বিমানবন্দরে আমরণ অনশনে প্রবাসীরা

জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে দ্রুত করোনার র‍্যাপিড আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার স্থাপনের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শতাধিক প্রবাসী। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।


বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকায় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নিচে অবস্থান নিয়ে প্রবাসীরা এ কর্মসূচি শুরু করেন।

প্রবাসীরা বলেন, বিশ্বে করোনারভাইরাসের সংক্রমণ নিম্নমুখী। সারাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বিভিন্ন দেশ বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। আকাশপথে চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর একটিতেও র‍্যাপিড আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার নেই। এ কারণে তারা কর্মস্থলে যেতে পারছেন না।

দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে র‍্যাপিড আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার স্থাপনের জন্য অনেক দিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছেন প্রবাসীরা।

গত ৬ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা শনাক্তে পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেয়া হয়। বিমানবন্দরগুলো হলো- ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আনর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

সেদিন মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন দেশের দেয়া শর্ত অনুযায়ী বিমান উড্ডয়নের আগের চার থেকে আট ঘণ্টার মধ্যে করোনার পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দিন ধরে আলোচনা চলার পর সাত দিনের মধ্যে বিমানবন্দরে পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেয়া হয়। প্রাথমিকভাবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যবস্থাটি করা হবে বলেও জানান মন্ত্রীপরিষদ সচিব।

প্রবাসীরা বলেন, মন্ত্রিসভার নির্দেশের পর সপ্তাহ পেরোলেও বিমানবন্দরে পরীক্ষাগার স্থাপনের কাজ শুরু হয়নি। এ কারণে অনেক প্রবাসী কর্মস্থলে ফিরতে না পেরে বিপদে পড়েছেন।

কর্মসূচিতে অংশ নেয়া মিরপুরের বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন জানান, ১০ বছর ধরে দুবাইয়ে কাজ করছেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠান বারবার তাকে কাজে যোগ দিতে বলছে। কিন্তু দেশের কোনো বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার না থাকায় যেতে পারছেন না।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ১৩ বছর ধরে দুবাইয়ে কাজ করছেন। ছুটি কাটাতে দেশে আসেন তিনি। এখন নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান তাকে কাজে যোগ দিতে বারবার তাগিদ দিচ্ছে, কিন্তু তিনি যেতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘এত দিনেও বিমানবন্দরে একটা আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার স্থাপন করা গেল না। এখন আমরা যদি কাজ হারাই, তার দায়ভার কে নেবে?’

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বিমানবন্দরে কোন প্রতিষ্ঠান র্যা পিড আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার স্থাপন করবে, তা এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। কোন প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হবে, তা বাছাই করতে সময় লাগছে।

কর্মসূচিতে অংশ নেয়া এসব প্রবাসীরা জানান, মন্ত্রিসভার নির্দেশ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন। পরীক্ষাগার স্থাপনের বিষয়ে তারা অন্তত মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে একটা সুনির্দিষ্ট তারিখ জানতে চান।