বুড়িগঙ্গায় লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া বাল্কহেডের ২ লস্করের লাশ উদ্ধার

Uncategorized জন দুর্ভোগ জাতীয় ঢাকা দুর্ঘটনার সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন মানবিক খবর রাজধানী

অপু কিরণ (নারায়ণগঞ্জ) : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীতে যাত্রীবাহি লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া বালুবাহী বাল্কহেডের নিখোঁজ দুই লস্করের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

গতকাল  শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেল সন্ধ্যা পৌনে পাঁচটার দিকে ইঞ্জিন রুম থেকে মরদেহ দুʼটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিএʼর সহকারী পরিচালক কামরুল হাসান।

এর আগে সকাল আনুমানিক সোয়া ছয়টার দিকে ধর্মগঞ্জ এলাকায় নোঙর করা বাল্কহেডটি ডুবে যায়।


বিজ্ঞাপন

নিহতরা হলেন : বাল্কহেডের দুই লস্কর — পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার চরগরবদীর আমির হাওলাদারের ছেলে মোহা. জহুরুল ইসলাম শাকিল (২৫) ও ঝালকাঠির রাজাপুরের মো. হাসান (২০)।


বিজ্ঞাপন

ঘটনার পর উদ্ধারকাজে কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডাব্লিউটিএʼর সদস্যরা কাজ শুরু করে বলে জানান বিআইডাব্লিউটিএ কর্মকর্তা কামরুল হাসান।

তিনি বলেন, “নোঙর করা বাল্কহেডের ইঞ্জিন রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন তারা দুʼজন। লঞ্চের সজোরে ধাক্কায় ইঞ্জিন রুমটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ফলে সেখানে ডুবুরিরা ঢুকতে পারেনি। পরে ইঞ্জিনরুমের প্রবেশ পথ ফ্লোটিং-এক্সাভেটর দিয়ে ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে লাশ দুʼটি পাওয়া যায়।”

পাগলা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আকিবুল ইসলাম বলেন, এমভি কাশফা স্নেহা নামে বাল্কহেডটি নদীতে নোঙর করা ছিল। এ সময় ঢাকামুখী সুন্দরবন-১৬ নামে একটি লঞ্চ বাল্কহেডটিকে ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেয়। বাল্কহেডের তিনজন শ্রমিক-কর্মচারী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও আরও দুʼজন নিখোঁজ হন।

সকালে ঘন কুয়াশার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছি”, যোগ করেন তিনি।

বাল্কহেডের চালক নান্নু মিয়া বলেন, “আমরা সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠৎ জোরে এক শব্দ হওয়ায় আমি লাফিয়ে উঠে দেখি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছি। কোনোমতে আমি কাঁচের জানালা ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারছি।”

কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বাল্কহেডটি ডুবে যায়। কোনো কিছু ভাবার সময়ও পাইনি”, যোগ করেন তিনি।

দুর্ঘটনার পর নদীর পাড়ে ছুটে আসেন নিহত জহুরুলের ভাই আল-আমিন। তিনি মুঠোফোনে কোনো এক স্বজনকে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, “গেট লক হইয়া গেছিলো, খুলতে পারে নাই। ওরে ভাইরে আমার কীসের মইধ্যে গেলি তুই! তোরে তো আমরা হারাইলাম।”

ঘটনাস্থলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম ফয়েজউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ধাক্কা দেবার পরই লঞ্চটি সেখান থেকে চলে যায়। কিন্তু নৌ পুলিশ পরে লঞ্চটিকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে।

এ ঘটনায় আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ইউএনও।

গত ১৪ ডিসেম্বর সকালে ফতুল্লা লঞ্চঘাট এলাকায় বোগদাদীয়া-১৩ লঞ্চের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে বালুবাহি বাল্কহেড ডুবে যায়। তবে, বাল্কহেডের ৫ শ্রমিক সাঁতরে তীরে ওঠেন। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

👁️ 27 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *