কেন পুলিশের প্রতি আদালত সুয়োমোটো জারি করবে না?

অপরাধ আইন ও আদালত

পরীমনিকে নিয়ে শাহরিয়ার কবিরসহ রাষ্ট্রের বিশিষ্টজনেরা যা বললেন
আজকের দেশ রিপোর্ট : মাদকের মামলার গ্রেফতার চিত্রনায়িকা পরীমনিকে বারবার রিমান্ডে নেওয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।


বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও স্পিকার নারী; তারপরও নারীকে কেন অপমানিত হতে হবে? পরীমনিকে কেন বারবার রিমান্ডে নিতে হবে? কেন আদালত পুলিশের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো জারি করবে না?

গতকাল রোববার ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকজন’র আয়োজনে এ সমাবেশে এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, আদালতের রায়ের আগেই সোশাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে পরীমনিকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শাহরিয়ার কবির। নারীদের প্রতি বিদ্বেষমূল সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যমকে সংযত হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

তিনি বলেন, তাকে নিয়ে নানা ধরনের অস্বস্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য কোনো সভ্য সমাজে কাম্য হতে পারে না।

নারীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু রাষ্ট্র কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই মানসিকতা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা।

প্রসঙ্গত, গত ৪ অগাস্ট ঢাকার বনানীর বাসায় র‌্যাব অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পর তাকে তিন দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। শনিবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

‘পরীমনির জন্য ন্যায়বিচার চাই’ ব্যানারে রোববার বিকালে ঢাকার শাহবাগে নাগরিক সমাবেশে শামিল হন মানবাধিকারকর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সংস্কৃতির্মীরা।

সমাবেশে ফোন কলে যুক্ত হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, “আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, পরীমনির জামিনের আবেদনটা অত্যন্ত অন্যায়ভাবে শোনা হচ্ছে না। তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করতে গেছেন, করতে দেওয়া হয়নি।

তার আইনজীবী পরীমনির সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন, কথা বলতে দেওয়া হয়নি। এটা কোনো আদালত করতে পারে না। এটা মানবাধিকারের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন।

যদি বিচারক উপস্থিত থাকেন ও আসামি কাঠগড়ায় থাকেন, তখন আইনজীবী কথা বলতে পারেন না।

এর বাইরে অন্য কোনো সময় আইনজীবী কথা বলতে পারবেন না- এমন কোনো আইন নেই।

কয়েক মাস আগে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তোলার পর মাদক মামলায় পরীমনিকে গ্রেফতার করা হয়।

সেই প্রসঙ্গ তুলে ‍সুলতানা কামাল বলেন, “একটি মানুষ কোনো একটি অপরাধের শিকার হয়ে মামলা করেছিলেন।

সেই মামলার প্রেক্ষিতে তখন থেকেই তাকে নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তাতে হেনস্তা করার দায়িত্ব রাষ্ট্র নিজের হাতে তুলে নিল।

একজন নারীকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার সঙ্গে যেভাবে আচরণ করা হচ্ছে তা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

সন্দেহজনক ভাবে তার বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। হয়ত কিছু আলামত পাওয়া গেছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার বিচার শুরুই হয়নি।

সেই মানুষকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত কুৎসা রটনা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে নিকৃষ্ট ভাষায় বিষোদগার করা হচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই, নিন্দা জানাই। রাষ্ট্রীয়ভাবে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।