
সুমন হোসেন, (যশোর) : যশোরের দুঃখ “ভবদহ স্থায়ী জলাবদ্ধতা” থেকে মুক্তি পেতে আশায় বুক বেঁধেছেন ভুক্তভোগী ভবদহ এলাকার ৫টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। তাদের দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নদী খনন, সে কাজটি উদ্বোধনে আশার আলো দেখছেন ভবদহবাসী। ভবদহ অঞ্চলের স্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসণ এবং জনজীবন স্বাভাবিক করতে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে অবশেষে শুরু হয়েছে পুনঃখনন কাজ।

ভবদহ অঞ্চলের পাঁচটি নদীর মোট ৮১.৫ কিলোমিটার খনন কাজের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ভবদহের ২১ ভেন্ট ভবদহ স্লুইচ গেট পয়েন্ট থেকে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ বৃহৎ খনন কাজের উদ্বোধন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোর জেলা প্রশাসক মোঃ আজাহারুল ইসলাম।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রকল্প পরিচালক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেঃ কর্ণেল মামুন উর রশিদ, বাপাউবো’র প্রকল্প পরিচালক বিএম আব্দুল মোমেন, প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর গাজী নাজমুল হাসান, পাউবো যশোরের নির্বাহী প্রকোশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী, মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না, অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ সালাউদ্দীন দিপু সহ প্রমূখ। ভবদহ পানি নিস্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালী বলেন, এবার যেহেতু সেনাবাহিনীর অধীনে নদী খনন বাস্তবায়ন হবে, এই কারণে একটু আশার আলো দেখছেন ভবদহ জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে সর্বশান্ত হওয়া ভবদহবাসী।

পাউবো যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী জানান, ‘শুক্রবার থেকে ভবদহ এলাকায় নদী পুনঃখনের কাজ শুরু হয়েছে। টেকা হরিহর নদীর কাজ শুরু হলে ভবদহ’র দুর্ভোগ লাঘব হবে। খননের পর পলি অপসারণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তবর্তী সরকারের পানিসম্পদ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কর্মকর্তাদের নিয়ে দু’ দফা পরিদর্শন করেন ভবদহ অঞ্চল।
এসে প্রতিশ্রুতি দিয়ে জান স্থায়ী সমাধানের। তারই ধারা বাহিকতায় জলাবদ্ধতার স্থায়ী সংকটের এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর যশোর ও খুলনার ভবদহ অঞ্চলের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা নিরসনে বাপাউবো এবং সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
১৪০ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রকল্পের আওতায় যশোর ও খুলনা অঞ্চলের হরিহর নদী (৩৫ কি.মি.), হরি-তেলিগাতি নদী (২০ কি.মি.), আপারভদ্রা নদী (১৮.৫ কি.মি.), টেকা নদী (৭ কি.মি.) ও শ্রী নদী (১ কি.মি.) সহ মোট ৫টি নদীর ৮১.৫ কিমি পুনঃখনন করার অনুমোদন দেয়া হয়।
