয়ম করে বিভিন্ন নামে বেনামে ভাউচার তৈরি করে কলেজ ফান্ড থেকে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে অমানবিক ও সৌজন্যমূলক স্বেচ্ছাচারী আচরণ করেছে।

দীর্ঘদিন ধরে প্রভাষক নন এমপিও হিসেবে দায়িত্ব পালনরত শিক্ষকদের কোন নোটিশ ছাড়াই অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করেছেন।
তিনি হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কোন ক্লাশ নেয়নি।
শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ ধ্বংস করে চলেছেন, এমনকি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ভর্তি ফি, বেতন, ফরমপূরণ, ও অন্যান্য খাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। এবং তিনি অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে অধ্যক্ষ হিসেবে পরিচয় দেন বা ভারপ্রাপ্ত শব্দটি ব্যবহার করেন না।
এদিকে একজন অধ্যক্ষের দায়িত্বশীল ও নেতৃত্বদানকারী ভূমিকার পরিবর্তে অনৈতিক, স্বেচ্ছাচারী, কর্মকান্ডে কলেজের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের ভেতর চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে তাকে অপসারণের দাবিতে জেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। তার অনিয়মের আরো একাধিক তথ্য রয়েছে যা প্রকাশ পাবে পরবর্তী সংখ্যায়।
উল্লেখ্য যে শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে সদ্য ৯ জন শিক্ষক এমপিওভুক্ত’র অনুমোদন পেয়েছে। শিক্ষা অধিদপ্তরের বিধিমালা অনুযায়ী প্রত্যেক শ্রেণীতে নিম্নতম ৫৫ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। কিন্তু রামপুরা ডিগ্রি কলেজে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৫,৩০, অনুর্ধ্ব ৩৫ জনের বেশি নাই। এখানে এমপিওর সুযোগ ক্ষীণ।
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা গেছে, পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী না থাকলে ও মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে এমপিও অনুমোদন পেয়েছে।কত টাকা ঘুষ বাণিজ্য করেছেন পরবর্তী সংখ্যায় প্রকাশিত হবে।এ বিষয় শিক্ষা অধিদপ্তর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গড়িমসি করলে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ও অভিভাবকরা।
এসব অভিযোগের বিষয় বক্তব্য জানতে (ভারপ্রাপ্ত) সোহরাওয়ার্দীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, আমার প্রতিপক্ষ আমাকে হেয় করার জন্য অপপ্রচার চালিয়ে আসছেন। আমি অনিয়ম করলে তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
